আজকাল ওয়েবডেস্ক: বামপন্থী চিন্তক, প্রাবন্ধিক, কবি আজিজুল হক প্রয়াত। দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায়। সোমবার দুপুরে প্রয়াত হন তিনি।
আজিজুলের প্রয়াণে তাঁর কন্যা জানিয়েছেন, বাড়িতেই পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে যায় তাঁর। সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত রবিবার। অস্ত্রোপচারের পর তিনদিন শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও, পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শনিবার রাতে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার রাতে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে। চিকিৎসকদের চেষ্টাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সোমবার দুপুর দুটো ২৮ নাগাদ হাসপাতালের তরফে পরিবারকে জানানো হয় তাঁর মৃত্যু সংবাদ।
আরও পড়ুন: আগস্টে ছয় মিনিটের জন্য গোটা পৃথিবী ঢেকে যাবে অন্ধকারে, আগামী ১০০ বছর দেখা যাবে না এই দৃশ্য আর
দীর্ঘ রাজনীতির পথচলা আজিজুলের। অন্যতম মুখ ছিলেন নকশালবারই আন্দোলনের। ভারতের নকশাল আন্দোলনের প্রধান সংগঠক চারু মজুমদারের মৃত্যুর পরে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান। রাজনৈতিক জীবনে একাধিক অভিযোগ এসেছে নানা সময়ে। একটা লম্বা সময় জেলে কেটেছে তাঁর। জেলে ১৯৭৭সালে জেল থেকে ছাড়া পাবার পর ১৯৮২ সালে ফের কারারুদ্ধ হন।
জেলে বসেই লিখেছিলেন, ‘কারাগারে ১৮ বছর’ বইটি। সেখানে পরতে পরতে ফুটে উঠেছে জেলে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া শারীরিক, মানসিক অত্যাচারের ভয়াবহ ছবি। জেলে থাকাকালীনই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আজিজুলের উপর কারাগেরর অত্যাচারে সেই সময়ের কারাগারের ভিতরের অত্যাচারের সত্যি সামনে আসে। কারাগারে আজিজুল হকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, বামফ্রন্টের আর.এস.পি. দলের দুই মন্ত্রী, দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যতীন চক্রবর্তী জেলে গিয়ে আজিজুল হকের সঙ্গে দেখা করেন। তখন তাঁরা দাবি জানান, প্যারোলে মুক্ত করা উচিত তাঁকে। তিনি কারামুক্ত হওয়ার পর, সেই সময় তাঁর প্রতি তদানিন্তন বামফ্রন্ট সরকার সদয় হয়, আজিজুল এবং তাঁর পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে "লালটুকটুকে দিন", "হায়না মানুষ", "ছুটন্ত সময় ফুটন্ত মানুষ', "হাতির খোঁজে রাজা", "মনু মহম্মদ হিটলার", "কারাগারে ১৮ বছর' প্রভৃতি। একটা সময় পরে, একসময়ের দৌর্দন্ড প্রতাপ রাজনীতিক পুরোপুরি সরে গিয়েছিলেন রাজনীতি থেকে। সরাসরি রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে, আজিজুল কলকাতায় তৈরি করেন ভাষা শহিদ স্মারক সমিতি।
প্রবীণ রাজনীতিক আজিজুল হক’এর প্রয়াণে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)
আজিজুল হক একজন লড়াকু, সংগ্রামী নেতা ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো মাথা নত করেননি।
তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহযোগীদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই।Tweet by @MamataOfficial
আজিজুল হকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন, 'প্রবীণ রাজনীতিক আজিজুল হক’এর প্রয়াণে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি। আজিজুল হক একজন লড়াকু, সংগ্রামী নেতা ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো মাথা নত করেননি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার ও সহযোগীদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই।'
