মুম্বইয়ের বান্দ্রায় অভিনেতা সইফ আলি খান এবং করিনা কাপুর খানের বাড়িতে হামলার সেই ভয়ঙ্কর রাতের ঘটনা সম্প্রতি আবারও শিরোনামে এসেছে। ১৫ জানুয়ারি গভীর রাতে ঘটা এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় সইফ আলি খান গুরুতর আহত হন এবং পরবর্তীকালে জানা যায় যে তাঁদের ছোট ছেলে, তিন বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলি খান (জেহ)-ও আঘাত পেয়েছিল।
জানা যায়, ১৫ জানুয়ারি ভোরের দিকে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সইফ ও করিনার বাড়িতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করে। পরিবারের সবাই তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। ডাকাতদের আটকাতে গিয়েই অভিনেতা সইফ আলি খান ছুরিকাহত হন। সূত্র অনুযায়ী, ডাকাতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় সইফকে ছ'বার ছুরিকাঘাত করা হয়, যার মধ্যে দুটি আঘাত বেশ গভীর ছিল, একটি তাঁর মেরুদণ্ডের কাছাকাছিও লাগে।

আহত সইফকে সঙ্গে সঙ্গেই মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। এই ঘটনার তিন দিন পর পুলিশ বাংলাদেশি যুবক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শাহজাদ (৩০)-কে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে প্রথমদিকে জানা যায়, চুরির উদ্দেশ্যেই সে বাড়িতে ঢুকেছিল এবং ধরা পড়ার ভয়ে সাইফকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
সম্প্রতি একটি টক শো-তে এসে সইফ আলি খান সেই রাতের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। সেখানেই তিনি প্রকাশ করেন যে, শুধু তিনিই নন, তাঁদের কনিষ্ঠ পুত্র জাহাঙ্গীর আলি খানও এই ঘটনায় সামান্য আঘাত পেয়েছিল। সইফ জানান, ডাকাতির সময় যখন বাড়ির সদস্যরা জেগে ওঠেন, তখন জাহাঙ্গীরের আয়া চিৎকার করছিলেন এবং জেহ কাঁদছিল। ঘটনার পরবর্তীকালে জেহ তাঁর বাবার কাছে এসে জানায় যে, সেও আক্রমণকারীর ছুরি দ্বারা নখের আঁচড়ের মতো হালকা আঘাত পেয়েছিল। এই তথ্যটি প্রকাশ হওয়ার পর সাইফের অনুরাগী এবং বলিউড মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
সইফ-করিনার উপর হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মুম্বই পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শুরু করে। বান্দ্রা পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে এবং হামলাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য একাধিক দল গঠন করে। মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চও এই ঘটনার সমান্তরাল তদন্ত চালায়।
প্রসঙ্গত, হাসপাতালে সইফের অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর পাশে ছিলেন। লীলাবতী হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডাঃ নীরজ উত্তমণি জানিয়েছিলেন যে, সইফের শরীরে একাধিক আঘাত লেগেছিল এবং একটি আঘাত তাঁর মেরুদণ্ডের কাছে ছিল।নিউরোসার্জন, কসমেটিক সার্জন এবং অ্যানাস্থেটিস্টদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল তাঁর অস্ত্রোপচার করে। অস্ত্রোপচারের পরে সইফের শরীর থেকে একটি ভাঙা ছুরির টুকরাও বের করা হয় এবং তাঁকে কিছুদিনের জন্য আইসিইউতে রাখা হয়।
সইফ আলি খান এবং করিনা কাপুর খান তাঁদের দুই ছেলে— সাত বছরের তৈমুর এবং তিন বছরের জাহাঙ্গীরকে নিয়ে বান্দ্রার বাড়িতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বসবাস করেন। কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটায় সকলেই আশ্চর্য হয়েছেন। বর্তমানে অভিনেতা রণিত রায়ের প্রতিরক্ষা টিম সইফের বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষার কাজে নিযুক্ত হয়েছে বলে খবর।এই ঘটনা একদিকে যেমন তারকাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টিকে আবারও সামনে এনেছে, তেমনই সইফ আলি খানের সাহস ও প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করার মানসিকতারও পরিচয় দিয়েছে।
