আজকাল ওয়েবডেস্ক: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য মাসে মাত্র ৫,০০০ টাকার এসআইপি দিয়ে যাত্রা শুরু করাটা নিঃসন্দেহে একটি উৎসাহজনক পদক্ষেপ। কিন্তু “ডাইভার্সিফিকেশন”-এর ভুল বোঝাবুঝিতে অনেকেই প্রথম থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেন যা তাদের সম্পদ বৃদ্ধির পথকে জটিল করে তোলে। চার-পাঁচটি ভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ডে ছোট ছোট পরিমাণে টাকা ভাগ করা দেখতে যদিও বুদ্ধিদীপ্ত মনে হয়, বাস্তবে এই অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে বিভ্রান্তি, মানসিক চাপ এবং দুর্বল রিটার্নের দিকে ঠেলে দেয়।
ভুল নিরাপত্তা: বেশিরভাগ নবীন বিনিয়োগকারী একটি সাধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করেন—মাসিক ৫,০০০ টাকা বড়-ক্যাপ, মিড-ক্যাপ, স্মল-ক্যাপ, ফ্লেক্সি-ক্যাপ এবং একটি সেক্টোরাল ফান্ডে ভাগ করে দেন। মনে হয় বিভিন্ন ঝুঁকি সামলে চলা সম্ভব হবে। কিন্তু পরিণাম হয় এর ঠিক উল্টো।
স্ট্র্যাটেজি A: পুরো ৫,০০০ টাকা একটি ফ্লেক্সি-ক্যাপ ফান্ডে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরে ১২.২% হারে বেড়ে হয় প্রায় ১১.৬৫ লাখ টাকা।
স্ট্র্যাটেজি B: একই টাকা পাঁচটি ফান্ডে ভাগ করলে গড় রিটার্ন ১২.৪% হলেও চূড়ান্ত পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ১১.৬৮ লাখ।
অর্থাৎ, অতিরিক্ত ডাইভার্সিফিকেশন বাস্তবে প্রায় কোনওই বাড়তি সুবিধা দেয় না।
লুকিয়ে থাকা ক্ষতি: বেশিরভাগ নবীন বিনিয়োগকারী ৫,০০০ টাকা ভাগ করে ফেলে ভুল করে। এই ভুলের কারণে তাদের তিনগুণ বেশি ড্রপআউট রেট দেখা যায়।
মানসিক ওভারলোড
পাঁচটি ফান্ড মানে পাঁচ সেট কোয়ার্টারলি রিপোর্ট। একটিতে ১৫% রিটার্ন আর অন্যটিতে ৮% দিলে বিনিয়োগকারী অস্থির হয়ে পড়েন। ফান্ড বদলানো, এসআইপি বন্ধ করা—এসব ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন।
ট্র্যাকিংয়ের ঝামেলা
পাঁচটি ফান্ডের স্টেটমেন্ট, ড্যাশবোর্ড ও আপডেট সামলাতে গিয়ে বেশিরভাগই কয়েক মাসের মধ্যে বিশৃঙ্খলায় পড়ে যান। অনেকে নিজের ফান্ডের নামই ভুলে যান।
কোথায় ঘটে ভুল: প্রতি ফান্ডে ১,০০০ টাকা এসআইপি করলে তিন বছরে প্রতিটি ফান্ডে জমে মাত্র ৪১,০০০ টাকা। পাঁচটি ছোট পোর্টফোলিও বাস্তবে কোনো ব্যবস্থাপনাগত সুবিধা দেয় না। নতুন বিনিয়োগকারীরা পারফরম্যান্স জাজ করতেও পারেন না—৮% বনাম ১২% রিটার্ন দেখে ভুল সিদ্ধান্ত নেন, তার ফল ক্ষতি।
নবীনদের জন্য সেরা পথ: ছোট পরিমাণে বিনিয়োগ শুরু করলে জটিলতা নয়, সরলতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। এক বা দুটি ভালো ফান্ড দিয়ে শুরু করা, ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করা এবং দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকার সামর্থ্য অর্জন করাই হল স্মার্ট ইনভেস্টিং।
