আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক আদিবাসী মহিলাকে তিন দিন আটক করে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার অন্তর্গত শাহজাদপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্য-সহ মোট দু'জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের নাম রাজিবুল শেখ ওরফে রাজিব এবং ইমামুল শেখ। ধৃতদের বাড়ি বহরমপুর থানার অন্তর্গত নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। ধৃত ইমামুল শেখ বর্তমানে শাহজাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বলে জানা গিয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সে শাহজাদপুর পঞ্চায়েতের নির্দল প্রতীকে জয়ী হয়। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে শুক্রবার তাদের বহরমপুর আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, গত বুধবার রাতে এক আদিবাসী মহিলা লিখিত অভিযোগ করে জানান তাঁকে তিন দিন ধরে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল এবং দুই ব্যক্তি তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এই অভিযোগের তদন্ত করতে নেমে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ধর্ষণের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজিবুল এবং ইমামুলকে তাদের বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা মহিলার মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে নির্যাতিতা মহিলা জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে তিনি যখন খাগড়াঘাট এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় রাতের অন্ধকারে রাজিবুল এবং ইমামুল তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর নিশ্চিন্তপুরে একটি বাড়ির মধ্যে তাঁকে টানা তিনদিন আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মহিলা জানিয়েছেন আটক থাকা অবস্থায় রাজিবুল এবং ইমামুল তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। গত ১৭ তারিখ রাতে ওই মহিলা কোনওভাবে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহজাদপুর পঞ্চায়েতের সদস্য ইমামুল শেখের বাড়ি জিবন্তি হল্ট এলাকায়। তার পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও কন্যারা রয়েছেন। ইতিমধ্যেই ইমামুলের দুই কন্যার বিয়ে হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ইমামুল এবং রাজিব দু'জনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে এলাকায় পরিচিত এবং তাদের দু'জনেরই ছোটখাটো ব্যবসা রয়েছে।।
পঞ্চায়েত সদস্যের গণধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা নিশ্চিন্তপুর গ্রাম জুড়ে।
শাহজাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ইনজামামুল হক বলেন,"আমাদের পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ২২ জন , তাঁর মধ্যে ১৫ জন সদস্য তৃণমূলের। এক আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তি আমাদের পঞ্চায়েতের সদস্য কিন্তু তার সঙ্গে তৃণমূল দলের কোনও যোগ নেই।"
পঞ্চায়েত প্রধান বলেন,"গোটা ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। বৃহস্পতিবার রাতে আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। ওই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনায় আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।"
