‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা ২’ এবং ‘রাগিনী এমএমএস রিটার্নস’ খ্যাত করিশ্মা শর্মা সম্প্রতি মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে ভ্রমণকালে এক ভয়ঙ্কর ঘটনার শিকার হয়েছেন। বুধবার চলন্ত ট্রেন থেকে ‘ঝাঁপ’ দেওয়ার পর তিনি একাধিক চোট পান। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে করিশ্মা বলেছেন, “আমার শরীরে একাধিক আঘাত লেগেছে, আর একটা অদ্ভুত ভাবে স্মৃতিভ্রংশও হচ্ছে। শারীরিক যন্ত্রণা অনুভব করছি, তবে আপাতত আমি বাড়িতে আছি। আমার মা মুম্বইয়ে এসেছেন। আমার সেরে ওঠার সময়ে সাহায্য করার জন্য।”
দুর্ঘটনার কথা মনে করিশ্মা জানিয়েছেন, তিনি এখনও ভীষণ ভীত। বলেন, “আমি আর কোনও দিন ট্রেন স্টেশনের কাছাকাছি যেতে বা ট্রেনে চড়তে পারব বলে মনে হয় না। পুরো ঘটনাটা এই ঘটনাটি আমাকে মানসিকভাবে আঘাত করেছে এবং আতঙ্কে রেখেছে। এক সময়কার আনন্দময় স্মৃতি এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।”
এখনও যন্ত্রণা পোহাচ্ছেন করিশ্মা। নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ৩১ বছর বয়সি অভিনেত্রী বলেন, “আমার মাথা ভারী লাগছে। এখনও প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। চিকিৎসকরা আমাকে ছাড়পত্র দিয়েছেন কারণ এমআরআই-তে কোনও আভ্যন্তরীণ আঘাত ধরা পড়েনি। তবে তাঁরা সতর্ক থাকতে বলেছেন। যদি এক-দু’দিন পরও ব্যথা বাড়ে, তবে আমাকে তৎক্ষণাৎ আবার হাসপাতালে ফিরতে হবে, কারণ ভিতরের আঘাত প্রকাশ পেতে সময় লাগে।”
করিশ্মা আরও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর তাঁর কিছু আঘাত পরে ধরা পড়ে। তিনি বলেন, তাঁর গোড়ালির চারপাশে ছোট ছোট ফোস্কা হয়েছিল, যেগুলি জলভরা বেলুনের মতো লাগছিল, আর তাঁর পা জ্বলছিল। মাথা ভারী হয়ে যাচ্ছিল, সোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছিল। আর নিচু করলে ঘাড়ে যন্ত্রণা হচ্ছিল।
দুর্ঘটনার পর তিনি স্মৃতিভ্রংশ এবং বিভ্রান্তিতে ভুগছিলেন। করিশ্মা প্রায় দু’ঘণ্টা তিনি কিছুই মনে করতে পারেননি, চারপাশ চিনতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, “আমার হাত কাঁপছিল। আমি বুঝতেই পারছিলাম না কী ঘটছে। আজও বলতে পারি না যে আমি ওই কাজটা কেন করলাম।”
তাঁর মতে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার, তিনি কিছুতেই মনে করতে পারছেন না কীভাবে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিলেন।
ঘটনাটি ইচ্ছাকৃত ছিল না, তা স্পষ্ট করে করিশ্মা বলেন, “আমার এক বন্ধু কলকাতার, তাই সে এখানকার ট্রেন সম্পর্কে কিছু জানত না। আর যে হেয়ারড্রেসার আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিল, সে মুম্বইয়ের। আমি বুঝতেই পারিনি যে আমরা আরেকটা ট্রেনও ধরতে পারতাম। আমি ছোটবেলায় পাটনা আর মুম্বইয় ট্রেনে যাতায়াত করতাম, আর ট্রেনে চড়ার সঙ্গে সব সময় খুশির স্মৃতিই জড়িয়ে ছিল কিন্তু কীভাবে হঠাৎ আমার মধ্যে এমন ট্রিগার হল জানি না; আমি হঠাৎ লাফ দিয়েছিলাম, আর আমার কোনও স্মৃতিই নেই।”
তিনি আরও জানান, এক মহিলা কনস্টেবল এবং আরেকজন নারী তাঁকে উদ্ধার করে স্টেশনের একটি ছোট ক্লিনিকে নিয়ে যান। তবে তিনি নিজেই অনুরোধ করেন তাঁকে যেন সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে অন্ধেরির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
