আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার জানা গিয়েছিল, ধনেখালি থানার পূর্ব বনপুরের সন্তু সোরেনের স্ত্রী আশা সোরেন (২৮) ছ'বছরের মেয়ে মানিকা সোরেন'কে বিষ খাইয়ে , নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। পরিবারের অভিযোগ ছিল, আসআইআর আতঙ্কে, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তিনি। দু'জনকেই শারীরিক পরিস্থিতি বিচারে রেফার করা হয়েছিল, কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সোমবার জানা গেল, মৃত্যু হয়েছে আশা সোরেনের। তবে তাঁর ছ'বছরের মেয়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে।
পারিবারিক বিবাদের কারণে তিনি গত পাঁচ বছর ধরে বাপের বাড়িতেই ছিলেন আশা। সম্প্রতি এসআইআর প্রসঙ্গে ব্যাপক আতঙ্কে ভুগছিলেন। তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যদের কাছে এসআইআর ফর্ম পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু সেখানে তাঁর ফর্ম নেই। অন্যদিকে, শ্বশুর বাড়িতে এসআইআর ফর্ম যাওয়ার কথা, অথচ তিনি থাকছেন বাবার বাড়িতে। কী হতে পারে পরিণাম, নানা প্রশ্নে তিনি জর্জরিত ছিলেন। হতাশায় ভুগছিলেন বলেও অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিবারের অভিযোগ, হতাশা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। খবর পেয়েই ওই গৃহবধুর পরিবারের কাছে হাজির হন স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্র।
মা-মেয়ে দু'জনকেই প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল স্থানীয় হাসপাতালে, পরে শারীরিক পরিস্থিতি বিচারে মা-মেয়েকে রেফার করা হয় এসএসকেএম'এ। রবিবারেই অভিষেক ব্যানার্জির দপ্তর আশার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরিবারকে সমস্ত রকম সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হল না আশার।
গত কয়েকদিনে, এই আতঙ্কের জেরেই চরম পদক্ষেপ বেছে নিয়েছেন একের পর এক মানুষ, অভিযোগ তেমনটাই। ঘটনায় একেবারে শুরুর দিন থেকে সুর চড়াচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। একই সঙ্গে আশ্বাস, যে কোনও পরিস্থিতিতে, রাজ্যের সকল মানুষের সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি, দু'জনেই বারে বারে তীব্র ভাষায় জানিয়েছেন একজন বৈধ ভোটারেরও নাম বাদ গেলে, মেনে নেবেন না তাঁরা।
অভিষেক ব্যানার্জি এর আগেই দলের নেতা কর্মীদের বার্তা দিয়েছিলেন মানুষ যেন বুঝতে পারেন একমাত্র তৃণমূলই তাঁদের পাশে আছে। সেই কর্মসূচিতে যাতে কোনও খামতি না থাকে সে জন্য উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) চলাকালীন সব কাজ দেখার জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করলেন তিনি। সেই দলে থাকবেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
কী হবে সেই দলের কাজ? তৃণমূল সূত্রে খবর, এই নেতারা এসআইআর উদ্বেগের কারণে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন এবং কথা বলবেন। অভিষেকের নির্দেশ, এই নেতৃত্বকে সব সময় ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এর পাশাপাশি সব রকম সাহায্য করতে হবে। ৮ নভেম্বর শনিবার থেকেই ওই দলের সদস্যরা যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের বাড়ি যাচ্ছেন।
