আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের পূর্ব মেদিনীপুরে পাঁশকুড়া কাণ্ডের ছায়া। প্রায় একইরকম একটি ঘটনা ঘটল পিছাবনিতে। স্কুলের এক ছাত্রীকে কটূক্তির মিথ্যা অপবাদের অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হল নবম শ্রেণির এক ছাত্র। সুইসাইড নোটে সে লেখে, 'বাবা আমি ভুল করিনি, ওই মেয়েটাকে আমি চিনি না।'। ১৫ বছর বয়সী এই মৃত ছাত্রের বাড়ি কাঁথির পিছাবনিতে। মৃত্যুর আগে সে লিখে যায় সে নির্দোষ এবং যে ছাত্রীকে নিয়ে তাকে কটুক্তি শুনতে হয়েছে তাকে সে চিনত না। 

 

জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে। এরপর পিছাবনি বাজারে কয়েকজন লোক তাকে আটকে মারধরের সঙ্গে অপমান করে বলে অভিযোগ। যখন এই ঘটনাটি ঘটে তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই ছাত্রের বাবা-মাও। তাকে যারা নিগ্রহ করছিল তাদের কাছে ওই ছাত্র বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে কাকুতি মিনতি করে ছেড়ে দিতে বললেও অভিযুক্তরা তাকে রেহাই দেয়নি বলে অভিযোগ। বাড়ি ফিরে বাবা-মা'র কাছেও সে জানায় যে সে নির্দোষ। শেষপর্যন্ত পরদিন গলায় দড়ি দেওয়া তার ঝুলন্ত দেহ ঘর থেকে উদ্ধার হয়। 

 

ঘটনার পর ভেঙে পড়ে মৃত ছাত্রের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, ওই ছাত্রীর বাবার মদতেই তাঁদের ছেলেকে এই ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রের বাবার দাবি, যখন তাঁর ছেলেকে নিগ্রহ করা হচ্ছিল তখন ছাত্রীর বাবা নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। যদিও অভিযুক্তের দাবি, তিনি ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না। আপাতত পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। এবিষয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দিবাকর দাস জানান, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃতের পরিবারের তরফে এখনও কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন: ৫ টি এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ড, বিনিয়োগ করলেই মিলবে সুফল

 

এর আগে পাঁশকুড়ায় গত মে মাসে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে দোকান থেকে চিপস চুরির অভিযোগে মারধরের অভিযোগ ওঠে এক সিভিক ভল্যান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। বাড়ি ফিরে অভিমানে ওই ছাত্র আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। মৃত্যুর আগে নিজেকে নির্দোষ বলে জানিয়ে একটি সুইসাইড নোটও সে লিখে গিয়েছিল। তার পরিবারের দাবি, যে দোকানে সে গিয়েছিল সেই দোকানে চিপস ছিল না। দোকানদারকে বারবার ডেকেও সাড়া না পাওয়ায় ছাত্রটি ফিরে আসছিল। ফেরার পথে রাস্তার উপর সে একটি চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে পায়। এরপর সে যখন ফিরছিল তখন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার শুভেন্দু দীক্ষিত তাকে ধাওয়া করে পাকড়াও করে। 

 

অভিযোগ, মারধরের পাশাপাশি অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রকে সকলের সামনে 'চোর' বদনাম দেয়। ছাত্রের বাবা-মায়ের দাবি কুড়িয়ে পাওয়ার বিষয়টি বলে চিপসের প্যাকেট ফেরত দিলেও অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদের ছেলেকে রেহাই দেয়নি।