শনিবার ভোরে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে প্লাবিত পাহাড় থেকে সমতল। এক রাতের ভারী বৃষ্টির তাণ্ডবের পর পাহাড়ের পরিস্থিতি বেশ জটিল। রাস্তাঘাট বন্ধ। গৃহহীন হয়েছেন অসংখ্যা মানুষ। সরকারি হিসেবে অনুযায়ী মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল। পরে আরও দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃষ্টি-জলের তোড়ে সেতু ভেঙেছ। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকের একাধিক জায়গায় ধস। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিক। জলের ভয়ংকর তোড়ে দুটি লোহার সেতু ভেঙ্গে গেছে,প্রচুর রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঙ্গলবার মিরিকের দিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে। মমতা সোমবার জানান, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অরূপ বিশ্বাস এবং গৌতম দেবকে পাঠিয়েছেন ধুপগুড়ি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি এবং সিএস যাচ্ছি হাসিমারা। হাসিমারা থেকে আমরা যাব নাগরাকাটা, যতদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়।” মুখ্যমন্ত্রী হাসিমারা থেকে রাতে বাগডোগরা ফিরে, মঙ্গলবার ফের যাবেন মিরিকে। এহেন আবহে উত্তরবঙ্গের জন্য প্রার্থনা করে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানালেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
সমাজমাধ্যমে তারকা অভিনেতা লিখেছেন, “কুচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার এই মুহূর্তে সারা দেশ এবং সমগ্র দেশ এর নিঃস্বার্থ সহযোগিতা পাক এই আশা রাখি। মানুষ ও প্রকৃতি সামঞ্জস্য হারালে সচেতনতা এবং সদুদ্যোগ একমাত্র উপায় ঘুরে দাঁড়ানোর।”

বলাই বাহুল্য, বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা। প্লাবনে জঙ্গল বন্ধ থাকায়, ইতিমধ্যেই প্রচুর পর্যটক ডুয়ার্স থেকে ফিরে গিয়েছেন। প্রচুর পর্যটক আগাম বুকিং বাতিল করছেন। বুকিংয়ের টাকা ফেরত চাইছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য জঙ্গল বন্ধ হওয়ায় পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসায়ী সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল পরিদর্শন করেছেন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। সোমবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যাকবলিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, আপাততম ডুয়ার্সের সমস্ত বনাঞ্চলে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফেল খুলে দেওয়া হবে জঙ্গল।বিরবাহা বলেন, “জঙ্গলে বন্যার জলে ডুবে দু’টি একশৃঙ্গ গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। একটি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের জঙ্গলে এবং অপরটি গরুমারা জঙ্গলে। জঙ্গলের ভিতরে এখনও সম্পূর্ণভাবে জল নামেনি। তাই আরও কোনও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়েছে কি না সেই বিষয়ে বলা সম্ভব নয়। বনকর্মীরা চারিদিকে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আপাতত এই পরিস্থিতিতে ডুয়ার্সের সমস্ত বনাঞ্চলে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে।
এইমুহূর্তে, দার্জিলিঙে এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। আরও কিছু দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃষ্টি থামায় পর্যটকেরা নেমে আসতে শুরু করেছেন।
