নিজস্ব সংবাদদাতা: আবারও ফিরছে দুই ভাই। 'সহজ পাঠের গপ্পো'-এর দুই খুদে সামিউল আলম ও নূর ইসলামকে আবারও বড়পর্দায় ফেরাতে চলেছেন পরিচালক মানস মুকুল পাল। তাঁরই পরিচালনায় দর্শক দেখেছিলেন 'সহজ পাঠের গপ্পো'। এবার তাঁর হাত ধরেই ফিরছে দুই ভাইয়ের জুটি। যদিও বাস্তবে সামিউল আর নূর দুই ভাই নয়, তবুও পর্দায় তাদের দু'জনকে একসঙ্গে দেখে এমনই ছবি ফুটে ওঠে দর্শকের মনে। 

 

 

 

আসছে মানসের নতুন ছবি 'চণ্ডীকথা'। এই ছবির হাত ধরে বহু বছর পর আবারও পরিচালনায় ফিরছেন তিনি। সঙ্গী তাঁর দুই খুদে। যদিও এখন আর তারা ছোটটি নেই। বয়স বেড়েছে দু'জনের। ইতিমধ্যেই দর্শক সামিউলকে বিভিন্ন ছবি ও সিরিজে দেখেছেন। এবং যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে সে দর্শক মহলে।

 

আরও পড়ুন: স্মৃতি হারিয়ে ফের বিয়ে করল 'সূর্য'? ফের সতীন আসছে 'দীপা'র! কী হতে চলেছে গল্পের নতুন মোড়ে? 

 

মানসের নতুন এই ছবি পঞ্চাশের দশকে মুর্শিদাবাদ জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের এই গল্পটি দুই কিশোর বন্ধুর জীবনযুদ্ধকে তুলে ধরে। মুচি সম্প্রদায়ের একটি ছেলে(সামিউল আলম) এবং তার একমাত্র বন্ধু ডোম সম্প্রদায়ের একজন (নূর ইসলাম) সেই সময়ের নিপীড়নমূলক সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে অস্পৃশ্যতা এবং অমানবিক জাতিভেদ প্রথা প্রবল ভাবে উপস্থিত- তার মধ্যে দিয়ে সব রকম অত্যাচার, অন্যায়, শোষণ অতিক্রম করেও তাদের বন্ধুত্ব অটুট রাখে। এই নিয়েই এগোবে ছবির গল্প।

 

 

'চণ্ডীকথা' তৎকালীন সমাজের আসল ছবিকে দর্শকের সামনে তুলে ধরবে। যেখানে ছেলেদুটি কিছু ভয়ংকর কুসংস্কার, নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হয় এবং তথাকথিত উচ্চশ্রেণীর গোষ্ঠীর দ্বারা শোষিত হতে থাকে। তাদের পরস্পরের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসা সমাজের কুসংস্কার এবং বিভাজনকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়।

 

 

তাদের যন্ত্রণা, সংগ্রাম,ত্যাগ ও প্রতিবাদের মাধ্যমে, 'চণ্ডীকথা' হয়ে ওঠে নির্মম বৈষম্যের মাঝে ঐক্য এবং মনুষ্যত্ব উদযাপন । কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসে ডুবে থাকা তৎকালীন নিষ্ঠুর সমাজের মাঝে একটি শিকল ভাঙার গল্প হয়ে উঠবে 'চণ্ডীকথা'।

 

 

 

নূর ও সামিউলের সঙ্গে আবারও কাজ করা প্রসঙ্গে পরিচালক মানস বলেন, "আমি বহুবার ওদের নিয়ে কাজ কর‍তে চাই। ওদের বেড়ে ওঠাটা প্রত্যেকদিন দেখছি। একদম ছোট বয়সে ওদের খুঁজে এনেছিলাম। ওরা বারবার আমাকে বলত আমাদের নিয়ে আবার একটা সিনেমা করো। লেখো আমাদের জন্য। যে অভিনয় ওরা 'সহজ পাঠের গপ্পো'তে করেছে তার জন্য আমি এখনও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বাঙালিদের কাছ থেকে আবেদন আসে।"

 

 

 

 

জানা যাচ্ছে, দর্শক সামিউল ও নূরকে একসঙ্গে আবারও দেখতে চাওয়ার আবেদন জানানোর জন্যই এই ছবির পরিকল্পনা করেন মানস। এটা স্বাধীন ছবি। কোনও প্রযোজকের সঙ্গে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কথা বলেননি পরিচালক।

 

 

 

 

'সহজ পাঠের গপ্পো'র দশ বছর হতে চলেছে। কিন্তু সেই ভেবেই এই ছবির পরিকল্পনা নয় বলেই জানিয়েছেন পরিচালক। তবে এটা কাকতালীয়ভাবেই হয়ে গেল। এ বছর ডিসেম্বরের শেষে শুটিং শুরু করার পরিকল্পনায় আছেন তিনি। তাই বলাই যায় 'সহজ পাঠের গপ্পো'র দশ বছরের মাথাতেই মুক্তি পেতে চলেছে 'চণ্ডীকথা'।