নিজস্ব সংবাদদাতা: চলতি বছর পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে ফেডারেশন এবং টলিপাড়ার পরিচালকদের বিবাদ জায়গা করে নিয়েছিল খবরের শিরোনামে। ডিরেক্টর্স গিল্ডের সুপারিশে ফেডারেশন পরিচালক রাহুলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপর প্রতিবাদে পরিচালকদের গিল্ড কর্মবিরতির ডাক দেয়। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে তিন দিন পর টলিপাড়ায় শুটিং শুরু হয়। কিন্তু তার পরেও রাহুলকে পরিচালক হিসেবে মেনে নিতে নারাজ ছিল ফেডারেশন। শেষমেশ সব বাধা কাটিয়ে এসভিএফ-এর সেই ছবির পরিচালক হিসাবে বহাল থেকেছিলেন রাহুল মুখোপাধ্যায়। ছবির মুখ্যচরিত্রে ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য। প্রথম দিন অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং প্রিয়ঙ্কা সরকারের কিছু দৃশ্যের শুটিং হয়েছে। ছিলেন সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে তারপর আর ছবির শুটিং কোনও অজানা কারণে এগোয়নি। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই ছবির শুটিং। এসভিএফ -এর সেই ছবিতে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের অন্যতম সহকারী পরিচালক হিসাবে কর্মরত ছিলেন অর্পিতা রায়। এবার পরিচালনায় হাত পাকানোর পাশাপাশি অভিনেত্রী হিসাবে তাঁকে দেখা যাবে বড়পর্দায়। ছবির নাম ‘বলরাম কান্ড’। 

 

ছোট থেকেই অভিনয়, পরিচালনার প্রতি আগ্রহ অর্পিতার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই আগ্রহ বেড়েছে। একসময় শিশুশিল্পী হিসাবে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘লভ বিয়ে আজকাল’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে দীর্ঘদিন অভিনয়ও করেছেন। তা সহকারী পরিচালক থেকে কেন ফের পর্দার সামনে? অর্পিতার স্পষ্ট জবাব, “আমি ছবি তৈরির খুঁটিনাটি সবকিছু জানতে চাই। অভিনয়ের সঙ্গে আমি ছোট থেকেই যুক্ত, তাই নতুন করে অভিনয় করছি এটা বলব না। তবে হ্যাঁ, ক্যামেরার পিছনের নানান বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকলে তা অভিনয়কে সাহায্য করে। অভিনয় থেকে পরিচালনার নানান দিক আমি শিখতে চাই সমানভাবে।” ‘বলরাম কান্ড’ ছবিতে তাঁর চরিত্রটি ঠিক কেমন? অর্পিতার জবাব, “আমার চরিত্রের নাম মৌসুমী। নায়ক-নায়িকার বন্ধু। ছোট হলেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। এবং মজার। ন্যাকামো ভরপুর আছে তার মধ্যে। মৌসুমীর জন্য ছবির গল্প একটু অন্যদিকে বাঁক নেবে এটুকু বলতে পারি।” 

 

 

প্রসঙ্গত, 'বলরাম কান্ড'র কেন্দ্রে রয়েছেন তরঙ্গিনী মুখোপাধ্যায় (গার্গী রায় চৌধুরী) এবং কিশোর সান্যাল (রজত দত্ত), যাঁরা বছর ১২ আগেই নিজেদের বিবাহিত জীবনে দাড়ি টেনেছেন। বর্তমানে তাঁদের মেয়ে অবন্তিকা (ঐশ্বর্য সেন) অল্প বয়সেই বিয়ে করার সিদ্ধান্তে বদ্ধপরিকর। এবং সেই সিদ্ধান্ত যে মেয়ের জীবনে দুঃখকে বাড়ি বয়ে আনার সামিল, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই সেই বিষয়ে নিশ্চিত 'তরঙ্গিনী' এবং 'কিশোর'। মেয়েকে সেই ‘বিপদ’-এর নৌকা থেকে পা রাখার থেকে বাঁচাতে দীর্ঘ ১২ বছর পরে ফের এক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। আর তারপরেই শুরু হয় দমফাটা মজার সব ঘটনা। পরিচালক সপ্তাশ্ব বসু জানিয়েছেন, ‘বলরাম কান্ড’ পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে বসে দেখতে পারবেন। পরিচালকের দৃঢ় বিশ্বাস, এ ছবিতে মজা উপভোগ করার পাশাপাশি ভাবনার খোরাকও পাবেন দর্শক। বিশেষত, নয়া প্রজন্ম ও তাঁর আগের প্রজন্মের দর্শক।

 

 

উল্লেখ্য, ‘বলরাম কান্ড’ প্রথম বাংলা ছবি যার সিংহভাগ শুটিং সারা হয়েছে নৈনিতালে। ছবির গল্প লিখেছেন অপালা চৌধুরী ও চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অর্ণব ভৌমিক। ছবির প্রযোজনার দায়িত্ব যৌথভাবে সামলেছে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ফিল্মস, সাই ভিগ্নেশ ফিল্মস ও প্ল্যাটিনাম পিকচার্স। ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন গার্গী রায় চৌধুরী, রজতাভ দত্ত। ২০২৫-এর সরস্বতী পুজোর আবহে বড়পর্দায় এই ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা।