আজকাল ওয়েবডেস্ক: টাকা জমানোর লক্ষ্যে মানুষ বিনিয়োগ করে। যাতে তাদের অবসরকালীন সময়টা ভাল কাটে। কিন্তু বিনিয়োগের সময় অনেকেই এমন কিছু ভুল করে বসেন, যার ফলে লক্ষ্য তো পূরণ হয়ই না, এমনকি অনেক সময় ক্ষতির মুখ দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের।
তথ্য বলছে সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে কোনও মিউচুয়াল ফান্ডে সাত বছরের রিটার্নও শূন্য হতে পারে। আর এই কারণেই কম সময়ের জন্য কোনও ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা একেবারেই ঠিক নয়। আবার যে ফান্ড সাত বছরে শূন্য রিটার্ন দিয়েছে, সেই ফান্ডের ১৪ বছরের অ্যাভারেজ রিটার্ন বার্ষিক ১১ থেকে ১২ শতাংশ। আর এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, একটা দীর্ঘ সময়ের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে।
খারাপ সময়ে যখন খুব বেশি রিটার্ন আসছে না তখন বিনিয়োগকারীর ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটতে পারে। আর সেই অবস্থায় বিনিয়োগকারী যদি টাকা তুলে নেন তাহলে সম্পূর্ণ ক্ষতির মুখে পড়বেন তিনি। ফলে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধৈর্য্য ধরে রাখা একটা জরুরি ব্যাপার।
আরও একটি তথ্য বলছে, কোনও আদর্শ বিনিয়োগে যদি ১২ শতাংশ করেও রিটার্ন দেয় তাহলে সাত বছর ধরে কেউ মাসিক ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে ১০ বছর পর তা গিয়ে দাঁড়াবে ১২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকায়। রিটার্ন সেখানে মাত্র ৪ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। এবার এই বিনিয়োগ যদি আরও সাত বছর চলে তাহলে ১৪ বছরে মোট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। রিটার্ন আসবে ২৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। আর যদি আরও সাত বছর বিনিয়োগ করা হয় তাহলে মোট বিনিয়োগ গিয়ে দাঁড়াবে ২৫ লক্ষ ২০ হাজারে। তাহলে ২১ বছর পর জমা আর রিটার্ন মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মতো পাবেন বিনিয়োগকারী।
হিসাব বলছে, প্রথম সাত বছরে মোট মূলধন যা দাঁড়িয়ে ছিল তাহলে ওই ১ কোটির ১২ শতাংশের কাছাকাছি। আর ১৪ বছর শেষে সেই অঙ্কটা হয়েছিল ৩৯ শতাংশ। কিন্তু শেষ সাত বছরে এই সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে প্রায় ৬১ শতাংশ। আর এখানেই আসে এসআইপির কম্পাউন্ডিংয়ের মূল্য।
এসআইপি মিউচুয়াল ফান্ডে সহজ বিনিয়োগের জন্য পরিচিত। অন্যদিকে, আরডি একটি সঞ্চয় প্রকল্প হিসেবে পরিচিত, যেখানে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমা করতে হয়। এসআইপি বা আরডি-তে বিনিয়োগ করা কোথায় বেশি বুদ্ধিমানের কাজ? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
এসআইপি-র সুবিধা:
সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি) মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের একটি খুব সহজ উপায়। এর সবচেয়ে ভাল দিক হল আপনি খুব কম দিয়ে শুরু করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি এসআইপি-এর মাধ্যমে মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। আপনি মাসিক বা ত্রৈমাসিক বিনিয়োগের বিকল্পটি বেছে নিতে পারেন। এসআইপি নিয়মিত বিনিয়োগের অভ্যাস গড়ে তোলে এবং চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের সুবিধাও দেয়। বেশিরভাগ মানুষ মাসিক এসাইপি পছন্দ করেন। আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী এসাইপি-র পরিমাণও বাড়াতে পারেন। ইএলএসএস মিউচুয়াল ফান্ডের এসআইপি-তে ৮০সি ধারার অধীনে কর ছাড়ও পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- এসআইপি নাকি রেকারিং ডিপোজিট, বিনিয়োগ থেকে সেরা রিটার্ন কোন প্রকল্পে? জানুন
এসআইপি-এর সীমাবদ্ধতা:
এসআইপি-রও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যা মনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসআইপিগুলি বাজারের ওঠানামার উপর নির্ভর করে এবং নিশ্চিৎ রিটার্ন নেই। এখানে প্রাপ্ত রিটার্ন বাজারের কর্মক্ষমতা এবং তহবিলের ধরণের উপর নির্ভর করে। এসআইপি-র আসল সুবিধা কেবল দীর্ঘমেয়াদে পাওয়া যায়। আপনি যদি স্বল্পমেয়াদে সুবিধা খুঁজছেন, তাহলে আপনি বেশি রিটার্ন নাও পেতে পারেন।
