আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতা থেকে সড়কপথে দিঘা যাওয়ার রাস্তায় বড়সড় বিপর্যয়। দিঘা–নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কে মারিশদা থানা সংলগ্ন এলাকায় ভেঙে পড়ল একটি কালভার্ট। শনিবার দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ ঘটে এই দুর্ঘটনা। ফলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়কের যান চলাচল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা বৃষ্টির ফলে কালভার্টের নিচের নালায় জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যায়। প্রবল জলের চাপে দুর্বল হয়ে পড়ে কালভার্টের নিচের অংশ। শেষমেশ শনিবার দুপুরের দিকে একদম মাঝ বরাবর ভেঙে যায় ব্রিজটি। অত্যধিক বৃষ্টির কারণে জলের চাপে ব্রিজটি এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে বলে জানা গিয়ে ছে।
ঘটনার পরপরই দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। রাস্তায় আটকে পড়ে একাধিক যাত্রীবাহী বাস। পর্যটক বহনকারী গাড়ি, লরি ও প্রাইভেট কার, সবই আটকে যায়। উইকেন্ড হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। দিঘাগামী ও দীঘা থেকে ফেরত আসা হাজারের বেশি পর্যটক আটকে পড়েন চরম দুর্ভোগে।
আরও পড়ুন: ফাঁসিদেওয়ার তিস্তা ক্যানেলে ভেসে উঠল মৃতদেহ, ধসে মৃত্যু বলে সন্দেহ, খোঁজ পুলিশের
এই দুর্ঘটনার পর দিঘা থেকে কলকাতা বা কোলাঘাটমুখী গাড়িগুলিকে ঘুরপথে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। অনেক গাড়ি আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে স্থানীয় পুলিশের উদ্যোগে। যানজটে ঘণ্টা র পর ঘণ্টা আটকে পড়ে রয়েছে শতাধিক গাড়ি।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছে যায় মারিশদা থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এনএইচ কর্তৃপক্ষও ইতিমধ্যে বিকল্প অস্থায়ী রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছে। বিকেলের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ছোট গাড়ি চলাচলের পথ তৈরি করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে কালভার্ট সম্পূর্ণভাবে সংস্কার করতে সময় লাগবে কয়েকদিন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই কালভার্টের মেরামতির প্রয়োজন ছিল, কিন্তু কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অবশেষে অতিবৃষ্টির জেরে বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ল এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক। সন্ধ্যার মধ্যে যান চলাচলের আংশিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে বলে আশাবাদী এনএইচ কর্তৃপক্ষ। তবে পুরোপুরি রাস্তা চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।
যেহেতু শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে সে কারণে দিঘাগামী পর্যটকরা পড়েছেন বড় সমস্যায়। অনেকেই বলছেন, শনি ও রবি দু’দিন ছুটি কাটানোর জন্য তাঁরা রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কখন তাঁরা দিঘা গিয়ে পৌঁছবেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। বিশেষ করে যাদের সঙ্গে বাচ্চা আছে তাঁরা পড়েছেন বেশি দুশ্চিন্তায়। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পলাশ কর্মকার বলে হুগলির এক বাসিন্দা জানান, স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে দিঘা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে এখানে এসে বাকিদের সঙ্গে আটকে পড়েছেন। ছেলে যেহেতু ছোট, তাই দুশ্চিন্তা করছেন দিঘায় পৌঁছতে কত সময় লাগবে।
