মিল্টন সেন, হুগলি: রেল অবরোধকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার রেল স্টেশন। পুলিশকে লক্ষ করে অবরোধকারীদের ইট পাথর। লাঠি চার্জ করে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। আহত একাধিক পুলিশ কর্মী। ভোগান্তি নিত্য যাত্রীদের। বুধবার বেলা ১১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মানকুণ্ডু রেল স্টেশনে।
এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় রেল অবরোধে সামিল হয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। মানকুন্ডু স্টেশনের আপ এবং ডাউন দুটি লাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। অবরোধের জেরে দুটি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে লোকাল ট্রেন। কেটে যায় প্রায় দু ঘণ্টা। অফিস টাইমে রেল অবরোধ হওয়ার ফলে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। ট্রেনের যাত্রী অজয় মল্লিক বলেন, তিনি সকাল সাড়ে আটটা থেকে তিনি ট্রেনে। অফিস টাইমে রেল অবরোধ হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার তিনি। তার মতো অনেকেই ওই ট্রেনে আটকে রয়েছেন।
চিকিৎসার জন্য কলকাতা যাচ্ছিলেন পিঙ্কি ঘোষ। রেল অবরোধের জেরে তিনিও আটকে পড়েছেন। পিঙ্কি বলেছেন, সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। হাড় ও চোখের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিলেন। চোখে অসম্ভব যন্ত্রণা হচ্ছে। ডাক্তার দেখাতে তিনি নবদ্বীপ থেকে কলকাতা যাচ্ছিলেন। এমন হবে বুঝতে পারেননি। এদিন সকাল থেকে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ট্রেন অবরোধ ছাড়া হাওড়া বর্ধমান মেন শাখায় ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
কিন্তু বেলা একটু গড়াতেই মানকুন্ডু স্টেশনে অবরোধ শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। পরে বিজেপির দলীয় পতাকা সরিয়ে দিয়ে জাতীয় পতাকা ট্রেনের সামনে লাগিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি। হাজির হয় বিশাল পুলিশবাহিনী র্যাফ। পৌঁছন ডিসি চন্দননগর অলকানন্দা ভাওয়াল। অবরোধকারীদের অবরোধ তোলার আহ্বান জানানো হয়। অবরোধ তুলতে অস্বীকার করে অবরোধকারীরা। বাধ্য হয়ে অবরোধকারীদের হাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল, পাথর ছুড়তে শুরু করে অবরোধকারীরা। ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ইট পাথরের আক্রমণ আরও তীব্র হতে থাকে। কাজ না হওয়ায় লাঠি চার্জ করে। পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কার্যত খন্ডযুদ্ধ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকেরা। অবরোধকারীদের হটিয়ে দেওয়ার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ইটের আঘাতে একাধিক পুলিশ কর্মী এবং আধিকারিক গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনায় ১৫ জন অবরোধকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ছবি পার্থ রাহা।
