মুম্বইয়ের হৃদয়ে দাঁড়িয়ে আবারও মানবতার পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠ তুললেন বলিউড তারকা শাহরুখ খান। গ্লোবাল পিস অনার্স ২০২৫ অনুষ্ঠানের মঞ্চে অভিনেতা স্মরণ করলেন দেশের তিনটি ভয়াবহ সন্ত্রাস হামলার শহীদদের, ২০০৮-এর ২৬/১১ মুম্বই হামলা, এপ্রিলে পাহালগামের রক্তাক্ত সন্ত্রাস হানা এবং সদ্য ঘটে যাওয়া দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন বিস্ফোরণ। আর সেই সঙ্গে তুলে ধরলেন শান্তির শক্তি, ঐক্যের মাহাত্ম্য এবং ভারতীয়দের অটুট মনোবল। এককথায় সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করার পাশাপাশি ভারতীয় সেনার জন্য কবিতাও পড়লেন বাদশা।
শাহরুখের কথায়,“২৬/১১, পহলগাওঁ এবং দিল্লির সাম্প্রতিক বিস্ফোরণে যাঁদের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। আর যেসব বীর নিরাপত্তাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার স্যালুট।” শহিদ পরিবারগুলোকেও বিশেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি। তাঁর আবেগভরা বক্তব্য, “এমন সাহসী সন্তানদের জন্ম দেওয়া মায়েদের আমি স্যালুট জানাই। বাবাদের দৃঢ় মানসিকতা, সঙ্গীদের সাহস। তাঁদের লড়াইও কম ছিল না। সৈনিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন, কিন্তু তাঁদের পরিবারও সমান যুদ্ধে নামেন।”
দেশ হিসেবে ভারত কেন কখনও মাথা নোয়ায়নি এই প্রশ্নের উত্তরে শাহরুখের জোরালো বক্তব্য পরিষ্কার, “এই দেশের শক্তি আমাদের ঐক্য। আমাদের শান্তি কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সেনার পোশাকে থাকা আমাদের সুপারহিরোরা যতক্ষণ আছেন, এই দেশের নিরাপত্তা অটুট থাকবে।”
শান্তিকে তিনি তুলে ধরলেন “বিপ্লবের নতুন রূপ” হিসেবে। “শান্তি এমন এক সৌন্দর্য, যা মানুষকে উন্নত চিন্তায় এগিয়ে নিয়ে যায়। শান্তির মধ্যেই সৃষ্টি হয় নতুন ভাবনা, নতুন উদ্ভাবন। আসুন, আমরা সবাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে মানবতার পথে হাঁটি।” এরপর অভিনেতার দৃঢ় ঘোষণা, “আমাদের মধ্যে শান্তি থাকলে ভারতকে কেউ নড়াতে পারবে না। কেউ হারাতে পারবে না। কেউ ভারতীয়দের মনোবল ভাঙতে পারবে না।”
মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সেনার উদ্দেশে এর পরে শাহরুখ বলেন, “কেউ যদি আপনাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা কী করেন? গর্বের সঙ্গে বলবেন, আপনারা দেশকে রক্ষা করেন। কেউ যদি আপনাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা কত টাকা বেতন পান, তা হলে বলবেন, আপনারা ১৪৫ কোটি মানুষের আশীর্বাদ পান। এর পরেও যদি আপনাদের কেউ প্রশ্ন করেন, আপনাদের ভয় করে কি না, তখন তাঁদের চোখে চোখ রেখে বলুন, যারা আক্রমণ করে, ভয় তাদের! আমাদের নয়”
শাহরুখের এই বক্তব্য শুধু প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে থেমে থাকেনি, সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে আবেগ, আত্মবিশ্বাস আর এক নতুন শান্তির ডাক হিসেবে।
