আজকাল ওয়েবডেস্ক: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) সম্প্রতি রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৫.২৫%-এ নামানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ঋণগ্রহীতাদের বিশেষ করে পার্সোনাল লোন নেওয়ার পরিকল্পনা থাকা মানুষদের জন্য বড় স্বস্তির খবর হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঋণের খরচ কমলে ব্যাঙ্ক ও নন-ব্যাঙ্কিং ফাইনান্স কোম্পানিগুলি ধীরে ধীরে সুদের হার সামান্য হলেও কমাতে পারে, ফলে ভবিষ্যৎ ঋণের দায় কিছুটা লাঘব হবে।


ব্যক্তিগত ঋণের সুদ কি কমবে?
রেপো রেট কমলে ব্যাঙ্কগুলোর তহবিল সংগ্রহের খরচ হ্রাস পায়। ফলে তারা ধীরে ধীরে গ্রাহকদের জন্য কম সুদের ব্যক্তিগত ঋণ অফার করতে পারে। যদিও এই পরিবর্তন তাত্ক্ষণিকভাবে কার্যকর নাও হতে পারে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঋণদাতারা নতুন নীতি পরিবেশ অনুযায়ী সুদহার সমন্বয় করতে পারে।


রেপো রেট ৫.২৫%-এ নামানোর সিদ্ধান্ত একটি বৃদ্ধিমুখী নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। ডিজিটাল ঋণদাতা এবং NBFC–দের জন্য এটি তারল্য বৃদ্ধি করে, পুঁজি সংগ্রহের খরচ কমায় এবং আরও দ্রুত, কার্যকরী ও গ্রাহকবান্ধব সেবা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে।”


ঋণ পাওয়া সহজ হবে
ডিজিটাল লেন্ডার ও NBFC–রা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধার করা অর্থের উপর নির্ভরশীল। রেপো রেট কমলে তাদের ধার নেওয়ার খরচও কমে, ফলে সহজেই গ্রাহকদের ঋণ দিতে পারে। এই কারণে স্বল্প অঙ্কের জরুরি ঋণ বা স্বল্প-মেয়াদি ব্যক্তিগত ঋণ পাওয়াও তুলনামূলকভাবে সহজ হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনুকূল সুদের পরিবেশ দায়িত্বশীল ঝুঁকি গ্রহণকেও উৎসাহিত করে। এতে ডিজিটাল লেন্ডিং সেক্টর আরও নমনীয় ও সাশ্রয়ী ঋণপণ্য তৈরি করতে পারে।


স্বল্প আয়ের পরিবার ও মাইক্রোফাইনান্স গ্রাহকদের জন্যও স্বস্তি
ঋণের খরচ কমার ফলে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলিও উপকৃত হবে, বিশেষত যাঁরা মাইক্রোফাইনান্স ঋণের ওপর নির্ভর করেন। গত কয়েক বছরে এই শ্রেণির অনেক গ্রাহকই কিস্তি পরিশোধে চাপে পড়েছিলেন। রেপো রেট কাট এই চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে।


মাইক্রোফাইনান্স খাতে এই রেট কাট একটি সময়োপযোগী স্বস্তি, যা নিম্ন আয়ের পরিবারের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে এবং ২০২৫ জুড়ে ইতিবাচক প্রভাব বজায় থাকবে।


চাহিদা বাড়তে পারে ছোট অঙ্কের ব্যক্তিগত ঋণে
সুদের হার কমলে বেতনভোগী ও স্বনিযুক্ত ব্যক্তিদের মাঝে ব্যক্তিগত ঋণের চাহিদা বাড়তে পারে। বিশেষত যারা দ্রুত, সহজ এবং ডকুমেন্টেশন–হালকা ঋণ নিতে NBFC–র ওপর নির্ভর করেন, তাঁদের জন্য এটি আরও সুবিধাজনক হবে।


সুদের হার কমলে ভোক্তার আস্থা বাড়ে। ফলে স্বল্প অঙ্কের ও স্বল্পমেয়াদি ব্যক্তিগত ঋণের চাহিদা বাড়বে, কারণ মানুষের মাসিক বাজেটে কিছুটা স্বস্তি তৈরি হয়।


ইএমআই কমবে, পরিকল্পনা আরও সহজ হবে
MPC–র সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করতে চায়। এর ফলে ঋণগ্রহীতারা কম ইএমআই, সহজতর ঋণ গ্রহণ এবং ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনায় আরও আত্মবিশ্বাস পেতে পারেন। এই নীতিগত রোডম্যাপ আর্থিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেয়। ঋণগ্রহীতারা কম ইএমআই এবং সহজতর ঋণ পাওয়ার সুবিধা ভোগ করবেন।


সামগ্রিক দিকনির্দেশ: সস্তা ঋণের পথে বাজার
সব ঋণদাতা একই সময়ে সুদের হার কমাবে না। তবে সামগ্রিক প্রবণতা ইঙ্গিত দিচ্ছে—পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে ব্যক্তিগত ঋণের খরচ কমার সম্ভাবনা প্রবল। যাঁরা ব্যক্তিগত ঋণ নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য এটি হতে পারে একটি লাভজনক সময়।