মিল্টন সেন, হুগলি: হুগলিতে সম্প্রতি এক প্রৌঢ়ের রহস্যজনক মৃত্যু। মগড়া থানার জয়পুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এক আচমকা মৃত্যু ঘিরে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে মৃতের স্ত্রী নিজের ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মামলা দায়ের করায় ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বর্তমানে মৃতের ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনা একান ওকান হতেই শোরগোল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে চলতি মাসের ১৫ জুলাই। জয়পুর এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ সাধুখাঁ (৬২) -কে খুন করে তাঁরই সন্তান। খবর অনুয়ায়ী নিজ বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় গোবিন্দ সাধুখাঁর মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মগড়া থানার পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে তারা। ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়৷
জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় গোবিন্দবাবুর স্ত্রী বন্দনা সাধুখাঁ নদিয়ার চাকদায় মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি পরদিন তড়িঘড়ি মগড়া থানায় আসেন। সেখানে নিজের ছেলে সৌরভ সাধুখাঁ (৪২) এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ির মালিকানা চায়ছিল। নিজেদের নামে সমস্ত সম্পতি করে নিতে চায় তারা। সম্পত্তি দখল নেওয়ার জন্য গোবিন্দবাবুকে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। ফলস্বরূপ এই মৃত্যুর জন্য তাঁদেরকেই দায়ী বলে মনে করছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দনাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার দিন গোবিন্দবাবু আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই তাঁর । তবে বর্তমানে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সৌরভ সাধুখাঁকে জেরা করেছে। গতকাল তাকে চুঁচুড়া আদালতে পেশ করা হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুনঃ শ্বশুড়বাড়িতে টানা অত্যাচার, জোর করে গর্ভপাত, সহ্য করতে না পেরে যা করে বসলেন যুবতী......
মগড়া থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত আমরা এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে যা তথ্য সামনে আসছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের একাংশের মতে, গোবিন্দবাবু শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তবে পারিবারিক কলহের কথা আগেও একাধিকবার শোনা গিয়েছিল বলে অনেকে জানিয়েছেন। এখন গোটা বিষয়টির উপর নজর রেখেছে পুলিশ। ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ বর্তমানে পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই নির্ধারিত হবে এটি আত্মহত্যা, নাকি এই খুনের পেছনে রয়েছে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র।
