আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সিদ্ধান্তের আগে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক অবস্থান এবং ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচকগুলো নিম্নমুখী হয়ে বন্ধ হয়েছে। দিনের শুরু থেকেই বাজারে বিক্রির চাপ দেখা যায়, যা লেনদেনের শেষভাগ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।


এসঅ্যান্ডপি বিএসই সেনসেক্স ৪৩৬.৪১ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮৪,৬৬৬.২৮ পয়েন্টে বন্ধ হয়। একইভাবে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি৫০ সূচক ১২০.৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ২৫,৮৩৯.৬৫ পয়েন্টে। মাঝারি ও ছোট মূলধনী শেয়ারেও চাপ লক্ষ্য করা যায়, ফলে বাজারের সামগ্রিক মনোভাব ছিল নেতিবাচক।


বুধবারের মার্কিন ফেডের নীতিগত বৈঠকের আগে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে অনিচ্ছুক ছিলেন। লাভ বুকিংয়ের প্রবণতা, টাকার দুর্বলতা, বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক নিট বিক্রি এবং ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা মিলিয়েই বাজারে চাপ বেড়েছে।


বাজারে মূলত অনুমান করা হচ্ছে যে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহারে কাটছাঁট করতে পারে, অন্যদিকে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদহার বাড়াতে পারে। তবে ২০২৬ সালের জন্য ফেডের ফরোয়ার্ড গাইডেন্স বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে। স্বল্পমেয়াদে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলোর মন্তব্য, মুদ্রাবাজারের গতিবিধি এবং এফআইআই প্রবাহই বাজারের দিকনির্দেশ ঠিক করবে। তবু দেশের শক্তিশালী ঘরোয়া সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভিত্তি বড় ধরনের পতনের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমাতে পারে।


শেয়ারভিত্তিক পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে, সেনসেক্সে হাতে গোনা কয়েকটি শেয়ার তুলনামূলক ভালো পারফর্ম করেছে। ইটার্নাল শেয়ার ২.২৬ শতাংশ বেড়ে শীর্ষ লাভকারীর তালিকায় ছিল। টাইটান কোম্পানি ২.১৩ শতাংশ বাড়ে। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন ১.০৭ শতাংশ উপরে ওঠে, ভারত ইলেকট্রনিক্স ০.৮২ শতাংশ লাভ করে এবং বাজাজ ফিনসার্ভ ০.৩৬ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে শীর্ষ পাঁচ লাভকারীর তালিকা সম্পূর্ণ করে।


অন্যদিকে, লোকসানকারী শেয়ারগুলোর ক্ষেত্রে বিক্রির চাপ ছিল স্পষ্ট। এশিয়ান পেইন্টস ছিল দিনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাওয়া শেয়ার, যার দাম ৪.৬১ শতাংশ কমে যায়। আইটি খাতের শেয়ারগুলিও দুর্বল ছিল—টেক মাহিন্দ্রা ১.৯৯ শতাংশ, এইচসিএল টেকনোলজিস ১.৭৮ শতাংশ কমে বন্ধ হয়। টাটা স্টিলের শেয়ার ১.৭৪ শতাংশ পিছিয়ে যায় এবং মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া ১.০৫ শতাংশ পতন নিয়ে দিনের লেনদেন শেষ করে।


মোটের ওপর, আন্তর্জাতিক নীতিগত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা এবং বিশ্বের অনিশ্চয়তার আবহে মঙ্গলবারের বাজার ছিল রক্ষণাত্মক। বিনিয়োগকারীরা আপাতত স্পষ্ট দিকনির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছেন, আর ততদিন বাজারে অস্থিরতা ও ওঠানামা বজায় থাকার সম্ভাবনাই বেশি।