আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিঘায় জগন্নাথদেবের মন্দিরের সিকিউরিটি গার্ড-এর চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি। অভিযোগ অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এই দুই প্রতারকের ফাঁদে পড়ে ইতিমধ্যেই চাকরিপ্রার্থী বহু যুবক লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়া এই মামলায় দুই অভিযুক্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগড়া থানার বাসিন্দা স্নেহাশিস কুমার এবং রামনগর থানার বড়ংকুয়া গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ বেরা। ধৃতদের কাঁথির আদালতে পেশ করা হয়েছে। দু'জনকেই আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে চাইবে এই প্রতারণার জাল কতদূর বিস্তৃত এবং আরও কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত আছে। পুলিশের তরফে গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশের একটি সূত্র এবিষয়ে জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে তাঁদের কাছে আসা খবর অনুযায়ী, জগন্নাথদেবের মন্দির তৈরি হওয়ার পরেই এই দুই অভিযুক্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। তৈরি করে মন্দিরে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের জন্য একটি ভুয়ো নিয়োগ সংস্থা। এদের ফাঁদে পা দিয়ে চাকরি সন্ধানী অনেক যুবকই এগিয়ে আসেন। এরা জানায়, চাকরি পেতে গেলে টাকা দিতে হবে। অনেকেই রাজি হয়ে যান। এদের হাতে টাকাও তুলে দেন। এরপর চাকরির জন্য যখনই এদের কাছে যান তখনই এরা জানায় চাকরি হয়ে যাবে, চিন্তার কিছু নেই। এমনকী একবার, দু'বারের বেশি কেউ যদি যেত তবে তাঁকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলা হত, তাড়াহুড়ো করলে কিছু হবে না। যদি চাকরি পেতে হয় তবে অপেক্ষা করতে হবে। আর যদি এরকমভাবে ঘ্যান ঘ্যান করা হয় তবে চাকরি জুটবে না। স্বাভাবিকভাবেই চাকরিপ্রার্থী ওই যুবক গুটিয়ে যেতেন।

কিন্তু দিনের পর দিন অপেক্ষা করার পরেও যখন চাকরি পাওয়া যায়নি তখন শেষপর্যন্ত প্রতারিতরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে দিঘা থানার পুলিশ। শুরু হয় খোঁজখবর ও জিজ্ঞাসাবাদ। দেখা যায় অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। এরপরেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে একজন, দু'জন নয়। এক বিরাট সংখ্যক চাকরিপ্রার্থী যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা করে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়েছে এই অভিযুক্তরা। প্রত্যেকটি লেনদেনই যথেষ্ট বড় এবং কিছু কিছু যুবকের থেকে যেভাবে পারা গিয়েছে সেভাবে টাকা আদায় হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের দায়ে দোষী দেবেগৌড়ার নাতি, শেষ হল ১৪ মাসের অপেক্ষা
প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ, এই প্রতারকরা একা নয়, আরও কেউ থাকতে পারে এই চক্রের পিছনে। এমনকী এটাও হতে পারে এই দু'জনকে সামনে রেখে গোটা চক্রটাই চালিয়ে নিয়ে গিয়েছে অন্য কেউ। ফলে পর্দার আড়ালে থাকা এই তৃতীয় ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা কারা তা জানতে এই দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। সেজন্যই আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে এদেরকে হেফাজতে নিতে চাইছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে এই ধরনের প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা না দেওয়ায় জন্যও পুলিশের তরফে আবেদন করা হচ্ছে।
