পটৌদি বংশের আভিজাত্যের মধ্যে বড় হওয়া সব সময় শুধু আড়ম্বর আর চাকচিক্যের আখ্যান না। তার মাঝেও রয়েছে অনেক পরত। সোহা আলি খান সম্প্রতি জানিয়েছেন, তাঁর দাদা সইফ আলি খানকে পরিবারের “বিদ্রোহী” বলা হত। বাবা-মা প্রায়ই তাঁকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে দিতেন—কী করা উচিত নয়। এক সাক্ষাৎকারে সোহা তাঁদের শৈশবের সম্পর্ক, সইফের বেপরোয়া হাবভাব, আর কাপুরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক—সব কিছু নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।

সোহা জানিয়েছেন কেন তিনি আর সইফ ছোটবেলায় ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। তিনি বলেন, “আমার আর দাদার মধ্যে ন’বছরের ব্যবধান, যা অনেকটাই। একসঙ্গে থাকার সময়টা খুব কম ছিল। যখন আমি জন্মাই, তখন ও পড়াশোনার জন্য বিদেশে চলে যায়। ফিরেই সিনেমায় কাজ শুরু করে, আর আমি অক্সফোর্ডে পড়তে যাই। আসলে মুম্বইয়ে আসার পর থেকেই আমাদের একসঙ্গে সময় কাটানো শুরু হয় এবং তখনই আমরা অনেকটা কাছাকাছি হই।”

সোহা বলেছেন, শৈশবে সইফকে যেন প্রায় অচেনা একজনের মতোই লাগত। শর্মিলা-কন্যার কথায়, “ও আমার কাছে রহস্যের মতো ছিল, কারণ উইনচেস্টারে পড়াশোনা করত আর শুধু ছুটির সময় বাড়ি আসত। তখনও নিজের মতোই যা ইচ্ছে তাই করত।”

স্মৃতির পাতা উল্টে সোহা মনে করলে কীভাবে ছোটবেলায় তাঁর বাবা–মা তাঁকে সইফের থেকে দূরে রাখতেন। সোহা বলেন, “ও ছোটবেলায় একেবারেই বিদ্রোহী স্বভাবের ছিল। বাবা–মা ওর উদাহরণ দিতেন আমাদের কী করা উচিত নয় বোঝাতে। আমি যে ঘরে বড় হয়েছি, সেটা আসলে ওর ঘর ছিল। কিন্তু যখন ও বাড়ি আসত, আমাকে সেখানে ঘুমাতে দেওয়া হত না, কারণ ও মাঝরাতে প্রায়ই জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে বেরিয়ে যেত আর অদ্ভুত সময়ে ফিরত। ও অনেক কিছু করত, তাই বাবা–মা ভাবতেন আমি দেখতে ওর মতোই, অন্তত স্বভাবে যেন ওর মতো না হই।”
তবুও সোহা স্বীকার করেছেন, সইফের উপস্থিতি বাড়িতে অন্যরকম উত্তেজনা নিয়ে আসত। তাঁর কথায়, “আমি আর আমার দিদি ওর বাড়ি ফেরার জন্য খুব উত্তেজিত থাকতাম, কারণ ও আসলেই বাড়ির এনার্জিটা পাল্টে যেত। কখনও লাল চুল, কখনও সোনালি, কখনও আবার লম্বা চুল—ওকে কোন রূপে দেখা যাবে, তা আগে থেকে বোঝা যেত না।”

সময়ের সঙ্গে সোহা আর সইফের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। সোহা সেই দিনের কথা মনে করেন, যে দিন সইফ তাঁকে করিনা কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রথম জানান। তিনি বলেন, “আমার শুধু মনে আছে, দাদা আমাকে ফোন করেছিল। তখন আমরা শুটিং করছিলাম। দাদা বলল, ‘আমি তোমাকে জানাতে চাই যে আমার গার্লফ্রেন্ড তোমার থেকে দু’ বছর ছোট।’ আমি বলেছিলাম, ‘আচ্ছা, গ্রেট!’”

পরে তিনি যোগ করেন, করিনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে।
“যে কোনও সম্পর্কের অর্থবহ হয়ে উঠতে সময় লাগে, আর যত্ন নিয়ে তাকে লালন করতে হয়।”