শ্রাবণ মাসে পেট ভরে পাঁঠার মাংস খান তিনি, তাও উপবাস ভাঙার পর। অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের এই পোস্টের পরেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। একটি পোস্টে তনুশ্রী জানান, শ্রাবণ মাসে উপোস করার পরে তিনি পাঁঠার মাংস খান। পাঁঠার মাংস খাওয়ার উপকারিতা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তনুশ্রী, যেখানে তিনি বলেন, তিনি শ্রাবণের উপবাস রেখেছিলেন সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত। তারপর ভাঙেন উপবাস—চাল, কালো ডাল আর মাটন দিয়ে ভরপেট খেয়ে। আর এতেই উসকে ওঠে নেটপাড়ার ধর্ম-দর্শনের ঝড়।তনুশ্রীর পোস্টে ছিল স্পষ্ট বক্তব্য—“ধর্মীয় উপবাস কঠোর হওয়া জরুরি নয়। নিজের শরীর আর সংস্কৃতির প্রেক্ষিতে যেমন উপবাস মানায়, তেমন করেই করাটা ঠিক।” তিনি আরও যোগ করেন, “উপবাসে মানসিক শক্তি তৈরি হয়, আর ভাঙার পরে প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে শরীরও ভাল থাকে।” তাঁর এই মটন–ডাল ভোজ নাকি একেবারে আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিভঙ্গিতে যথার্থ!
তবে সোশ্যাল মিডিয়া কি আর চুপ করে বসে? এক নেটিজেন তনুশ্রীকে কটাক্ষ করেন— “শ্রাবণ... উপবাস... মটন... ফ্যাট... আপনি কিন্তু আলাদাই!” জবাবে তনুশ্রীর ধমক— “বাংলায় এভাবেই উপবাস হয়। সন্ধ্যার পর দেবীর প্রসাদ হিসেবে খাসির মাংস খাওয়া সংস্কৃতির অংশ। আগে পুরো ভিডিও দেখো, তারপর ধর্ম শেখাও।” আরেকজন কমেন্ট করে অভিযোগ তোলেন, “ধর্মের আড়ালে পশুহত্যা” করছেন তিনি। সেখানেই তনুশ্রী একেবারে বিস্ফোরক হয়ে ওঠেন— “তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে মানসিক ভারসাম্য নেই! পাগলের মতো ধর্মের ব্যাখ্যা দিও না।”
তিনি আরও বলেন— “নেপালে এটা খুবই স্বাভাবিক। পশুপতিনাথের পূজা হয় সেখানে প্রতিটি ঘরে। আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভারতজুড়ে বিভিন্ন সংস্কৃতিকে ঘিরে তৈরি। সনাতন ধর্ম নিয়ে কেউ আমাকে হারাতে পারবে না।”
এই বিতর্কের ঠিক আগেই তনুশ্রী ইনস্টাগ্রামে আরেকটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন, যেখানে তিনি জানান, মুম্বইয়ে নিজের বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।এমন এক মানসিক অবস্থার মাঝেও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ব্যাখ্যার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে চোখের জল ফেলতে ফেলতে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে তনুশ্রী জানিয়েছেন নিজের উপর হওয়া লাগাতার অত্যাচারের কথা। বললেন, “নিজের বাড়িতেই আমি নিরাপদ নই। কেউ যেন আমাকে ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে।”
তনুশ্রীর কথায়, “কয়েক বছর ধরে আমি নিজের বাড়িতেই ভয়ংকর ভাবে হয়রানির শিকার। প্রচুর জিনিস চুরি হয়েছে, নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বাইরে থেকে প্রায়ই দরজায় মারধর করা হয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি, মানসিকভাবে আর সহ্য করতে পারছি না।” তিনি জানান, এতদিন একাই এসব সামলানোর চেষ্টা করলেও এখন পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
ভিডিওতে তনুশ্রীকে দেখে অবাক অনুরাগীরা। একসময়ের ঝলমলে চেহারার অভিনেত্রীকে যেন চেনাই যায় না—ওজন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে, চোখে মুখে অসুস্থতার ছাপ স্পষ্ট। জানা যাচ্ছে, মানসিক চাপে ভুগতে ভুগতেই তাঁর এই অবস্থা। নিজেই বলেছেন, “কোনও কাজ মন দিয়ে করতে পারছি না, শরীর ভেঙে পড়েছে।”
