সংবাদ সংস্থা মুম্বই: আমির খানের বহু প্রতীক্ষিত প্রত্যাবর্তনের ছবি ‘সিতারে জমিন পর’ মুক্তির আগেই পড়ে গেল বিতর্কের ঘূর্ণিপাকে। নিউরোডাইভার্জেন্ট প্রাপ্তবয়স্কদের জীবন ও তাঁদের কোচের আবেগঘন গল্প নিয়ে তৈরি এই ছবির মুক্তি ২০ জুন, ২০২৫। তবে তার আগেই ছবিতে কয়েকটি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। সহজ কথায় কাঁচি চালাতে! আর এই পরিবর্তন ঘিরেই উঠেছে নানা প্রশ্ন, জট পাকিয়েছে বিতর্ক।


মুম্বইয়ের এক সংবাদসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশনের (CBFC) রিভাইজিং কমিটি সিতারে জমিন পর ছবিতে পাঁচ-পাঁচটি পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—

‘বিজনেস উইম্যান’ শব্দের পরিবর্তে ‘বিজনেস পার্সন’ ব্যবহারের পরামর্শ, যাতে লিঙ্গ নিরপেক্ষতা বজায় থাকে।

‘মাইকেল জ্যাকসন’-এর নাম বদলে ‘লাভবার্ডস’ করা।

‘কমল’  শব্দের পরিবর্তে ইংরেজি শব্দ ‘ লোটাস’ (Lotus) বসানো।

পুরনো বিশেষ বিজ্ঞপ্তি বাদ দিয়ে নতুন বিশেষ বিজ্ঞপ্তি যুক্ত করার পরামর্শ, যেখানে থাকবে ভয়েসওভার।

এবং সবথেকে চমকপ্রদ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি উদ্ধৃতি ছবিতে যুক্ত করার নির্দেশ, যদিও সেটি ঠিক কোন বক্তব্য তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

 

প্রথমে ছবির দু’টি দৃশ্যে কাটছাঁটের দাবি জানায় সেন্সর বোর্ড। কিন্তু প্রযোজক ও মুখ্য অভিনেতা আমির খান সাফ জানিয়ে দেন, এই অংশ বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর মতে, এটি ছবির সৃজনশীলতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি ও তাঁর টিম। তাঁদের ব্যাখ্যা ও যুক্তি শুনে অবশেষে কাটছাঁট ছাড়াই U/A 13+ সার্টিফিকেট মঞ্জুর করে সেন্সর বোর্ড অর্থাৎ ১৩ বছর বয়সী এবং সেই বয়সের ঊর্ধ্বে যে কোনও ব্যক্তি এ ছবি প্রেক্ষাগৃহে বসে দেখতে পারবে। তবে এই টানাপোড়েনে ছবির ছাড়পত্র পেতে খানিক দেরি হয়।

 

নির্মাতাদের তরফে, তারে জমিন পর স্পিরিচুয়াল সিক্যুয়েল হিসেবে বলা হচ্ছে সিতারে জমিন পর-কে, যেখানে আগের ছবিতে ডিসলেক্সিয়া আক্রান্ত শিশুর কথা বলা হয়েছিল, এবার ফোকাস নিউরোডাইভার্জেন্ট প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনের উপর। গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে এক বাস্কেটবল কোচ, যাঁকে ডিইউআই (ড্রাইভিং আন্ডার ইনফ্লুয়েন্স)-এর দায়ে সামাজিক সেবা হিসেবে এক বিশেষ দলকে প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখান থেকেই তাঁর জীবনের বদল ঘটতে থাকে।

 

এই ছবিতে আমির খানের পাশাপাশি রয়েছেন জেনেলিয়া ডি’সুজা ও আরও ১০ জন বিশেষ সক্ষম অভিনেতা—আরুশ দত্ত, গোপী কৃষ্ণ বর্মা, সম্বিৎ দেশাই প্রমুখ।সেন্সরের কাটছাঁট, মোদির উদ্ধৃতি সংযুক্তি, ভাষা পরিবর্তনের তর্ক—সব মিলিয়ে মুক্তির আগেই চর্চার কেন্দ্রে আমিরের সিতারে জমিন পর। ছবির সমাজ-সচেতন থিম ও আবেগঘন কনটেন্টের সঙ্গে এই বিতর্ক আদৌ কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, এখন তাকিয়ে দর্শক ও বলিউড—দু’পক্ষই।