আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা খুনের মূল অভিযুক্ত সুজল সাউকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সোমবার ভোররাতে ভিনরাজ্য থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সঙ্গে ওই খুনে জড়িত আরও এক দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে তৃণমূল নেতা অশোক সাউ খুনের ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত বুধবার সকালে ভাটপাড়ার ৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন তৃণমূল নেতা অশোক সাউ। তিনি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের দলের প্রাক্তন সভাপতি। অশোকবাবু দোকানে তখন চা খাচ্ছিলেন। দুষ্কৃতীরা অতর্কিত সেখানে হামলা চালায়। অশোকবাবুকে লক্ষ্য করে তারা পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। দুষ্কৃতীদের গুলি তাঁর পেটে লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি দোকানের মধ্যে লুটিয়ে পড়েন। তারপর দুষ্কৃতীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এলোপাথাড়ি বোমাবাজি করতে করতে চম্পট দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি অশোক বাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ঘটনার তদন্তে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সিট গঠন করে। সিটের দায়িত্বে রয়েছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাস।
সিটের আধিকারিকরা ঘটনার তদন্ত নেমে জানতে পারে, ২০২০ সালে ভাটপাড়ার পালঘাট রোডে আকাশ সাউ নামে এক সমাজবিরোধীকে পিটিয়ে মারা হয়। সে ছিল মাদক পাচারের চাঁই। তার বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি ও রাহাজানি-সহ আরও বেশ কিছু অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন তৃণমূল নেতা অশোক। অভিযোগ, দাদার খুনের বদলা নিতে নিহত আকাশের দাদা সুজল সাউ ২০২৩ সালে অশোককে একবার খুনের চেষ্টা করে। যদিও বরাত জোরে সেবার তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুজল অশোকের পিছু ছাড়েনি। বুধবার অশোক চায়ের দোকানে বসেছিলেন। দুষ্কৃতীরা সেখানে গিয়ে তাঁকে গুলি করে খুন করে। নিহত অশোকের পরিবারের পক্ষ থেকে জগদ্দল থানায় সুজল-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। ঘটনার তদন্ত নেমে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ কাউসার আলিকে গ্রেপ্তার করে। কাউসারকে জেরা করে পুলিশ তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় সুজন পাশোয়ানের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে। শনিবার ভোররাতে টিটাগড়ের একটি গোপন ডেরা থেকে পুলিশ সুজনকে গ্রেফতার করে।
ধৃত কাউসার ও সুজনকে জেরা করে পুলিশ তৃণমূল নেতা খুনের মূল অভিযুক্ত সুজল সাউয়ের অবস্থান জানতে পারে। রাজ্য পুলিশের এডিজি সিআইডি বিশাল গর্গ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে মূল অভিযুক্ত সুজল সাউকে ধরতে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়। সেইমতো সোমবার ভোররাতে ভিনরাজ্যের গোপন ডেরা থেকে সুজলকে পুলিশ পাকড়াও করে। এদিন দুপুরেই তাদের ব্যারাকপুর মহাকুমা আদালতে তোলা হয়।
