নিজস্ব সংবাদদাতা: এক নারী হাতে তরবারি। ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই জোর চর্চা চলছে শুভ্রজিৎ মিত্রের 'দেবী চৌধুরানী'র। ছবিতে নামভূমিকায় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। এবং 'ভবানী পাঠক'-এর চরিত্রে দেখা যাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। এই ছবির প্রচার সারতে 'দেবী চৌধুরানী'র রচয়িতা তথা সাহিত্যসম্রাটবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নৈহাটির বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ এবং ছবির অন্যান্য কলাকুশলীরা। সাহিত্যসম্রাট -এর বাড়ি ঘুরে দেখার পর তিনি যে ঘরে বসে একের পর এক কালজয়ী সব উপন্যাস লিখেছিলেন, সেই ঘরও ছুঁয়ে আসেন প্রসেনজিৎ। এরপর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির চত্বরে যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, সেখানে শিল্পীরা ওঠামাত্রই শুরু হয় গোলমাল। হাজির হয়েছেন প্রসেনজিৎ, শ্রাবন্তী সহ দেবী চৌধুরানী র বাকি কলাকুশলীরা। আর সেখানেই ভরা মঞ্চে মেজাজ হারালেন ‘অটোগ্রাফ’-এর নায়ক! 

 

 

প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তীকে দেখার জন্য ভিড় উপচে পড়েছে সেই চত্বরে।  দর্শকের সামনে হাজির হওয়ামাত্র উল্লাস ডিঙিয়ে ফেলে শোরগোলের মাত্রা। মুহুর্মুহু দাবি, আবদার আছড়ে পড়তে থাকে প্রসেনজিতের উদ্দেশ্যে। ভিড় হওয়া অনুরাগীদের বারবার শান্ত করার চেষ্টা করেও আশাহত হন প্রসেনজিৎ। এরপরেই ‘২২শে শ্রাবণ’ -এর নায়কের উদ্দেশ্যে আসা শুরু হয় গরমাগরম, জনপ্রিয় সব সংলাপ বলার আবদার। এরপর সেই আবদার রূপ নেয় চিৎকারে। নায়কের ‘না’ শুনেও থামানো যায়নি সেই কলরব। এরপরেই খানিক মেজাজ হারিয়ে প্রসেনজিৎ জনতার উদ্দেশ্যে বলে ওঠেন – “আমি এখানে মাচা করতে আসিনি যে সংলাপ আওড়াব!” অভিনেতা এরপর জানান, তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা এখানে আশীর্বাদ গ্রহণ করতে এসেছেন। প্রসেনজিতের সাফ বক্তব্য—এই সফরের উদ্দেশ্য শুধুই আশীর্বাদ গ্রহণ। সিনেমার সংলাপ চাওয়ার এই প্রবণতা এ চত্বরে একেবারেই বেমানান।

 


প্রসঙ্গত, দেবী চৌধুরানী ছবির পোস্টের থেকে টিজারে প্রসেনজিতের কাঁধ ছাপানো, অবিন্যস্ত চুলের সঙ্গে একমুখ কাঁচাপাকা দাড়িতে প্রসেনজিতের এই লুক এক মুহূর্তের জন্য মনে করাতে পারে তাঁর ‘লালন ফকির’ অবতারকে। কিন্তু কপালে বড় করে রক্তটীকা সঙ্গে চোখের মধ্যে শান্তভাবের সঙ্গে ধূর্ততার আভাস রয়েছে তাঁর, সেটাই ‘মনের মানুষ’-এর থেকে এক নিমিষে আলাদা করে দেয় ‘ভবানী পাঠক’কে। তাঁর নিপুণ অস্ত্রচালনায় রক্তাক্ত হয়ে ভূপতিত হয় একের পর এক শত্রুরা। এই ভবানী পাঠক-ই  প্রফুল্লকে তালিম দিয়ে, চোখের জল মুছিয়ে করে তোলেন ‘দেবী চৌধুরানী’। যে চরিত্রে দেখা যাবে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়-কে। উল্লেখ্য, এই ছবির জন্য ঘোড়সওয়ারের তালিমও নিয়েছেন অভিনেত্রী। পাশাপাশি শিখেছেন তলোয়ারবাজিও।

 

শ্রাবন্তী-প্রসেনজিৎ ছাড়াও এই সিনেমার রয়েছেন বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, দর্শনা বণিক, সব্যসাচী চক্রবর্তী, অর্জুন চক্রবর্তী, অ্যালেক্স ও’নিল। উত্তর কলকাতা থেকে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়, বীরভূম, ঝাড়খণ্ড, বিহারের নানা জায়গায় ঘুরে ছবির শুটিং করেছেন শুভ্রজিৎ মিত্র। চলতি বছর পুজোয় বড়পর্দায় মুক্তি পাবে এই ছবি।