সংযোগে বিশ্বাস করেন শুভ্রজিৎ মিত্র। তাই পরিচালকের জীবনে তার উদাহরণও নেহাত কম নয়। ‘দেবী চৌধুরাণী’ তৈরির আগে ইতিহাসকে চাক্ষুষ করতে একাধিক বার ছুটে গিয়েছিলেন যে মন্দিরে, ছবি মুক্তি ঠিক আগেই হল তার উদ্বোধন।

বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের অতি প্রাচীন জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জের বেলাকোবা শিকারপুরের ঐতিহ্যবাহী দেবী চৌধুরানী এবং ভবানী পাঠকের মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছিল। বুধবার ভার্চুয়ালি সেই মন্দিরের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির রিসার্চের কাজে যে ভগ্নপ্রায় মন্দিরে শুভ্রজিৎ ছুটে গিয়েছেন বারবার, তা অবশেষে পেল নতুন রূপ। তা-ও আবার ‘দেবী চৌধুরাণী’ মুক্তির সপ্তাহ দুয়েক আগে। জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের কথায়, “এ সংযোগ ছাড়া আর কী!”

বুধবার শুভ্রজিতের কাছে সকলের আগে পৌঁছে যায় সুখবর। তিনি মন্দির উদ্বোধনের খবর জানান প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়-সহ ছবির অন্যান্য তারকা এবং কলাকুশলীদের। নিজেকে আগাগোড়াই আধ্যাত্মিক বলে দাবি করেন পরিচালক। ভাগ্যে বিশ্বাস করেন বলতেও দ্বিধা নেই তাঁর বিন্দুমাত্র। শুভ্রজিতের কথায়, “আমাদের পুরো ছবিটাই দেশমাতৃকার পায়ে অর্পণ করা। মাতৃশক্তির আরাধনা রয়েছে এই ছবিতে। গত বছর আমাদের শুটিং শেষ হয়েছিল কালীপুজোর দিনে। ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এই মন্দিরটি উদ্বোধন করলেন। এতে যে কত ধরনের সংযোগ খুঁজে পাওয়া যাবে তার ইয়ত্তা নেই। আমার মনে হয়, মা মায়ের কাজ নিজেই করিয়ে নিচ্ছেন। আমরা নিমিত্ত মাত্র।”

প্রচারের সময় ছবির পুরো টিমকে নিয়ে এই মন্দিরে যেতে চেয়েছিলেন শুভ্রজিৎ। কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে শেষমশ তা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ছবি মুক্তির পর সেই ইচ্ছাপূরণ করার অপেক্ষায় পরিচালক।

২৬ সেপ্টেম্বর বড় পর্দায় আবির্ভূত হবে ‘দেবী চৌধুরাণী’। আপাতত নানা জায়গায় ঘুরে চলছে প্রচার। দর্শকের কাছে পৌঁছে যেতে রাখা হচ্ছে না কোনও ত্রুটি। মুক্তির দিন যত এগোচ্ছে, উদ্বেগ কি ততই বাড়ছে? শুভ্রজিৎ বলেন, “ছবির রিলিজ নিয়ে আমার কখনওই কোনও টেনশন হয় না। আমার কাজ ছবি বানিয়ে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। বাকিটা তারাই বিচার করবেন। তবে আশা করব, ‘দেবী চৌধুরাণী’ বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস গড়ে তুলবে।”

২০২১ সালে ‘অভিযাত্রীক’ তৈরি করে জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন শুভ্রজিৎ। বিশ্বমঞ্চে নতুন করে বাংলা ছবির জয়ধ্বজা ওড়ানোই এখন তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। তাঁর কথায়, “জাতীয় পুরস্কারটা আমি বাংলা ছবি করেই পেয়েছি। আমি চাই, বাংলা ভাষাার ছবিকে নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনা হোক। তাই বাংলা ছবিকে যাতে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, সেটা আমারই দায়িত্ব।”