মিল্টন সেন, হুগলি: ভিন রাজ্যে বাংলার যুবতীর রহস্যমৃত্যু। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে বাঁধের জলে স্নান করতে গিয়ে রহস্যমৃত্যু হল চুঁচুড়ার এক যুবতীর। কিছুদিন আগে মুম্বইয়ের একটি যোগা আশ্রমে গিয়েছিলেন চুঁচুড়া কারবালার বাসিন্দা সঙ্গীতা চক্রবর্তী(৩০)। জানা গেছে, গতকাল, সোমবার সেখানে একটি বাঁধের জলে স্নান করতে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে ঘটনার দিন রাতে এই তথ্যই চুঁচুড়ায় এসে পৌঁছয়। খবর পেয়ে যুবতীর বাবা দিলীপ চক্রবর্তী মঙ্গলবার ভোর রাতে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। যুবতীর মৃত্যুর খবরে কারবালায় শোকের ছায়া। এই প্রসঙ্গে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ দত্ত বলেছেন, তাঁদের পাড়ার মেয়ে সঙ্গীতা। তিনি খুব ভাল গান গাইতেন। পাড়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছিলেন অতীতে। সম্প্রতি তিনি শুনেছেন যুবতী মুম্বইয়ের একটি যোগা আশ্রমে গিয়েছিলেন।
মুম্বইতে তাঁর আত্মীয় স্বজনরাও রয়েছেন বলেই তিনি জানেন। এদিন তাঁরাই বাড়িতে খবর দিয়েছেন। এদিন তিনি খবরটা পেয়েছেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। বাঁধের জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে যুবতী, এমনটাই তিনি শুনেছেন। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটলা তার সঠিক তদন্ত হোক, সেটাই তিনি দাবি করেছেন। যুবতীর বাবা মুম্বই গেছেন। এদিন বিকেল পর্যন্ত তাঁর মা জানেন না, তাঁর মেয়ে আর নেই।
আরও পড়ুন: 'ওই জামাটাই পরব', জন্মদিনের আগে রোগা হতে গিয়ে বিপত্তি, খাওয়াদাওয়া কমিয়ে কিশোরীর চরম পরিণতি
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতেই হুগলিতে এক যুগলের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাটি ঘটেছিল বৈদ্যবাটিতে। গভীর রাতে দু'জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর কারণ ঘিরে এখনও ধোঁয়াশায় তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন, মনীশ ভাদুড়ী(৩৫) ও অপর্ণা মাঝি(৩২)। মাঝ রাতে তাঁদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। বৈদ্যবাটি রাজার বাগানে মনীশের বাড়ি আছে। গত ছয় বছর ধরে সীতারাম বাগানে ভাড়া ছিলেন দু'জনে।
তাঁদের প্রতিবেশী শুভেন্দু মাঝি জানান, রাত তিনটে নাগাদ 'বাবাগো, মাগো' বলে চিৎকার শুনতে পান তাঁরা।তারপর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মধ্যে একজন এবং ঘরের বাইরে পড়ে রয়েছেন আরেকজন। রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা ছটফট করেন। রাজার বাগানে মনীশের বাড়ির লোককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে।
জানা গেছে, মনীশ একটি ঢালাই কারখানায় কাজ করতেন। অপর্ণা পরিচারিকার কাজ করতেন বলে জানা গেছে। তাঁরা এক সঙ্গে থাকতেন। দু'জনে সকালে কাজে বেরিয়ে যেতেন। রাতে বাড়ি ফিরতেন। মনীশ নেশা করতেন, তা নিয়ে দু'জনের মধ্যে মাঝে মাঝেই অশান্তি হত বলে জানান প্রতিবেশীরা। তাঁদের অনুমান, নিজেরাই হাতাহাতি করার সময়, ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করেন একে অপরকে।
ঘটনার তদন্তে আসেন চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্নব বিশ্বাস, আইসি শ্রীরামপুর সুখময় চক্রবর্তী। বাইরে থেকে কেউ খুন করেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
