পার্সোনাল লোন আজকের দিনে একটি জনপ্রিয় আর্থিক উপায়। হঠাৎ করে ঘর সংস্কার, সন্তানের উচ্চশিক্ষা, চিকিৎসার খরচ কিংবা পুরনো ঋণ একত্রিত করার মতো পরিস্থিতিতে অনেকেই ব্যক্তিগত ঋণের দিকে ঝুঁকেন। সহজলভ্য হওয়ায় এটি অনেক সময় কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করে।
2
9
তবে মনে রাখতে হবে—সঠিকভাবে পরিকল্পনা না করে নেওয়া ব্যক্তিগত ঋণ আপনার আর্থিক স্থিতিশীলতাকে নষ্টও করতে পারে। নিচে পাঁচটি সাধারণ ভুলের কথা বলা হলো, যা এড়িয়ে চললে আপনি আর্থিকভাবে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
3
9
প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া: অনেক সময় মানুষ বাস্তব প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঋণ নেন। এর ফলে মাসিক কিস্তি বা সুদের বোঝা অপ্রয়োজনীয়ভাবে বেড়ে যায়। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋণ নেওয়ার আগে আবেগ নয়, যুক্তি ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যতটা প্রয়োজন কেবল ততটাই ঋণ নিন। এতে ভবিষ্যতে চাপ কমবে এবং পরিশোধ সহজ হবে।
4
9
শর্তাবলি না পড়ে ঋণ নেওয়া: প্রতিটি ঋণের সাথেই সুদের হার, প্রসেসিং ফি, পরিশোধের সময়সীমা এবং অগ্রিম পরিশোধের নিয়মাবলির মতো গুরুত্বপূর্ণ শর্ত থাকে। অনেক সময় এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো উপেক্ষা করলে বাড়তি খরচ গুনতে হয়। যেমন—গোপন চার্জ বা প্রিপেমেন্ট পেনাল্টি। তাই সবসময় চুক্তিপত্র ভালোভাবে পড়ুন এবং বুঝে নিন। পরে অবাঞ্ছিত জটিলতায় পড়তে চাইলে না।
5
9
সুদের হারের গুরুত্বকে উপেক্ষা করা: এক শতাংশ সুদের ব্যবধানও দীর্ঘ মেয়াদে বিশাল অঙ্কের পার্থক্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু অনেক ঋণগ্রহীতা কেবল ঋণের পরিমাণ বা মেয়াদে নজর দেন, সুদের দিকে নয়। এতে করে শেষ পর্যন্ত ঋণের খরচ বেড়ে যায়। তাই একাধিক প্রতিষ্ঠানের অফার যাচাই করে সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কেবল এজেন্টের কথার ওপর নির্ভর না করে নিজেই তুলনা করুন। এতে উল্লেখযোগ্য অর্থ সাশ্রয় সম্ভব।
6
9
একাধিক ঋণ একসাথে নেওয়া: একই সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একাধিক ঋণ নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এতে মাসিক কিস্তির চাপ অনেক বেড়ে যায় এবং আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য হারিয়ে ফেলে। ফলস্বরূপ ঋণের ফাঁদে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সঠিক আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নতুন ঋণ নেওয়ার আগে আপনার বর্তমান সক্ষমতা মূল্যায়ন করুন। না হলে আর্থিক সংকটে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
7
9
কিস্তি দেরিতে দেওয়া বা বাদ দেওয়া: নিয়মিত কিস্তি না দিলে একদিকে যেমন জরিমানা ও অতিরিক্ত সুদের চাপ বাড়ে, তেমনি আপনার ক্রেডিট স্কোরও নষ্ট হয়। ক্রেডিট স্কোর কমে গেলে ভবিষ্যতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। চরম ক্ষেত্রে আইনি সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই ঋণ নেওয়ার আগে নিশ্চিত হোন যে আপনি সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।
8
9
ব্যক্তিগত ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আর্থিক স্বস্তি এনে দিতে পারে। তবে ভুল সিদ্ধান্ত আপনার অর্থনৈতিক স্থিতি ও ভবিষ্যতের ঋণ গ্রহণের সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
9
9
তাই ঋণ নেওয়ার আগে সব দিক ভালোভাবে যাচাই করুন, প্রয়োজনে একজন স্বীকৃত আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিন। অযথা ঋণ ও অযাচিত খরচ যে কোনো সময় উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে।