বলিউডে নায়ক-নায়িকাদের সমান পারিশ্রমিক নিয়ে বিতর্ক বহুদিন ধরেই চলছেই। এবার এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রখ্যাত পরিচালক সুধীর মিশ্র। তিনি বলেন, যদি কোনও নায়িকা পুরুষ সহ-অভিনেতার সমান গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তাঁদের স্টার পাওয়ার সমান হয়, তবে তাঁদের বেতনও সমান হওয়া উচিত।
এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান পরিচালক বললেন, “সমতা মানে হলো যদি মহিলার চরিত্র পুরুষের চরিত্রের সমান গুরুত্বের হয়, তবে তাঁকে সমান পারিশ্রমিক দেওয়া উচিত। যদি তাঁর চরিত্র আরও বড় হয়, তবে আরও বেশি বেতন দেওয়া উচিত। তবে সবই অনেকটা বক্স অফিসের সঙ্গে সম্পর্কিত। সিনেমায় আপনি সাধারণ বেতন পান না, বরং মুনাফার ভাগ পান।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “সিনেমায় কোন তারকা বেশি বেতন পান কারণ তিনি বেশি বক্স অফিস টানেন। তবে কখনও কখনও কিছু তারকা এমন বেতন পান যা তাঁদের আয় থেকে বেশি... এটি আরেকটি গল্প।” তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন দীপিকা পাডুকোনের। তাঁর মতে, দীপিকার জনপ্রিয়তা আর স্টার পাওয়ার তাঁর অধিকাংশ পুরুষ সহঅভিনেতাদের সমান।
সুধীর মিশ্রের কথায়, “ এই আলোচনা থেকে শাহরুখ খানকে আলাদা রাখুন, পর কথা আলাদা। ও কখনও বুড়ো হন না এবং সর্বদা দর্শকের মনে নতুন উদ্দীপনা জাগান,” সুধীর মিশ্রা বলেন। তিনি আরও বলেন, দীপিকা সঞ্জয়লীলা বনশালির অধিকাংশ ছবিতে প্রধান চরিত্রে ছিলেন, তাই “এখন সময় এসেছে” যে তিনি পুরুষ সহঅভিনেতাদের সমান বেতন পান।
সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘গোলিয়োঁ কি রাসলীলা: ‘রাম লীলা’ (২০১৩), ‘বাজিরাও মস্তানি’ (২০১৫), এবং ‘পদ্মাবত’ (২০১৮) ছবিগুলোতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন দীপিকা। শোনা গিয়েছিল, ‘পদ্মাবত‘–এ শাহিদ কাপুর ও রণবীর সিং–এর চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন দীপিকা। সুধীর মিশ্রার মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে যখন দীপিকার 'কল্কি ২' ও 'স্পিরিট'–এর প্রজেক্ট থেকে বের হয়ে যাওয়ার খবর তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। জোর খবর, এইসব ছবি থেকে দীপিকার সরে আসার অন্যতম প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি ছিল পারিশ্রমিকের অসমতা।
এছাড়া, সুধীর মিশ্রা উল্লেখ করেন, তাঁর পরিচালনায় ‘চামেলি’ ছবিতে পুরুষ সহঅভিনেতা রাহুল বোস-এর চেয়ে বেশি বেতন পাওয়া উচিত ছিল করিনা কাপুরের। তিনি বলেন, “...অবশ্যই তাঁর চরিত্র অনুযায়ী বেশি বেতন পাওয়া উচিত।”
সুধীর মিশ্রা বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট, বলিউডে পারিশ্রমিক সমতা এখন শুধু নায়িকাদের দাবি নয়, শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই আলোচনার ফলে নায়িকাদের কাজ ও সম্মানের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক মূল্যায়নও সমানভাবে গুরুত্ব পাবে।
