মিল্টন সেন: শুধু মাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়েই থেমে থাকেনি রাজ্য। আরও একবার প্রতিশ্রুতি দ্রুত রূপায়ণ করে নজির গড়ল রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। শনিবার পরিবহণ মন্ত্রীর হাত ধরে রাজ্যে শুরু হল টোটো রেজিস্ট্রেশন। মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হাত থেকে শংসাপত্র পেলেন টোটো চালকরা। রাজ্যে যে টোটো রেজিস্ট্রেশন হবে তা সম্প্রতি ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
তার পরই গত ৯ অক্টোবর রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের তরফে সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। টোটো রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতা মূলক করার কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তার ঠিক ৯ দিনের মাথায় শুরু হয়ে গেল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। রেজিস্ট্রেশন করে শংসা পত্র তুলে দেওয়া হল টোটো চালকদের হাতে।
দিন মশাটে চন্ডিতলা ১ নম্বর বিডিও অফিসে এসে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, যে সমস্ত টোটো চালকরা এতদিন টোটো চালাচ্ছিলেন তাদের নানান জায়গায় নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হত। সরকার খুব সামান্য একটা অর্থের বিনিময়ে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
টোটো চালকদের সামাজিক সুরক্ষার মধ্যে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। এর ফলে টোটো চালক, এবং যাত্রী উভয়ই দুর্ঘটনাজনিত সুযোগ সুবিধা পাবেন। এছাড়াও চালকরা প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা পাবেন বলে জানা গিয়েছে।
পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি, ৩০ নভেম্বরের পর থেকে বিনা স্বীকৃতিতে যারা টোটোর ব্যবসা করেন, তারা অন্য কাজে মন দিন। কারণ ওই বেআইনি ব্যবসা আমরা করতে দেব না। সব বন্ধ করে দেব। কারণ একটা গাড়ি তৈরি করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স লাগে। আইক্যাড দ্বারা স্বীকৃত হতে হয়। না হলে গাড়ি তৈরি করা যায় না’।
তিনি আরও বলেন, ‘সমস্ত গাড়ি তৈরির কোম্পানিগুলি এটা মেনে চলে। আমাদের জেলাতেও কতগুলি ই-রিকশা তৈরির কারখানা আছে তারা সেটা মানছে। কিন্তু আমার গ্যারেজ বা লেদ আছে বলে গাড়ি বানিয়ে ফেললাম। সেটা রাস্তায় চললো। সেটা আর করতে দেওয়া হবে না। যারা টোটো কিনেছে তাদের দোষ নেই। কারণ তারা জীবন জীবিকার জন্য কিনেছে। তবে অবৈধ ভাবে যারা তৈরি করছে, তাদের অবৈধ ব্যবসাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর এটা বন্ধ হলে আর কেউ কিনতে পারবে না অবৈধ টোটো। যার ফলে নতুন করে আর অবৈধ টোটো সংখ্যা আর বাড়বে না। এখন যে গুলো চলছে সে গুলো পরিবহণ দপ্তরের তরফে স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন আরটিও অফিস এবং বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি থেকে এই টোটো রেজিস্ট্রেশন এর ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি আরও জানান, মাত্র ১৭৪০ টাকা দিলে আগামী এক বছর আর কোনও খরচ নেই। টোটোতে লাগানো থাকবে কিউআর কোড। সেই কিউ আর কোড স্ক্যান করলেই টোটোর সব তথ্য পাওয়া যাবে। টোটোর রেজিস্ট্রেশন হওয়াতে টোটো চালকরা খুশি।
ভবিষ্যতের সুরক্ষার কথা ভেবে টোটো রেজিস্ট্রেশনে এগিয়ে এসেছেন টোটো চালকরা। উল্লেখ্য, এদিন টোটো চালকদের হাতে রেজিস্ট্রেশনের শংসাপত্র, একটি চাবির রেপ্লিকা, টোটোর নম্বর আর কিউআর কোড তুলে দেন পরিবহণ মন্ত্রী নিজেই।
ছবি: পার্থ রাহা
