আবারও যৌন হেনস্থার অভিযোগ টলিপাড়ায়। অভিনয় জগতে সুযোগ করিয়ে দেবে, এমন প্রস্তাবেই যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ১৮ আগস্ট, সোমবার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা উঠে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার কসবা থানা এলাকায়। এক মহিলা কসবা থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, তাঁকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত দুই ব্যক্তি যৌনভাবে হেনস্তা করে এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানে তাঁকে একাধিকবার শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।
ওই মহিলা আরও জানান, প্রথমে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তাঁকে প্রতারণা করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাধ্য করা হয়। এরপর একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় ওই দুই অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তিনি দীর্ঘদিন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় এতদিন এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। অভিযোগ পাওয়ার পর কসবা থানার পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অভিযোগকারিণীর বয়ান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে অভিযানও শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনার জেরে চলচ্চিত্র মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে এই ঘটনার কথা। ফলে ঘটনার নিন্দা শুরু হয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। তদন্তের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে কসবা থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: কলেজ রোম্যান্সে তানিকা-ঋতব্রত-কৌশানী, বন্ধুত্ব না প্রেম? কার পাল্লা ভারী?
কিছুদিন আগে ওই এলাকার কাছাকাছি আরও এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে টলিউড অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ হয়েছিল। শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল অজ্ঞাত পরিচয়ের চার ব্যক্তির উপরে। আজকাল ডট ইন-এর কাছে মুখ খুলেছিলেন সেই অভিনেত্রী। আকাশ আট-এর 'পুলিশ ফাইল'-এ শেষ দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সরকারকে। বুধবার গভীর রাতে শুটিং ফ্লোর থেকেই ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল অভিনেত্রীর চার বন্ধুও। এরপর অজ্ঞাত পরিচয়ের চার ব্যক্তি তাঁদের উপর চড়াও হয়।ঐন্দ্রিলার কথায়, "আমরা ভদ্রভাবে কথা বলছিলাম ওঁদের সঙ্গে। কিন্তু ওঁরা কিছুতেই নিজেদের আচরণ ঠিক করছিলেন না। আমার গায়ে হাত তোলার পরেও থামেননি। শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। তখন আমার বন্ধুরা প্রতিবাদ করে ওঠে। এরপর পুলিশের গাড়ি পেট্রোলিং-এ আসে। তখন এই ঘটনা দেখতে পেয়ে ওঁদের থানায় নিয়ে যান। সমানে ওঁরা হুমকি দিতে থাকে, যে একবার থানা থেকে বেরলে আমাদের অবস্থা খারাপ করে দেবে। আমায় অ্যাসিড ছুড়ে মারার হুমকিও দেন।"
অভিনেত্রী আরও বলেছিলেন, "থানায় গিয়ে প্রাথমিকভাবে দুপক্ষকে বিষয়টা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে পুলিশ। কিন্তু আমরা সেটা চাইনি। এরপর ওঁদের পরিবারের লোকজন এসে খুব কাকুতি মিনতি করেন। তখন একবার ভাবি, বিষয়টা কথা বলে যদি মেটানো সম্ভব হয়! কিন্তু ওই দুই ব্যক্তির আচরণ তখনও একইরকম। কর্মরত পুলিশকে পর্যন্ত হুমকি দিতে ছাড়ছেন না ওঁরা। এরপর আর কোনওকিছু ভাবতেই পারিনি। এফআইআর দায়ের করি। ততক্ষণে ভোর হয়ে যায়।"
ঐন্দ্রিলার কথায়, "ওঁরা পাল্টা আমার বন্ধুদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। যদিও আমরা লড়তে প্রস্তুত। অন্যায়কে এভাবে মুখ বুজে মেনে নেওয়া যায় না। মেয়েরা তো কোথাও নিরাপদ নয়! এই শহরের কোথাও শান্তিতে থাকাই যাবে না? কী করে সমাজ চলবে? আমি এর শেষ দেখতে চাই।"
