বলিউডের অন্যতম বহুচর্চিত সম্পর্কের খাতায় প্রায় উঁচুতে লেখা রয়েছে সলমন খান এবং ঐশ্বর্য রাইয়ের প্রেমের গল্প। ১৯৯৯ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির শুটিং সেটেই শুরু হয় তাঁদের রোম্যান্স। রূপোলি পর্দার রসায়ন গড়িয়েছিল বাস্তবে, আর ভক্তদের কাছে তাঁরা হয়ে উঠেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির সবথেকে চর্চিত ও গ্ল্যামারাস কাপল। কিন্তু ২০০২ সালে হঠাৎ ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।
তার এক বছর পর, ২০০৩ সালে পরিচালক সতীশ কৌশিকের ছবি ‘তেরে নাম’-এ ভাঙা হৃদয়ের, আবেগপ্রবণ ও একরোখা প্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করেন সলমন। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে 'তেরে নাম' ছবির টাইটেল ট্র্যাকের গীতিকার সমীর আঞ্জান জানালেন সেই ছবির শুটিংয়ের সময়ের সলমনের অজানা কাহিনি।
সমীরের কথায়, “‘তেরে নাম’-এর টাইটেল ট্র্যাকটি কিন্তু কোনওভাবেই সলমনকে মাথায় রেখে লেখা হয়নি। কিন্তু ঐশ্বর্য রাইয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের দুঃখে গানটা যেন তাঁর বাস্তব কাহিনিই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রতিটি শট দেওয়ার আগে সলমন হিমেশ রেশমিয়ার কাছে গানটা গাইতে চাইতেন, আর তা শুনেই কেঁদে ফেলতেন!”
বিশেষত এই গানের লাইন— “কিউঁ কিসি কো ওয়াফা কে বদলে ওয়াফা নাহি মিলতি”— সলমনের ব্যক্তিগত জীবনের যন্ত্রণাকেই যেন প্রকাশ করত। সমীর আরও যোগ করেন, “ ছবির সেটেই সলমন গানটা শুনে চোখের জল ফেলতেন, তারপর শট দিতে যেতেন। আসলে, তখনও তাঁর বিচ্ছেদের ক্ষত ছিল একেবারে টাটকা।”
যেখানে দর্শক ‘তেরে নাম’-কে ভেবেছিলেন নিছক এক মেলোড্রামাটিক প্রেমকাহিনি, আসলে সেই ছবিটি যেন ছিল সলমনের নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি। তাঁর চোখের জল আর ভালবাসার মানুষকে হারানোর ক্ষত মিশে গিয়েছিল অভিনয়ের মধ্যে।
আজও বলিউডের ইতিহাসে সলমন–ঐশ্বর্যের সম্পর্ক অন্যতম আলোচিত অধ্যায়। সেই বিচ্ছেদের পর সলমন আজও থেকে গিয়েছেন অবিবাহিত, অন্যদিকে ২০০৭ সালে ঐশ্বর্য বিয়ে করেন অভিষেক বচ্চনকে। এখন তাঁদের কন্যা আরাধ্যা-কে নিয়েই সুখের সংসার তাঁদের।
অন্যদিকে, গীতিকার সমীর আঞ্জান আজও বলিউডের এক কিংবদন্তি। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ৫০০-রও বেশি ছবিতে লিখেছেন চার হাজারেরও বেশি গান, । তবু ‘তেরে নাম’-এর শুটিংয়ের এই ঘটনা প্রমাণ করে দেয়—কিছু গান নিছক সুর বা কথা নয়, বরং এক অভিনেতার ব্যক্তিগত ক্ষত–বেদনাই হয়ে ওঠে অমর সৃষ্টির প্রেরণা।
