‘বাগি ৪’-এর অগ্রিম বুকিং
টাইগার শ্রফের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি বাগি ফের আসছে চতুর্থ কিস্তি নিয়ে। নাম ‘বাগি ৪’। শুক্রবারই মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি, আর তার আগে শুরু হয়েছে অগ্রিম বুকিং। তবে বলিউড ট্রেডে হইচই ফেলে দেওয়ার মতো সূচনা হয়নি। বরং প্রত্যাশার তুলনায় একেবারেই ফিকে প্রথম পদক্ষেপ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত—অর্থাৎ শো শুরু হওয়ার মাত্র ১২ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত—‘বাগি ৪’ অগ্রিম বিক্রি করেছে সারা দেশে মাত্র ১.২৭ লক্ষ টিকিট। আয় প্রায় ৩ কোটি টাকা (প্রথম দিনের জন্য), জানিয়েছে স্যাকনিক-এর রিপোর্ট। বড় শহরগুলিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছবিটির অগ্রিম দখলদারির হার ছিল মাত্র ৪ থেকে ৭ শতাংশ—অ্যাকশন থ্রিলারের জন্য যা একেবারেই নিরাশাজনক। ট্রেড সূত্রে খবর, বিদেশেও ছবির প্রি-সেল আশানুরূপ নয়। আসল ভরসা এখন মুখে মুখে প্রচারে। দর্শক কী বলেন, তার উপরই নির্ভর করছে সপ্তাহান্তে ছবির ভাগ্য।
একইসঙ্গে ট্রেড মহলে চিন্তার কারণ—অ্যাকশন টেন্টপোল ছবি যদি প্রথম দিনেই গতি হারায়, তবে দীর্ঘ দৌড়ে বড় ক্ষতি হতে পারে। ‘বাগি ৪’ আসলে এক উত্তরাধিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি, হিংস্র অ্যাকশন থ্রিলার—তাই প্রাথমিক ঝড় ওঠার কথা থাকলেও, সেটি ঘটছে না। পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর, কারণ ‘বাগি ৪’ পিছিয়ে পড়ছে ‘ওয়ার ২’-এর থেকেও। সেখানে প্রথম দিনের অগ্রিম বুকিং থেকেই আয় হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। অথচ সেই ছবিও বক্স অফিসে প্রত্যাশামতো চলেনি। ফলে ‘বাগি ৪’-এর ক্ষেত্রে ট্রেড অ্যানালিস্টরা আরও শঙ্কিত।
আরও আশ্চর্যজনক—টাইগার শ্রফ ও সঞ্জয় দত্তের মতো তারকা জুটি থাকা সত্ত্বেও ‘বাগি ৪’ হার মানছে সাইয়ারা-এর কাছে। নবাগত আহান পাণ্ডে ও আনীত পাড্ডার রোমান্টিক ছবিটি জুলাই মাসে মুক্তির আগে অগ্রিম বুকিং থেকে তুলে এনেছিল ৯.৪০ কোটি টাকা। তুলনায় বাঘি ৪ সেই সংখ্যার কাছাকাছি পৌঁছনোর জন্যও নাকি লড়ছে।আ হর্ষা পরিচালিত এই ছবিতে টাইগার শ্রফের পাশাপাশি রয়েছেন সঞ্জয় দত্ত, হরনাজ সাঁধু, সোনম বাজওয়া, শ্রেয়াস তলপাড়ে, সওরভ সচদেবা ও উপেন্দ্র লিমায়ে। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার প্রযোজনায় ‘বাগি ৪’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর।
অ্যাকশনপ্রেমীদের চোখ এখন শুক্রবারের প্রেক্ষাগৃহে—প্রথম দিনের মুখে মুখে প্রচারই বলে দেবে, টাইগারের ‘রনি’ আবার দর্শকের হৃদয় কাঁপাতে পারবে কি না।
মানবিক রণদীপ
পাঞ্জাবের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে এক অনন্য উদ্যোগে সামনে এলেন বলিউড অভিনেতা রণদীপ হুডা। বিশেষত গুরুদাসপুরে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অঝোর বৃষ্টিতে নদী উপচে পড়ে ঘরবাড়ি, ফসল, পশু—সব কিছু ভাসিয়ে নিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন, জীবিকা হারিয়ে দিশাহারা। এই কঠিন সময়ে দুর্গত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন রণদীপ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রণদীপ হুডা জুড়ে রয়েছেন গ্লোবাল শিখস এনজিও-র প্রতিষ্ঠাতা অমরপ্রীত সিং এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনিন্দর সিং-এর সঙ্গে। জম্মু-কাশ্মীর থেকে কেরল, মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র—দেশের যে প্রান্তেই বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাঁদের এই ত্রয়ী পৌঁছে গিয়েছেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। এবার সেই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসই দেখা গেল পাঞ্জাবেও।
এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, সব সময়ের মতোই রণদীপ ব্যক্তিগতভাবে পাঞ্জাবের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। গ্লোবাল শিখ এনজিওর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি শুধু ত্রাণ সামগ্রী পাঠাননি, নিজে পৌঁছে গিয়েছিলেন বন্যাকবলিত এলাকায়। সেখানে দুর্গত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁদের যন্ত্রণা শুনেছেন, আর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।গ্লোবাল শিখ এনজিও-র অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক দিন-রাত এক করে কাজ করছেন। তাঁরা খাদ্য, ওষুধ, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন দুর্গত মানুষের হাতে। রণদীপের উপস্থিতি যেন নতুন আশার সঞ্চার করেছে। অভিনেতাকে সামনে পেয়ে অনেকেই চোখের জলে ভেসেছেন, কেউ আবার বলেছেন—“এই কঠিন সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়ানোই সবথেকে বড় শক্তি।”
পাঞ্জাবের বন্যা শুধু ধ্বংসের ছবি আঁকেনি, এঁকেছে মানবিকতারও এক অনন্য চিত্র। রণদীপ হুডার মতো তারকারা যখন ত্রাণশিবিরে গিয়ে দুর্গত পরিবারের হাত ধরে আশ্বাস দেন, তখন তা শুধু ত্রাণসামগ্রী নয়—এ যেন জীবনের নতুন ভরসা।
প্রকাশ ঝা-এর ছবিতে তুষার
কমেডি থেকে রাজনৈতিক থ্রিলার—একেবারে ভোল বদলের পথে হাঁটছেন তুষার কাপুর। সম্প্রতি 'কাপকাপিই'-তে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে এবার তিনি হাজির হচ্ছেন প্রখ্যাত নির্মাতা প্রকাশ ঝা-র নতুন ছবি জনাদেশ-এ। রাজনৈতিক নাটকীয়তায় ভরপুর এই ছবিতে তুষারের রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।কীভাবে ছবিটি হাতে এল? তুষার নিজেই জানিয়েছেন, “প্রকাশজি-র ফোন হঠাৎই এল। বললেন, এই ছবিতে আমার জন্য একটা চরিত্র আছে। পুরো ব্যাপারটাই যেন মহাবিশ্বের সংকেতের মতো মনে হয়েছিল।”
বলিউডে দীর্ঘদিন ধরে কমেডি ও হালকা মেজাজের চরিত্রে নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেছেন তুষার। কিন্তু জনাদেশ তাঁর কাছে একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, “ইমেজ ভাঙার কোনও সচেতন চেষ্টা ছিল না। তবে অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল রাজনৈতিক থ্রিলারে অভিনয় করার। আর প্রকাশ ঝা জি যখন ডাক দিলেন, তখন সেটা সত্যিই সৌভাগ্যের মনে হয়েছে। ওঁর এই ধারার ছবির কাজ আমি বরাবরই গভীরভাবে প্রশংসা করি।”
চরিত্রে ঢোকার প্রস্তুতি নিয়েও জানালেন অভিনেতা। “প্রকাশ জি আর আমি একাধিক ছোট ছোট ওয়ার্কশপ করেছি। ওঁর দৃষ্টিতে চরিত্রটা কেমন, তিনি আমার কাছে কী আশা করছেন—সবটা বোঝার চেষ্টা করছি।”তবে এই চরিত্র নিয়ে যেন কোনও ভুল ধারণা না হয়, সেজন্য স্পষ্ট করলেন তুষার—“এটা কোনও নির্দিষ্ট বাস্তব চরিত্র নয়। পুরোপুরি কাল্পনিক, তবে বাস্তব মানুষ আর সত্য ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত। উদ্দেশ্য একটাই—পুরো ব্যাপারটাকে যেন বাস্তব আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়।”
দীর্ঘদিনের কমিক ইমেজ ছেড়ে তুষার এবার হাজির হচ্ছেন এক রাজনৈতিক থ্রিলারে। আর সেই যাত্রার পথপ্রদর্শক স্বয়ং প্রকাশ ঝা। ফলে দর্শকদের জন্য অপেক্ষা করছে এক বড় চমক। জনাদেশ-এ যে তাঁকে একেবারে নতুন রূপে দেখা যাবে, তা বলাই বাহুল্য।
