আজকাল ওয়েবডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর সময়সীমা বেঁধে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সোমবার রাশিয়াকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ৫০ দিনের মধ্যে বন্ধ করা না হলে রাশিয়ার বাণিজ্য অংশীদারদের বিরুদ্ধেও ‘খুব কঠোর’ শুল্ক আরোপ করা হবে। 

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, "আমরা সেকেন্ডারি ট্যারিফ আরোপ করতে যাচ্ছি। যদি ৫০ দিনের মধ্যে কোনও চুক্তি না হয়, তাহলে ব্যাপারটা খুবই সোজা- শুল্ক হবে ১০০ শতাংশ হবে। আর সেটাই বাস্তবতা।"

এখন পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন বা হোয়াইট হাউস থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি রাশিয়ার ওপর বাণিজ্যিক অংশীদারদের মাধ্যমে চাপ তৈরির নয়া কৌশল। 

ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। রাশিয়ার ওপর পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভ্লাদিমির পুতিন চীনের মতো বন্ধুদের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। তার মধ্যেই ট্রাম্পের কড়া বক্তব্য বেশ তাৎপর্যবাহী।   

বিশ্লেষকদের মতে, ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’ মূলত সেইসব দেশকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয় যারা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থেকেও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন চালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রাশিয়া বা চীনের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে এদিন ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘সুন্দর করে কথা বলেন কিন্তু প্রতিদিন সন্ধ্যায় অন্য দেশে বোমা মারেন’। আর এ কারণেই ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য তিনি দেশটিতে মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ‘প্যাট্রিয়ট’ পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। তবে, আমেরিকা ইউক্রেনে ক'টি প্যাট্রিয়ট পাঠাবে তা খোলসা করা হয়নি। কিন্তু এসব ক্ষেপণাস্ত্রের দাম ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা শুরুর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু পুতিনের কারণেই তা কার্যত বিশ বাঁও জলে। এতে রাশিয়ার নেতাকে নিয়ে ক্রমশ হতাশ হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদ ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওস এ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত দুই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ট্রাম্প তার আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ইউক্রেনকে আক্রমণাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত করার একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য রয়টার্স আবেদন করলেও হোয়াইট হাউস সাড়া দেয়নি। 

রাশিয়া প্রায় প্রতিদিন ইউক্রেনের শহরগুলোতে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ওয়াশিংটন ডিসির দক্ষিণপূর্বে সামরিক ঘাঁটি জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট পাঠাবো, যেগুলো তাদের খুব প্রয়োজন, কারণ পুতিন সত্যি বহু মানুষকে বিস্মিত করে দিয়েছেন। তিনি সুন্দর কথা বলেন আর তারপর সন্ধ্যায় সবার ওপর বোমা মারেন। কিন্তু এতে একটু সমস্যা আছে। আমি এটা পছন্দ করি না।"

ইউক্রেন ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে নেটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা করেছেন।