সংবাদ সংস্থা মুম্বই: ভারতীয় সিনেমার সবচেয়ে সফল তারকাদের মধ্যে অন্যতম আমির খান। প্রায় চার দশকের কেরিয়ারে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’, ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’, ‘আন্দাজ আপনা আপনা’, ‘সরফারোশ’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’, ‘লাগান’, ‘তারে জমিন পর’, ‘গজিনি’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘পিকে’ থেকে ‘দঙ্গল’—প্রতিটি ছবিতেই রেখে গেছেন নিজস্বতার ছাপ। বর্তমানে তিনি প্রস্তুত হচ্ছেন তাঁর পরবর্তী ছবি ‘সিতারে জমিন পর’-এর মুক্তির জন্য, যেটি ২০ জুন প্রেক্ষাগৃহে আসতে চলেছে। আর তার ঠিক পরেই আমির প্রবেশ করবেন রাজকুমার হিরানি পরিচালিত দাদাসাহেব ফালকে-র বায়োপিক-এর প্রস্তুতি পর্বে।
তবে এখানেই শেষ নয়। খবর, রাজু হিরানির সঙ্গে এই ছবির আগে নাকি আমির খান কমপক্ষে ১০টি চিত্রনাট্যের ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। বহু গল্প, চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা করেছেন, মিটিং করেছেন, অবশেষে নিজের মন স্থির করেছেন এই পিরিয়ড বায়োপিকেই।
সূত্রের খবর, দাদাসাহেব ফালকে-র উপর একটি সিনেমা তৈরির স্বপ্ন অনেকদিন ধরেই দেখছিলেন আমির খান এবং রাজকুমার হিরানি। বহুদিন ধরেই এই চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ চলছিল। কিন্তু সেই সময়েও আমির থেমে থাকেননি, তিনি একের পর এক সম্ভাব্য চিত্রনাট্যে নিজের সৃজনশীল ভাবনা জানিয়েছেন—যেমন রাজকুমার সন্তোষীর দু’টি ছবি ‘চার দিন কি জিন্দেগি’ এবং ‘আন্দাজ আপনা আপনা ২’, দীনেশ ভিজান প্রযোজিত উজ্জ্বল নিকম বায়োপিক, অনুরাগ বসুর কিশোর কুমার বায়োপিক, এমনকি রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার সঙ্গে একটি নতুন ছবির কথাও।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আমির খান বৈঠক করেছেন তুষার হিরানন্দানি এবং ভূষণ কুমার-এর সঙ্গেও, গুলশন কুমার-এর বায়োপিক নিয়ে। সূত্র আরও জানিয়েছে, “একজন নিখাদ সৃজনশীল মানুষ হিসাবে আমির সবসময় এমন বিষয়বস্তুর সঙ্গে কাজ করতে ভালবাসেন, যেগুলোর মধ্যে গভীরতা ও প্রভাবের সম্ভাবনা থাকে। প্রতিটি চিত্রনাট্য নিয়ে তিনি প্রচুর আলোচনা করেছেন, এবং চূড়ান্তভাবে বেছে নিয়েছেন এমন একটি প্রজেক্ট যেটি তাঁর মতে একেবারে ‘বুলস আই’-এ লাগার মতো।”
এখানেই শেষ নয়। ‘পিকে ২’ নিয়েও ভেতরে ভেতরে জল্পনা তুঙ্গে। সূত্র বলছে, আমির খান, রাজকুমার হিরানি এবং অভিজাত জোশী একসঙ্গে ‘পিকে ২’-এর প্লট নিয়ে বিস্তর ভাবনাচিন্তা করেছেন। এমনকি সম্ভাবনা রয়েছে এই সিক্যুয়েলে রণবীর কাপুরের যোগদানেরও, যাঁকে ইতিমধ্যেই সিরিজের পরবর্তী এলিয়েন চরিত্র হিসাবে ভাবা হচ্ছে। রণবীরও নাকি এই পরিকল্পনা শুনে দারুণ উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও, আগামী দিনে আমির খানকে দেখা যেতে পারে লোকেশ কানাগরাজ পরিচালিত এক সুপারহিরো ছবিতেও। এখনই যদিও সে ছবির কাজ শুরু হয়নি, তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৭ সালে ছবিটি শুটিং ফ্লোরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে, আমির খান শুধুই আর ‘অভিনেতা’ নন—তিনি একজন কিউরেটর অফ কনটেন্ট। যিনি গল্পের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এবং প্রতিটি প্রজেক্টে যুক্ত হন ভীষণভাবে, ভিতর থেকে। আর তাঁর আগামী ছবিতে তিনি অভিনয় করবেন ভারতীয় সিনেমার পথিকৃৎ দাদাসাহেব ফালকে-র ভূমিকায়—যেটা নিঃসন্দেহে শুধুমাত্র তাঁর কেরিয়ারের জন্য নয়, বরং গোটা ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকেও হতে চলেছে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
