আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিনে দুপুরে ভয়ঙ্কর ঘটনা। চলল গুলি, রক্তারক্তি কাণ্ড। আতঙ্কে কাঁপছে গোটা এলাকা। ঘটনাস্থল কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়া। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে, আচমকা কলেজ ছাত্রী যুবতীর বাড়িতে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় একজন। মুহূর্তে রক্তে ভেসে যায় চারদিক। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃত্যু হয়েছে যুবতীর।
আচমকা কে ঘটাল এই ঘটনা? কারণ কী? একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠে আসছে ঘটনায়। প্রাথমিকভাবে গুলি চালানোর ঘটনায় মনে করা হচ্ছে, যে এই গুলি চালিয়েছে, সে ওই কলেজ ছাত্রী যুবতীর পূর্বপরিচিত।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর ২:০০ থেকে ২:৩০-এর মধ্যে কৃষ্ণনগর শহরের মানিকপাড়া এলাকায় ঘটে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মল্লিকের কন্যা, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের ছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে (১৮) তাঁর নিজের বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে এক যুবক।
আরও পড়ুন: কালো করে এল আকাশ, ২ ঘণ্টায় ৩ জেলায় ঝেঁপে বৃষ্টি, সঙ্গে বইবে ঝড়! আবহাওয়ার
জানা গিয়েছে, ঈশিতা মল্লিক কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের ছাত্রী ছিলেন। অভিযুক্ত দেবরাজ সিংয়ের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়া এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়াশোনার সময় কাঁচরাপাড়ায় থাকতেন ঈশিতা। সেখানেই তাঁর পরিচয় দেবরাজের সঙ্গে। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর ধরে দু'জনের মধ্যে ভাল সম্পর্ক ছিল। তবে সম্প্রতি ঈশিতা দেবরাজের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরিবারের দাবি, এরপর থেকেই দেবরাজ তাঁকে বারবার ফোনে হুমকি দিচ্ছিলেন এবং জোর করে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছিলেন। সোমবার দুপুরে দেবরাজ একটি দেশি বন্দুক নিয়ে আচমকা ঈশিতাদের বাড়িতে ঢোকে্ন। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন শুধু ঈশিতার ঠাকুমা ও ঠাকুরদাদা। বাবা কর্মসূত্রে বাইরে, আর মা ছোট ভাইকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। এই সুযোগেই বাড়িতে ঢোকেন দেবরাজ।
ঈশিতা স্নান সেরে ঘরে ঢুকছিলেন। সেই মুহূর্তে একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁকে গুলি করেন দেবরাজ। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন ঈশিতা। গুলির শব্দে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দেবরাজ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। ঠিক সেই সময় ঈশিতার মা বাড়ি ফিরে এসে দেবরাজকে আটকাতে গেলে সে বন্দুক দেখিয়ে পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন, এত বড় ঘটনা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটল তা দেখে হতবাক সকলেই। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিল্পী পাল ঘটনা প্রসঙ্গে প্রথমে জানিয়েছিলেন, যুবকটি ঈশিতার পূর্ব পরিচিত ছিল। সম্পর্কে অবনতি হওয়ার কারণেই তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় এবং তারই জেরে এমনটা ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে । একজনকে আটক করা হয়েছে যেহেতু পরিবার এই ঘটনায় যথেষ্ট ব্যস্ততা রয়েছে তাদের তরফ থেকে চিহ্নিত করলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোল উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দেবরাজের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির জন্য ঈশিতার পরিবারের সদস্য এবং পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পেছনে আসল কারণ ও খুনের উদ্দেশ্য জানতে পুলিশ আরও তদন্ত চালাচ্ছে।
