ঐশ্বর্য রাই বচ্চন মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের পুট্টাপার্থিতে আয়োজিত শ্রী সত্য সাই বাবার জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিঞ্জারাপু এবং জি কিশন রেড্ডিও যোগ দেন। বক্তৃতা শুরু করার আগে মঞ্চে বসে থাকা প্রধানমন্ত্রীকে প্রণাম করেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী।

বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ এই অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হাজির হয়ে আধ্যাত্মিক গুরুকে শ্রদ্ধা জানান। উদযাপনের সময় ঐশ্বর্য যে বক্তৃতা দেন, তার মূল বিষয় ছিল জাতি-ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবতাকে গুরুত্ব দেওয়া। তাঁর কথায়, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে ভালবাসা এবং মানবিকতার পথে এগিয়ে যাওয়াই সমাজের প্রকৃত প্রয়োজন। সেখানে উপস্থিত সকলেই মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনেন।

অভিনেত্রীর কথায়, “পৃথিবীতে মাত্র একটি জাতি আছে—মানবজাতি। মাত্র একটি ধর্ম আছে—ভালবাসার ধর্ম। মাত্র একটি ভাষা—হৃদয়ের ভাষা। আর মাত্র একজন ঈশ্বর—যিনি সর্বত্র বিরাজমান।”

অভিনেত্রীর, কথায় উপস্থিত শ্রোতারা করতালি দিয়ে নিজেদের মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। অনুরাগীরা মনে করছেন,তাঁর বক্তব্য শ্রী সত্য সাই বাবার শিক্ষার সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে তিনি ভালবাসা, সেবামূলক জীবন ও মানবতার ওপর গুরুত্ব দিতেন।

মঞ্চে বক্তৃতা চালিয়ে যেতে গিয়ে ঐশ্বর্যা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং তাঁর বক্তব্য শোনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আজ এখানে উপস্থিত থাকার জন্য এবং এই বিশেষ অনুষ্ঠানকে আরও বিশেষ করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনার জ্ঞান, অনুপ্রেরণা জাগানো বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় আছি। আপনার উপস্থিতি এই উদযাপনে পবিত্রতা যোগ করেছে এবং আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে স্বামীজির শিক্ষা। প্রকৃত নেতৃত্ব হল সেবা। আর মানুষের সেবা মানেই ঈশ্বরের সেবা।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঐশ্বর্যের সৌহার্দ্যপূর্ণ কথোপকথন এবং মঞ্চে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের দৃশ্য দেখে অনুরাগীদের একাংশ নতুন জল্পনায় মেতে উঠেছে। তাঁদের ধারণা, খুব শিগগিরিই হয়তো ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিতে পারেন ঐশ্বর্য। অর্থাৎ দীর্ঘদিনের অভিনয়জীবনের পরে এবার রাজনৈতিক আঙিনায় পা রাখতে পারেন এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী।

সামাজিক মাধ্যমে নানা মন্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে—কারও মতে, সেখানে ঐশ্বর্যর উপস্থিতি এবং বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে তাঁর সম্ভাব্য রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে, আবার কেউ কেউ মনে করছেন, তেমন কিছুই নয়। প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শনই শুধুমাত্র এই গুঞ্জনের ভিত্তি।

তবে এখনও পর্যন্ত অভিনেত্রী বা বচ্চন পরিবারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করা তো দূরের কথা—এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই জানানো হয়নি। ফলে এই জল্পনা আপাতত গুঞ্জন হিসেবেই ঘুরপাক খাচ্ছে। ভবিষ্যতে সত্যিই তাঁর জীবনের নতুন অধ্যায় রাজনীতির পথ ধরে শুরু হবে কি না, তা সময়ই বলবে।