আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাকে ভরসা করে ডাকত কাকা বলে, তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ। ঘটনায় আতঙ্কে গোটা আবাসনের বাসিন্দারা। কিছুই বুঝে উঠছে পারছে না ওই নাবালিকার সমবয়সীয়া। নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ। ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত। ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদ। মুর্শিদাবাদ জেলার বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসকের ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া কন্যাকে 'যৌন নির্যাতন'-এর অভিযোগে গ্রেপ্তার বহরমপুর শহরের একটি নামজাদা আবাসনের এক নিরাপত্তারক্ষী। 
 
 ওই চিকিৎসকের তরফ থেকে দায়ের হওয়া  লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে  শনিবার রাতেই   বহরমপুর শহর এবং সংলগ্ন এলাকায়  অভিযান চালায় পুলিশ। হরিদাসমাটি সংলগ্ন একটি এলাকা থেকে সুজয় দত্ত নামে (৪০) নামে অভিযুক্ত ওই নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে আচমকা কলকাতা বিমানবন্দর ঘিরে ফেলল এনএসজি কমান্ডোরা! সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা?
 
 বহরমপুর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃত নিরাপত্তারক্ষী সুজয় দত্তের বিরুদ্ধে বিএনএস-এর ৬৫ (১)ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে। 
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন একটি নামজাদা আবাসনের বাসিন্দা ওই চিকিৎসক। অভিযুক্ত সুজয় দত্ত ওই আবাসনে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন চিকিৎসক।
বহরমপুর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ, শনিবার বিকাল নাগাদ অভিযুক্ত ওই নিরাপত্তারক্ষী বহরমপুর শহরের একটি নামি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়া ডাক্তার কন্যাকে নিয়ে আবাসনের ছাদে যান।
 
 অভিযোগ ওই নিরাপত্তারক্ষী  ছাত্রীটিকে বলেছিলেন আবাসনের ছাদ থেকে বহরমপুর শহরের খুব সুন্দর 'ভিউ' পাওয়া যায়। সে নিজের মোবাইল ফোনে  ছবি তুলে  সকলকে তাক লাগিয়ে দিতে পারবে। এর পাশাপাশি আরও অভিযোগ উঠেছে ওই নিরাপত্তারক্ষী  ছাত্রীটিকে বলেছিলেন আবাসনের ছাদের বাগানে প্রচুর ফুল ফুটেছে। ভাল ছবি তোলার পাশাপ্সহি সুন্দর ফুল দেখানোর প্রলোভন দেখিয়েছিলেন।

ওই আবাসনের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সুজয় দত্ত নামে ওই নিরাপত্তারক্ষীকে আবাসনের একাধিক ছোট ছোট শিশু ভালবাসে, কাকা বলেই সম্বোধন করে এসেছে এতদিন। সূত্রের খবর, ওই নাবালিকা ছাত্রী 'কাকা'র কথায় বিশ্বাস করে ছাদের বাগানে ফুল দেখার জন্যই গিয়েছিল। সেখানে ওই নিরাপত্তারক্ষী ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়ার উপর যৌন নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ ।
বহরমপুর থানার ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, হরিদাসমাটি এলাকার বাসিন্দা ওই নিরাপত্তারক্ষী এই ঘটনাটির পর দ্রুত আবাসন ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশের একটি বিশেষ দল বিভিন্ন জায়গায় হানা দিতে শুরু করে। অভিযোগ, পুলিশ দেখে টোটো করে সেই জায়গা থেকে পালাতে উদ্যত হয়েছিলেন অভিযুক্ত। তবে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে।
মুর্শিদাবাদের ষষ্ট শ্রেণির পড়ুয়ার ঘটনা মন পরাচ্ছে প্রায় দু’ দশকের বেশি সময় আগে ঘটে যাওয়া হেতাল পারেখের ঘটনা। কলকাতার হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক সময়ে উত্তাল হয়েছিল শহর। হেতালের মৃত্যুতে তারই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী ধনঞ্জয়ের ফাঁসি হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রায় ১৪ বছর কারাবাসের পর আদালতের নির্দেশে ২০০৪ সালের ১৪ আগষ্ট ফাঁসি দেওয়া হয় ধনঞ্জয়কে। যদিও ধনঞ্জয়ের এয়াকার মানুষজন ফাঁসির দু’ দশক পরেও দাবি করেন, ধনঞ্জয় নির্দোষ ছিলেন।
