আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৩রা মে, ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯১৩ সালের এই দিনেই দাদা সাহেব ফালকে পরিচালিত ভারতের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র 'রাজা হরিশচন্দ্র' মুক্তি পেয়েছিল মুম্বাইয়ের করোনেশন সিনেমা হলে। এই ঘটনাটিকেই ভারতীয় সিনেমার জন্মলগ্ন বা সূচনা হিসেবেই গণ্য করা হয়। সেই হিসাবে আজ ১১২ বছরে পা দিল ভারতীয় সিনেমা।
এই ছবির জন্যেই দাদা সাহেব ফালকে-কে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক বলা হয়। তবে দাদা সাহেব ফালকের অবদান অস্বীকার না করেও বলা যায়, তিনিই প্রথম ভারতীয় চিত্র পরিচালক- এমন দাবি ঘিরে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কের নেপথ্যে একজন বিস্মৃত বাঙালি, হীরালাল সেন। হীরালাল সেন ছিলেন বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ। দাদা সাহেব ফালকের 'রাজা হরিশচন্দ্র' (১৯১৩) মুক্তি পাওয়ার বেশ কয়েক বছর আগেই, বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তিনি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, বিজ্ঞাপন চিত্র, তথ্যচিত্র এবং বিখ্যাত মঞ্চনাটকের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন।
১৯১৭ সালে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সৃষ্ট বিধ্বংসী আগুনে তাঁর তৈরি প্রায় সমস্ত ফিল্ম প্রিন্ট এবং সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর ফলে তাঁর কাজের মূল্যায়ন বা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাঁর অবদান তুলে ধরার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে। হীরালাল সেনের জীবনের যাবতীয় কাজ প্রায় সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যায়। সে বছরই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। অবিচার এবং বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যায় তাঁর কথা।
পরবর্তীকালে চলচ্চিত্র ঐতিহাসিকরা, বিশেষ করে বাংলার গবেষকরা, তাঁর অবদান স্বীকার করেছেন। তবুও জাতীয় স্তরে বা আন্তর্জাতিকভাবে দাদা সাহেব ফালকের মতো স্বীকৃতি তিনি পাননি। ‘ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক’ হিসেবে ফালকের পরিচিতি যেখানে বিশ্বজনীন, সেখানে হীরালাল সেনের নাম তুলনায় কম উচ্চারিত হয়।
