‘ডিপ ফ্রিজ’ ছবির সৌজন্যে সৌজন্যে চলতি বছরেই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন পরিচালক অর্জুন দত্ত। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরে, ছবিটি নিয়ে আগ্রহ জন্মেছে অনেক সাধারণ দর্শকেরও। আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল আগামী ২১ নভেম্বর বড়পর্দায় মুক্তি পাবে এই ছবি। সেই মতো পাচ্ছেও। কিন্তু তার আগেই এবার ছবির শো-টাইম নিয়ে সমস্যায় পরিচালক। আরও ভাল করে বললে, নন্দনে ডিপ ফ্রিজ যে শো টাইম পেয়েছে তা নিয়ে এতটুকু খুশি নন পরিচালক। সমাজমাধ্যমে তাঁর সেই হতাশা, বিরক্তির কথা সোজাসাপটাভাবে এবার প্রকাশ করলেন তিনি। 

 

 

 

 

ফেসবুকে পোস্টে অর্জুন লিখেছেন, “আজ পর্যন্ত কখনও সোশ্যাল মিডিয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে  কোনও নালিশ জানানোর প্রয়োজন বোধ করিনি আমি । তবে আজ এমন একটা ঘটনা ঘটল যাতে এক প্রকার লিখতে বাধ্য হচ্ছি। সকলেই জানেন আমার পরিচালিত, কালার্স অফ ড্রিমস এন্টারটেনমেন্ট প্রযোজিত জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবি ডিপফ্রিজ আগামী কাল থেকে সিনেমা হলে মুক্তি পেতে চলেছে; নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টায় প্রমোশন ও শো টাইম নিয়ে আমরা আপনাদের কাছে আসছি; তবে এসবের মধ্যেও একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি; জাতীয় পুরস্কারের মতো একটা ভ্যালিডেশন থাকার পরেও নন্দন ১ -এ সুযোগ্য শো টাইম পেল না এই ছবি । সূত্র মারফত খবর ছিল সুনিশ্চিত প্রাইম টাইম -ই পাবে ডিপফ্রিজ; তবে আজ আমাদের ছবিকে দুপুর একটার শো টাইম দেওয়া হয়েছে । 
এই পর্যন্ত ৫ টি ছবির পরিচালনা করেছি আমি, নিজের মতো করেই করেছি, কোনও বাড়তি ইনফ্লুয়েন্স ছিলনা ভালো ছবি তৈরির তাগিদ ছাড়া ; তবে আজ যে ঘটনা ঘটল তা ঠিক কিসের প্রভাবে? আমি জানতে চাই!  এর পর কি করব, ছবি তৈরি বন্ধ করে দেবো ?! আমি সত্যি বুঝতে পারছি না কেউ কি আদৌ দুপুর একটায় খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে আমাদের ছবি নন্দনে দেখবেন? আর যদি না দেখেন তখন কি বলবেন না যে অর্জুন দত্তের ছবি চলে না? অতএব ছবিটা উঠিয়ে নেওয়া হোক!? 
নন্দন নিয়ে মাথাব্যথা করার এত কি আছে? যারা এই ধরনের প্রশ্ন করবেন বলে ভাবছেন তাদের বলি আমার মতো পরিচালকদের কাছে নন্দন সত্যিই মহার্ঘ্য; বাংলা ছবির মূল্যবোধ বিষয়ে ভেবে যে বাঙালী বাংলা ছবি দেখেন তারা যে অধিকাংশই নন্দনের দর্শক তা আমি আপনি কেউ কি অস্বীকার করতে পারব? 
এত কিছুর পরে কি ছবি তৈরি বন্ধ করে দেবো? না, এই লড়াই এতটাই নিজের যে মাটি কামড়ে লড়াই করে যাব! প্রতিবাদ ও করব প্রয়োজনে । 
ছবিটা তৈরি করতে করতে মা চলে গেল, দাদাও রইল না সপ্তাহ পার হয় নি, যে মানসিক অবস্থা এত কথা লিখতে ইচ্ছা করছিল না; তবুও শেমলেস দের মতোই নিজের ছবি প্রচার করে যাচ্ছি! কারণ ওই যে আমাদের মতো পরিচালকদের হাতে আর কোনও অস্ত্র নেই! কেউ ভাবতেই পারেন সিম্প্যাথি কুড়োচ্ছি, আপনাদের ভাবনার উপর আমার কোনও হাত নেই… ডিপফ্রিজ ভালো কি মন্দ তা বিচার করুক দর্শক! এখন সবটাই আপনাদের হাতে, আশা করি পাশে থাকবেন।”


এ প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন-কে পরিচালক অর্জুন দত্ত বললেন, "আমি একইসঙ্গে বিস্মিত ও হতাশ। কী বলব আর সত্যিই জানি না। খুব খারাপ লাগছে। যে ছবির সঙ্গে জাতীয় পুরস্কারের নাম জড়িত আছে, সেই ছবিকেও এমন সমস্যায় পড়তে দেখলে আর কী-ই বা বলার থাকতে পারে। কারা নন্দনের ছবির শো-টাইম ঠিক করেন, সেই বিষয়েও আমার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। কিন্তু  ওই যে বললাম, জাতীয় পুরস্কারের নাম জড়িত আছে এমন ছবির জন্য ভাল শো টাইম আশা কি করতে পারব না, যাতে একটু বেশি সংখ্যক দর্শক সেই ছবি দেখতে পারেন?  এমনিতেও ছবিটা আমার মনের খুব কাছের। সত্যি কথা বলতে কী, নন্দন তো আমাদের মতো পরিচালকদের কাছে একটা চূড়ান্ত আবেগ। সেটা লিখেওছি সমাজমাধ্যমে। নন্দনে নিজের ছবি মুক্তি পাওয়া মানে একটা মহার্ঘ্য ব্যাপার।  আর একটা কথা, আপনার সঙ্গে কথা বলা পর্যন্ত নন্দন কর্তৃপক্ষ থেকে এই বিষয়ে এখনও কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।”

(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল।)


প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে এই ছবিটি তৈরি করেছিলেন অর্জুন। সিনেমার মুখ্যভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন আবির চট্টোপাধ্যায় ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। এছাড়াও এই ছবিতে দেখা যাবে দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, অনুরাধা মুখোপাধ্যায় , শোয়েব কবীর ও লক্ষ্য ভট্টাচার্য-কে। ছবিতে আবিরের চরিত্রের নাম ‘স্বর্নাভ’। তনুশ্রীর চরিত্রের নাম ‘মিলি’। তাতাইয়ের চরিত্রে দেখা যাবে ‘লক্ষ্য’কে।