আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়িতে মোবাইল টাওয়ার বসালে পাবেন কোটি টাকা। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে এমনই প্রলোভন দেওয়া হয়েছিল। সেই ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হল কৃষক পরিবার। খোয়া গিয়েছে নয় লক্ষ টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাড়োয়ার মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল পেশায় কৃষক। মাঠে তাঁর কয়েক বিঘা চাষের জমি আছে। গত আগস্ট মাসে তাঁর মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে মহিলা কণ্ঠে বলা হয়, জমিতে ফাইভ-জি মোবাইল টাওয়ার বসাতে দিলে এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকার কথা শুনে প্রশান্তবাবু প্রথমে বিশ্বাস করেননি। পরে তাঁকে আরও কয়েকবার ফোনে কল করা হয়। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে অবশেষে তিনি মোবাইল টাওয়ার বসাতে সম্মত হন। দিন কয়েকের মধ্যে প্রশান্তবাবুর মোবাইলে কেন্দ্রীয় সরকারের টেলিকম মন্ত্রকের লোগো লাগানো কাগজপত্র পাঠানো হয়। তারপর বলা হয়, কয়েকটি শংসাপত্র তৈরি করতে তাঁকে বেশ কিছু টাকা দিতে হবে। এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার আশায় তিনি ধাপে ধাপে সেই টাকা দিয়েছেন।
জমি ও স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে সব মিলিয়ে তিনি প্রায় নয় লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তারপর তাঁকে এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকার একটি চেক পাঠানো হয়। ব্যাংকে যাওয়ার পর প্রশান্তবাবু জানতে পারেন, তাঁকে ভুয়ো চেক দেওয়া হয়েছে। তারপর আগের নম্বরগুলোতে ফোন করলে তিনি তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। তখন তিনি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। প্রশান্তবাবু বলেন, 'মোবাইল টাওয়ার বসালে এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে আমাকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। অনেক টাকা একসঙ্গে পাব ভেবে আমি জমি ও স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ধাপে ধাপে নয় লক্ষ টাকা দিয়েছি। পরে আমাকে একটি ভুয়ো চেক দিয়ে প্রতারকরা আমাকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে।'
অবশেষে টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় প্রশান্তবাবু হাড়োয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি বসিরহাটে পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখাতেও তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বসিরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোবাইল টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রতারণার ঘটনা নতুন কিছু নয়। আগেও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে প্রতারণা চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অচেনা নম্বর থেকে কোন প্রলোভন দেওয়া হলে পুলিশকে জানানোর কথা বলা হয়েছে।
