‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’-এর মতো ছবিগুলি জুড়ে জায়গা করে রয়েছে তার গান। নেপথ্য নায়ক সঙ্গীত পরিচালক ইসমাইল দরবার। সঞ্জয় লীলা বনশালির সঙ্গে একের পর এক সফল কাজ দর্শককে উপহার দিয়েছেন তিনি। সেই সব ছবির নেপথ্যে থাকা নানা আখ্যান আজও তাঁর মনে অমলিন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্মৃতির পাতা উল্টেছেন তিনি।

এক সময় শাহরুখ খান, সলমন খান এবং ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন ইসমাইল। সেই ছবিগুলি সাফল্যের শীর্ষে থাকলেও তার পিছনে চরিত্র বাছাই এবং অন্যান্য পেশাগত সিদ্ধান্তে দ্বন্দ্ব ছিল বিস্তর।

ইসমালই জানান, বনশালির ‘দেবদাস’-এ শাহরুখকে কাস্ট করার সিদ্ধান্ত সলমনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে প্রভাবিত করেছে। তিনি বলেন, “যখন আমার কাজের দরকার ছিল, তিনি আমাকে ‘হুম দিল দে চুকে সানাম’ দেন। আর যখন তার দরকার ছিল, আমি সব কাজ ছেড়ে তার জন্য দিলাম। তিনি আমার ইন্ডাস্ট্রির গডফাদার ছিলেন। আমার মনে হয়, শাহরুখকে কাস্ট করার কারণে তার সলমনের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায়। এমনকি ‘খামোশি’ ব্যর্থ হলেও সলমন ওঁর পাশে ছিলেন। আমি যদি দু’বার সাহায্য করি, এবং তৃতীয়বার তুমি আমার প্রতিযোগীকে কাস্ট করো, আমি তা হলে নিশ্চয়ই রেগে যাব।”

ইসমাইল একা নন। একটি সাক্ষাৎকারে বিজ্ঞাপন পরিচালক প্রহ্লাদ কাক্কারও জানিয়েছিলেন, তিনি সলমন এবং ঐশ্বর্যের প্রবল দ্বন্দ্ব দেখেছেন। কারণ তিনি নায়িকার আবাসনেই থাকতেন। প্রহ্লাদ বলেন, “ঐশ্বর্য খুব ব্যথিত ছিল, কারণ ওদের ব্রেকআপের পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সলমনের পক্ষে দাঁড়ায়। ওর সবচেয়ে বড় আঘাত হল শিল্পজগতে তাকেও পাশে না পাওয়া। সেই কারণেই ওর শিল্পী জীবনের প্রতি অঙ্গীকারে ফাটল পড়ে। ও সত্যিই খুব হতাশ হয়েছিল।”

সেই সময় সলমনের সঙ্গে ঐশ্বর্যের প্রেমের আখ্যান কারও অজানা নয়। কিন্তু সেই প্রেমে তিক্ততা মিশে যেতেও লাগেনি সময়। নায়ক-নায়িকার দ্বন্দ্ব এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে তাঁদের পেশাগত জীবনেও। সেই কারণেই কি ‘দেবদাস’-এ সলমনকে নিতে চাননি বনশালি? ইসমাইল বলেন, “ওদের ঝগড়ার খবর মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আমরা খারাপ লাগত। ওরা এতটা কাছের। ওদের এরকম ঝগড়া করা উচিত ছিল না। তবে এসব সব অতীতের কথা, সলমনও এতটাই বুদ্ধিমান যে আর কখনও এ নিয়ে কিছু বলেননি।”


বনশালির সঙ্গে তাঁর পেশাদার সম্পর্ক এবং অতীত অভিজ্ঞতা নিয়েও মুখ খুলেছেন ইসমাইল। জানিয়েছেন, পরিচালকের সঙ্গে তিনি আরও কখনও কাজ করবেন না। এমনকি তাঁকে যদি ১০০ কোটি পারিশ্রমিকও দেওয়া হয়, তখনও নাকি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন তিনি। ইসমাইল জানান, বনশালির সঙ্গে তাঁর পেশাদার সম্পর্ক ভেঙে যায় নেটফ্লিক্স সিরিজ ‘হীরামণ্ডি’-এর সময়। সেই সিরিজের জন্য ইসমাইল এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীত রচনা করছিলেন, কিন্তু একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাঁকে কাজ থেকে সরে যেতে হয়।