আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে ইতিমধ্যেই সংশোধনাগারে কাটিয়ে দিয়েছেন ১৪ বছর। সেই সঙ্গে আচার-আচরণও সন্তোষজনক। পুরষ্কার হিসেবে তাই ৪৫ জনের জেলমুক্তি হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক ট্যুইটার) এই খবর জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

এক্স হ্যান্ডেলে তিনি জানান, “যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মানুষদের মধ্যে যাঁদের ইতিমধ্যেই ১৪ বছরের বেশি বন্দিদশা সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, তাঁদের অনেককেই আমাদের সরকার আইন মেনে মুক্তি দিয়েছে। ২০১১ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৮৪০ জন এরকম মানুষ ছাড়া পেয়েছেন। আরো ৪৫ জনকে আইনের পথে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আমি তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সকলকে আমার অভিনন্দন জানাই। আমি জেনেছি, বন্দিজীবনে এঁদের আচরণ ভালো ছিল। তারই স্বীকৃতি এই মুক্তি। সংশোধনাগারের কাজ অপরাধীদের মানসিকতার পরিবর্তন করে তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। আমি আশা করব, এই মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিরা তাঁদের নতুন ও মুক্ত জীবনে সুনাগরিক হয়ে উঠবেন- তাহলেই আমাদের এই প্রচেষ্টা সফল হবে।”

আরও পড়ুন: সাফল্যের দৌড়ে যুবসমাজ আক্রান্ত একাধিক রোগে, হৃদরোগে যাচ্ছে প্রাণ! সচেতনতায় পরামর্শ চিকিৎসক পূর্ণেন্দু রায়ের

এক দিকে যেমন একটি নির্দিষ্ট সময় সাজা ভোগ করার পর আচার আচরণ ভাল হওয়ার জন্য যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হয় পাশাপাশি মুক্তির পর যাতে সৎপথে থেকে তাঁরা রোজগার করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থাও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়। সম্প্রতি, খুনের মামলায় দীর্ঘ ৩৩ বছর কারাবাসের পর সুব্রত সরকার নামে এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিয়েছে রাজ্য। সেই সঙ্গে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি যাতে জীবনজীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সেজন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় তাঁকে একটি অটোরিক্সার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে রাজ্য কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে। এর জন্য তাঁকে একটি রুট পারমিটের ব্যবস্থাও রাজ্য পরিবহন দপ্তরের তরফ থেকে করে দেওয়া হয়েছে। যে রুটটি তাঁকে দেওয়া হয়েছে সেই রুটটি হল রাসবিহারী ক্রসিং থেকে বেহালা চৌরাস্তা পর্যন্ত। জীবনের এই নতুন পথে যেদিন তিনি গাড়ি চালানো শুরু করেন সেদিন পতাকা নেড়ে তাঁর যাত্রার সূচনা করেছিলেন কারা বিভাগ ও রাষ্ট্রায়ত্ত ওই ব্যাঙ্কটির আধিকারিকরা। 

?ref_src=twsrc%5Etfw">September 18, 2025

জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করার আগে ওই দিন সুব্রত বলেছিলেন, “জীবনের ৩৩টা বছর আমাকে জেলে থাকতে হয়েছে। আমার একটা বিশ্বাস ছিল একদিন না একদিন আমি বাইরে যাবই। সেই হিসেবে আমি সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম আমাকে যেন মুক্তি দিয়ে মূলস্রোতে জীবনযাপন করতে দেওয়া হয়। সরকার আমার আবেদন রক্ষা করেছে এবং আমাকে ছেড়েছে। আমিও সরকারের এই সহায়তাকে সম্মান জানাতে চাই এবং সুষ্ঠভাবে জীবনযাপন করতে চাই।” তাঁর আরও সংযোজন, “আজকে যারা সংশোধনাগারে আছেন এবং তাঁরা যখন ছাড়া পাবেন তখন তাঁরাও যেন সকলের সহযোগিতা নিয়ে মূলস্রোতে থেকে জীবনযাপন করতে পারেন। তাঁরা যেন অপরাধমূলক কোনও কার্যকলাপ না করেন যাতে পুনরায় সংশোধনাগারে যেতে হয়।”

এই বিষয়ে রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে সাজা শেষ হয়ে যাওয়ার পর যাঁরা সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে যাবেন তাঁরা যাতে আবার সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যেতে পারেন সেই বিষয়েও উদ্যোগ নিতে হবে। তারই অঙ্গ হিসেবে এই ব্যক্তিকে সহায়তা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সহায়তা অন্যদেরও করা হবে।