আজকাল ওয়েবডেস্ক: বহরমপুর থানার অন্তর্গত ফাঁসিতলা এলাকায় একটি জন্মদিনের পার্টি চলাকালীন গুলি চালনার ঘটনায় আহত হলেন এক যুবক। জন্মদিনের পার্টিতে সংঘর্ষ এবং গুলি চালনার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত দু'দিনে বহরমপুর থানার পুলিশ মোট ১৪ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানা গিয়েছে গুলি চালনার ঘটনায় আহত যুবক, সৌরভ রায় (২৫) বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং বলেন,"গত ১৫ অক্টোবর রাত সাড়ে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ফাঁসিতলা এলাকায় একটি গোডাউনে জনৈক মধুসূদন রায় নামে এক ব্যক্তির জন্মদিনের পার্টি চলাকালীন একটি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বহরমপুর থানায় একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।"
তিনি বলেন, "মুর্শিদাবাদ পুলিশ কোথাও কোনও ধরণের গুন্ডামি বরদাস্ত করবে না। গত দু'দিন বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ধৃতরা সকলেই একটি গাংয়ের সদস্য এবং ঘটনার দিন সকলেই ওই জন্মদিনের পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন।"
পুলিশ সূত্রের খবর ধৃতদের সকলের বাড়ি মুর্শিদাবাদ থানার অন্তর্গত আমানীগঞ্জ এলাকায়। গুলি চালনার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুষ্কৃতীদের সকলের বয়স ১৯-৩৫ বছরের মধ্যে। ধৃতদের মধ্যে একাধিক জনের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মধুসূদন রায়ের জন্মদিনের পার্টিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০ - ৩০ জন জড়ো হয়েছিলেন। পার্টি চলাকালীন আমন্ত্রিতদের মধ্যে কোনও বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। ওই গণ্ডগোলের মধ্যেই সৌরভ রায় নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন দাবি করেছেন, একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সৌরভ একজনকে গুলি করতে গিয়েছিলেন। হাতাহাতির মধ্যে সেই বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে সৌরভের নিজের পায়ে লাগে।
বহরমপুর থানার এক আধিকারিক বলেন, "মধুসূদন রায়ের বিরুদ্ধে জেলার একাধিক থানায় প্রচুর গুরুতর অভিযোগ জমা রয়েছে। একসময় তার নাম বহরমপুর থানার 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় ছিল। বহরমপুর শহরে একাধিক রাজনৈতিক নেতার উপর হামলার ঘটনায় তার নামও জড়িয়েছে।" পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মদিনের পার্টিতে গুলি চালানোর ঘটনার পর থেকে মধুসূদন রায়ের কোনও খোঁজ মিলছে না। এর পাশাপাশি যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালানো হয়েছিল সেটিও এখনও উদ্ধার হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
বহরমপুরের কংগ্রেস নেতা হীরু হালদার বলেন,' বহরমপুর একটি শান্ত শহর। কিন্তু এখানে গুলি চালানোর ঘটনা এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিছুদিন আগে শ্মশান ঘাট এলাকাতেও এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।'
তিনি বলেন,'আমার বিশ্বাস প্রশাসন জানে এই গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িয়ে রয়েছে। আমরা দাবি রাখবো তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়।'
বিজেপি নেতা শাঁখারভ সরকার বলেন,'আমরা জানতে চাই যে ব্যক্তির জন্মদিনে গুলি চলেছিল তিনি শহরের এক যুব তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ কি না।'
বহরমপুর টাউন যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পাপাই ঘোষ বলেন," যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তারা কেউই বহরমপুর পুরসভা,লোকসভা বা বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা নন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আগে তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে এই ঘটনাকে নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।"
