ইন্ডাস্ট্রিতে ১৫ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন অভিনেত্রী পায়েল দেব। ছোটপর্দার অত্যন্ত পছন্দের অভিনেত্রী আজ প্রায় দু'বছর ধরে কর্মহীন। অনেক চেষ্টা করেও পছন্দমত চরিত্র পাচ্ছেন না। সেরকমভাবে ভাল কাজের প্রস্তাবও আসছে না তাঁর কাছে। অনেকেই ভাবেন বিয়ের পর কী অভিনয় ছেড়ে দিলেন পায়েল? শুধুই কি সংসার করতে চান তিনি? সংসার এবং অভিনয় দুইই একসঙ্গে গুছিয়ে করার কথা ভেবেছিলেন পায়েল দেব। কিন্তু যা ভেবেছিলেন তার কিছুই হল না। প্রায় দু'বছর ধরে লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন থেকে দূরে রয়েছেন এই অভিনেত্রী। যদিও তা স্বেচ্ছায় নয়।

শেষবার জি বাংলার 'রাঙা বউ' ধারাবাহিকে দর্শক দেখেছেন পায়েলকে। এরপর 'কে প্রথম কাছে এসেছি' ধারাবাহিকে কাজ শুরু করলেও সেইভাবে তা৫র চরিত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবে এতদিন কাজ থেকে দূরে থাকলেও জি বাংলার 'এই পথ যদি না শেষ হয়' ধারাবাহিকের 'মুমু দিদি'কে আজও একইরকম ভালবাসেন দর্শক,পর্দায় মিস করেন তাঁর অভিনয়। একইভাবে তিনি মিস করেন তাঁর পছন্দের শুটিং ফ্লোরকে। বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেও কিছুতেই কেন কাজ পাচ্ছেন না, সেই প্রশ্নই ঘিরে রয়েছে পায়েলকে। নতুন সংসার নিয়ে সুখে থাকলেও কাজের জায়গায় পায়েল অসুখী।

আজকাল ডট ইন-কে পায়েল বলেন, "ইন্ডাস্ট্রিতে একটা কথা আছে যে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হলে কাজ পেতে সুবিধা হয় এবং বিরোধী দলে থাকলে একঘরে হয়ে যেতে হয়। আমার ক্ষেত্রে কিন্তু পুরো বিষয়টাই উল্টো। আমি শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত আছি এবং ভালবেসে রাজনীতি করতে চাই। জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষের সংখ্যা আসলে কম।তাই কোনও টিকিট পাওয়ার লোভে নয়, মানুষের সাহায্য করার জন্য রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমার বিয়েতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। সেটা আমার কাছে পরমপ্রাপ্তি। তাঁর সঙ্গে ছবি সমাজমাধ্যমে দেওয়া নিয়েও নানা কথা শুনেছি। আমার এখন ওজন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে, তাহলে কি ওজন বাড়ার কারণে আমি কাজ পাচ্ছি না?"
অভিনেত্রী আরও বলেন, "ওজন বেড়ে গেলে যদি বয়স বেশি লাগে তাহলে সেই ধরনের চরিত্র করতেও আমি রাজি। মাসি,বৌদি,পিসি বা দিদির চরিত্র করতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সেই সব চরিত্রও আমি পাইনা। এর কারণ সত্যিই আমার কাছে অজানা। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি কি সত্যিই তবে অভিনয় করতে পারিনা? দর্শক আমায় পছন্দ করেন না বলেই কি আমি কাজ পাই না? তাহলে মুমু দিদিকে আজও কেন দর্শক মনে রেখেছেন? আরও একটা বিষয় হতে পারে, ইন্ডাস্ট্রি থেকে আমি কুপ্রস্তাব পেয়েছি এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই তা ফিরিয়ে দিয়েছি। এরপর সেই ব্যক্তি আমাকে কাজ দিতে বারণ করেছেন যা আমি খুব ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানতে পারি। তবে কি এই কারণেই আমি কাজ পাই না?"
আরও পড়ুন: ইতি টানছে 'মিত্তির বাড়ি', শেষ দিনের শুটিংয়ে কি দেখা যাবে নায়িকা পারিজাত চৌধুরীকে?
তিনি বলেন, "এক্ষেত্রে অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য কিছুদিন আগে একটি কথা বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে শরীর বেচতে আসেনি। আমিও তাই মনে করি অভিনয় করতে এসেছি অন্য কিছু করতে আসেনি। সেই কারণে যদি কাজ করে তাহলে আমার আক্ষেপ নেই। কিন্তু না করতে পারার কষ্টটা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। মাঝে মাঝে আমার কিছুই ভাল লাগেনা, আসলে ১৫ বছর ধরে যে কাজ করে এসেছি এই দু বছরে সেই অভিনয় থেকে আমি দূরে। তা যেন আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না। আমি সত্যি অভিনয় ছাড়া অন্য কিছু করার কথা ভাবতে পারি না। কিন্তু পরিস্থিতি মানুষকে সবকিছু শেখায় তাই অন্য কোনও কাজের মাধ্যমে হয়তো উপার্জনের রাস্তা আমায় ভবিষ্যতে ভাবতেই হবে। আমার মা-বাবা,স্বামী সকলেই আছেন, আমার অভাব নেই কিন্তু আসলে অভাব আছে। আমি নিজে কিছু উপার্জন করতে পারছি না সেটাই আমার আসল অভাব। জানি না কবে এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে পারব। তবে অপেক্ষায় রয়েছি ভাল কাজের কারণ আমি কাজ করতে চাই।"
