১৯৮৫-এর ২২ জুলাই। এই দিনেই মারা গিয়েছিলেন অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী। গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, মৃত্যুর দিন সকাল থেকে নাকি মাত্রাতিরিক্ত নেশা করেছিলেন। বেসামাল মহুয়া রায়চৌধুরী কি আত্মহত্যা করেছিলেন? নায়িকার মৃত্যু রহস্য আজও অধরা। অকালপ্রয়াত এই টলি-অভিনেত্রীর কথা বর্তমানে খুব বেশি আলোচিত হয় না। তবে মহুয়ার মৃত্যুর কয়েক দশক পরেও বর্তমানে তাঁর কথা উঠলে, সবার আগে আজও আলোচিত হয় তাঁর অভিনয়-প্রতিভা। একইসঙ্গে বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে তাঁর তুমুল বিতর্কিত ব্যক্তিগত জীবন এবং অবশ্যই রহস্যে ঢাকা তাঁর মৃত্যু! মহুয়ার মৃত্যুদিনে তাঁর বায়োপিকের প্রথম পোস্টার প্রকাশ করলেন প্রযোজক রাণা সরকার। সেইসঙ্গে করলে ঘোষণা - আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ মহুয়ার জন্মবার্ষিকীতে জানানো হবে তাঁর বায়োপিকে কে নামভূমিকায় অভিনয় করছেন।
মোশন পোস্টারেই যেন ঝলকে উঠল মহুয়ার জীবন ও মৃত্যুর সংকেত। প্রথমে দেখা গেল মহুয়ার একটি সাদাকালো হাসিমুখের ছবি—নির্বিকার, নিঃশব্দ। তারপর ঝুপ করে নেমে এল অন্ধকার। আর সেই অন্ধকার চিরে এক আগুনের মশাল, যেন মহুয়ার অন্তিম মুহূর্তগুলোর অদৃশ্য সাক্ষী হয়ে উঠে এল সামনে। মশাল থেকে বেরোতে থাকা অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ধীরে ধীরে রূপ নিল একটি জ্বলন্ত নারীর অবয়বে। শিউরে উঠতে হয়—এতটা প্রতীকী অথচ প্রখর চিত্রভাষা কতটা পরিকল্পিত!

মহুয়া রায়চৌধুরীর বায়োপিকের নাম ঠিক করা হয়েছে 'গুনগুন করে মহুয়া'। এর আগে এই ছবি প্রসঙ্গে রাণার বক্তব্য ছিল, "কেউ স্বীকার করুন বা না করুন, মহুয়ার জীবন যথেষ্ট বড় মাপের। ততটাই বড় তাঁর অভিনয় প্রতিভা। মানুষ মহুয়াই বা কেমন ছিলেন? বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় তাঁর প্রভাব কিছুতেই অস্বীকার করা যায় না। সে সব কথা এই প্রজন্ম জানবে না?’’ সেই তাড়না থেকেই তিনি এই ছবির প্রযোজক। পরিচালনায় নতুন মুখ সোহিনী ভৌমিক। গবেষণা-চিত্রনাট্যে দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত এবং সোহিনী। মহুয়ার চরিত্রে কাকে দেখা যাবে?জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই প্রযোজক আগে জানিয়েছিলেন, অনেকে ভাবনায় রয়েছেন। তাই এক্ষুনি কারও নাম করতে পারবেন না তিনি। তবে এই ছবিতে মানুষ মহুয়া এবং অভিনেত্রী মহুয়া— দু’জনকেই সমান ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। তাঁর আরও দাবি, এ-ও মাথায় রাখছেন, যেন কোনও ভাবেই এটি তথ্যচিত্র না হয়ে যায়। পরিচালনায় রয়েছেন নতুন প্রতিভা সোহিনী ভৌমিক, চিত্রনাট্যে এবং গবেষণায় সোহিনী ও দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত।
মহুয়ার মৃত্যু ঘিরে রয়েছে বহু গুজব—তিনি কি আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি অন্য কিছু? সম্পর্কের টানাপোড়েন, পেশাগত চাপ, মানসিক অবসাদ—সব মিলিয়ে তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে ছিল অজস্র প্রশ্ন, যার কোনওটাই সরকারিভাবে স্বচ্ছভাবে প্রকাশ্যে আসেনি।
এই বায়োপিক সেই অন্ধকারেই কি আলো ফেলবে? উত্তর লুকিয়ে ‘গুনগুন করে মহুয়া’ ছবির ফ্রেমে।
