আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার জিএসটি কমানো নিয়ে মোদির ভাষণের পরেই প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন কেন্দ্রকে একহাত নিলেন অভিষেকও। কেন্দ্রের জিএসটি ঘোষণা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে রীতিমতো বিদ্রুপ করে অভিষেক বললেন, ‘হীরেতে জিএসটি নেই, অথচ জিরে, হাতা, পেন সবেতেই জিএসটি!’ তৃণমূল সুপ্রিমোর সুরেই জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধলেন তিনি। জানালেন, প্রবল চাপে পড়েই জিএসটি কমিয়েছে কেন্দ্র। এদিন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলায় দুর্গাপুজোর গাইড ম্যাপ উদ্বোধন করতে এসেছিলেন তিনি। শনিবার সভা মঞ্চ থেকে অভিষেকের সাফ অভিযোগ, ‘মোদিজি বলছেন, জিএসটি-তে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করি, তাহলে কি ২০১৭ থেকে ৮ বছর ধরে দেশে জিএসটি লুট উৎসব চলেছে? এটা যে চাপে পড়ে করা হয়েছে, সেটা একেবারে স্পষ্ট। ৩০৩ থেকে ২৪০ আসনে নেমে এসেছে বিজেপি, তাই জিএসটিও ২৭ থেকে ১৮ শতাংশে নামাতে বাধ্য হয়েছে। এর থেকেই পরিষ্কার, বিজেপি হারলে ট্যাক্স কমে, জিতলে বাড়ে।
জিএসটি ছাড় নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমি আপনাদের বলছি, জিএসটি আরও কমবে। মানুষের কথা ভাবলে আরও আগে কমাতে পারত। কিন্তু ওরা ভাবছিল, ধর্ম দিয়ে দেশ চালাবে। এখন সে খেলাও বন্ধ। তাই অযোধ্যাতেও হেরেছে।’ তিনি আরও বলেন ২০২৬ এর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এই জিএসটি বিল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। বিগত এক দশকের কেন্দ্রীয় শাসন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিষেকের কটাক্ষ, ‘এদের অবস্থা হল ঠ্যালায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। গত ১০ বছরে দেশকে রসাতলে ঠেলে দিয়েছে। জিএসটি আদায়ের পর বিরোধী রাজ্যগুলোর টাকা আটকে রাখা বিজেপির পুরনো অভ্যাস। মানুষই এর জবাব দেবে।’ রাজ্যের বঞ্চনা নিয়েও এদিন কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ।
তাঁর বক্তব্য, ‘বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করছি, বাংলা থেকে কত টাকা নিয়েছেন, আর বিনিময়ে বাংলাকে কত টাকা ফিরিয়েছেন? ১০০ দিনের কাজের টাকা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও দেয়নি। উল্টে কোর্টে গিয়ে টালবাহানা করছে। প্রধানমন্ত্রী চান না, বাংলার ৬৯ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজে তাঁদের প্রাপ্য টাকা পান, চান না গরিবরা পুজোয় জামা কিনতে পারেন।’ উল্লেখ্য, মহালয়ার দিনে শহর এবং জেলার একাধিক দুর্গাপুজো উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনের মঞ্চ থেকেই তিনি বলেন, ‘জিএসটির কৃতিত্ব রাজ্যের। ভাষণ দেওয়া ছাড়া কেন্দ্রের কোনও অবদান নেই’। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কাটল টাকা আমাদের, প্রচার হচ্ছে ওঁদের’। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের টাকা বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। সেই টাকা এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, রবিবার সেলিমপুর পল্লী দিয়ে শহরের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি বাবুবাগান, বান্ধব সম্মিলনী, যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লী-সহ কলকাতার একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেন। অন্যদিকে, ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন জেলার বিভিন্ন পুজোরও। সেখান থেকেই তিনি ক্ষোভ উগরে দেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।
