মিল্টন সেন, হুগলি ২ আগস্ট: মাত্র দু’দিনের মধ্যেই তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার কিনারা করল চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। দীর্ঘ সময় পর আবার উঠে এল কুখ্যাত বাঘার নাম। কানাইপুরের তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু চক্রবর্তী খুনের ঘটনায় চার দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, বেলঘড়িয়া এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে কোন্নগর কানাইপুরের এক পরিচিত দুষ্কৃতীর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও দুই দুষ্কৃতীকে। যাদের সুপারি দেওয়া হয়েছিল।
গত বুধবার সন্ধেয় কানাইপুর অটো স্ট্যান্ডের কাছে নিজের গ্যাসের অফিসের সামনে খুন হন পিন্টু চক্রবর্তী। নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পিন্টু চক্রবর্তীকে।
সেই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তৃণমূল নেতার ব্যবসায়িক পার্টনার কানাইপুর এলাকার এক ব্যবসায়ীকেও আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সৃষ্টি হওয়া জটিলতার কারণেই এই খুন। এই অপরাধের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে চন্দননগর কমিশনারেটের তদন্তকারী পুলিশ।
এদিকে, এই ঘটনায় কানাইপুরে আবারও উঠে এল কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাঘার নাম। কানাইপুর তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য খুনের ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। শনিবার সকালে তিন দুষ্কৃতীকে বারাসত, বেলঘড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একদা কোন্নগড়ের কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাঘার ভাই বিশা’কে। সঙ্গে ছিল আরও দুই দুষ্কৃতী। যারা প্রত্যক্ষ ভাবে গোটা ঘটনা ঘটিয়েছে। আরও অনেকে জড়িত আছে বলেই সূত্রের খবর। বাকিরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবে। এমনই পুলিশ সূত্রের খবর। এই ঘটনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে কানাইপুর এলাকার এক ব্যবসায়ী তাপস সরকার (ছোটু) কে আটক করেছে পুলিশ। ডানকুনি জমি সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই খুন বলে পুলিশের অনুমান।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভর সন্ধেয় প্রকাশ্যে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। গুরুতর জখম ওই তৃণমূল নেতাকে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: ওভালে বারবার আম্পায়ারের সঙ্গে বিতর্ক, ধর্মসেনার কথায় কর্ণপাতই করলেন না ইংরেজ অধিনায়ক
নিহত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না। কানাইপুর অটোস্ট্যান্ডে তাঁর গ্যাসের অফিস রয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো বুধবার অফিস থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, হঠাৎই দুষ্কৃতীরা তাঁর উপর চড়াও হয়। তাদের কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। ক্ষতবিক্ষত শরীরে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা। হতচকিত হয়ে যান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদিকে, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
খবর পেয়ে কানাইপুর ফাঁড়ি এবং উত্তরপাড়া থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে যান ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাসও। ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে প্রথমে কানাইপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তীর। এই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল চার জনকে।
