বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

কলকাতা | বিরল রোগের অন্যতম 'সিকেল সেল ডিজিজ' , সমাজ সচেতনতায় উদ্যোগী চিকিৎসকরা

Reporter: গোপাল সাহা | লেখক: AD ১৯ জুন ২০২৫ ১৯ : ৫৭Abhijit Das


গোপাল সাহা

বর্তমান সমাজে মানুষ বিভিন্ন রোগে বিভিন্নভাবে আক্রান্ত হয়ে চলেছেন। তার মধ্যে কিছু বিরল রোগ মানবসমাজে বর্তমানে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। যার মধ্যে একটি রোগ 'সিকেল সেল অ্যানিমিয়া'। যা নিয়ে বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানও যথেষ্ট চিন্তিত। আগে শুধুমাত্র সহায়ক চিকিৎসা ছিল। এখন অনেক উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যার মধ্যে জিনগত থেরাপিও পরীক্ষাধীন রয়েছে, যা রোগীকে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করতে পারে, তবে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

উল্লেখ, 'সিকেল সেল অ্যানিমিয়া' রক্তের এমন একটি রোগ যার চিকিৎসা পদ্ধতি যথেষ্ট ব্যয়বহুল। এই রোগ আক্রান্তের রক্তে আরবিসি অর্থাৎ লোহিত রক্তকণিকার আয়ু যথেষ্ট কম হয়। চিকিৎসাশাস্ত্র মতে, সুস্থ লোহিত রক্তকণিকার আয়ু হয় ১২০ থেকে ১৩০ দিন। কিন্তু এই রোগে আক্রান্ত হলে সেই আয়ু এসে দাঁড়ায় ৬০ থেকে ৭০ দিনে। কারণ এই রোগে আক্রান্তদের লোহিত কণিকা সাধারণের থেকে আলাদা অর্থাৎ বক্রাকার হয়। আর সেই কারণে এই রোগীদের ক্ষেত্রে লোহিত রক্তকণিকাগুলি যখন রক্তজালিকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয় ঠিক সেই সময় ভেঙে যায় অর্থাৎ মৃত্যু ঘটে। এই রোগে আক্রান্তদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট কম থাকে। এর পাশাপাশি শরীরে নানা রকম ব্যথা, অল্পতে যে কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়া, কোথাও পড়ে গেলে অন্তর্বর্তী রক্তক্ষরণ হওয়ার পরিমাণ অত্যাধিক বেড়ে যায়।

এই রোগের বিষয়ে একটু বিস্তারিত দেখে নেওয়া যাক:

সিকেল সেল অ্যানিমিয়া হল একটি জেনেটিক রোগ, যা HBB জিনের একটি পরিবর্তনের (mutation) কারণে হয়। এই জিনটি হিমোগ্লোবিন প্রোটিনের একটি অংশ বিটা-গ্লোবিন (beta-globin) তৈরির নির্দেশ দেয়। এই মিউটেশনের ফলে অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়, যা রক্তকণিকাগুলিকে শক্ত ও অর্ধচন্দ্রাকৃতি বা কাস্তে আকৃতির করে তোলে। এই অস্বাভাবিক রক্তকণিকাগুলি ছোট রক্তনালিতে আটকে যেতে পারে, ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে গুরুতর ক্লান্তি, শরীরে প্রদাহ, জয়েন্টে ব্যথা, নাক এবং গালে ফুসকুড়ি-যা প্রজাপতি ফুসকুড়ি নামেও পরিচিত।

এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখে নেওয়া যাক:

১. জিনগত পরিবর্তন (Genetic Mutation) : সিকেল সেল অ্যানিমিয়া একটি বংশগত রোগ। যা পিতামাতার মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। যখন একজন ব্যক্তি মা ও বাবার কাছ থেকে একটি করে দু’টি মিউটেটেড HBB জিন পান, তখন এই রোগ হয়।

২. অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন (Abnormal Hemoglobin): এই পরিবর্তিত জিনের কারণে শরীর হিমোগ্লোবিন S নামক একটি অস্বাভাবিক ধরনের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। হিমোগ্লোবিন হল একটি প্রোটিন, যা রক্তের লাল কণিকায় থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পরিবহন করে।

৩. সিকেল আকৃতির কণিকা (Sickle-Shaped Cells): হিমোগ্লোবিন S-এর কারণে রক্তের লাল কণিকাগুলি শক্ত, আঁঠালো এবং অর্ধচন্দ্রাকৃতি বা কাস্তে আকৃতির হয়ে যায়।

৪. রক্তনালির অবরোধ (Blood Vessel Blockage): এই কাস্তে-আকৃতির রক্তকণিকাগুলি ছোট ছোট রক্তনালিতে আটকে যেতে পারে, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত এবং অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না।

৫. পরিণতি (Consequences) : এই রক্তনালির অবরোধের ফলে ব্যথার সমস্যা (pain crisis), অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি এবং অন্যান্য গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে।

৬. উত্তরাধিকার (Inheritance) : যদি একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একজন পিতা-মাতার কাছ থেকে মিউটেটেড জিনটি পান, তাহলে তিনি সিকেল সেল ট্রেইট বহন করবেন। তবে, সাধারণত কোনও উপসর্গ দেখা যাবে না বা খুব হাল্কা মাত্রায় থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের লক্ষণ ৫ থেকে ৬ মাস বয়স থেকেই দেখা যায়। এই সমস্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সম্পর্কে জড়ানো অর্থাৎ বিবাহ জড়িত হওয়ার বিষয়ে ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

৭. লোহিত রক্তকণিকা: একটি পাতলা বাটির মতো, যাতে স্বচ্ছন্দে অক্সিজেন বহন করা যায় এবং প্রবাহ হওয়ার সময় কোনও রকম বাধা সৃষ্টি না হয় বা ভেঙে না যায়। কিন্তু এই রোগে আক্রান্ত হলে জিনগত কারণে হিমোগ্লোবিনের পরিবর্তনের ফলে রক্তকণিকার বিকৃতি হয়। এর ফলে অ্যানিমিয়া রোগ হয়। মূলত এই 'ক্যাপিলারি'গুলো দিয়ে অর্থাৎ প্রবাহের রাস্তা দিয়ে ঠিকমতো লোহিত রক্তকণিকা প্রবাহ না হওয়ার কারণে একটা বাধার সৃষ্টি হয় ও জমাট বাঁধে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ভয়াবহ ব্যাথারও সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে প্রতিরোধ ক্ষমতাও ক্রমাগত নষ্ট হতে থাকে বা অত্যাধিক পরিমাণে কমে যায়।

এই বিষয়ে আজকাল ডট ইন কথা বলেছিল চিকিৎসক সংযুক্তা দে এবং রঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "আজ ১৯ জুন দিনটি বিশ্ব ‘সিকেল সেল অ্যানিমিয়া দিবস’ হিসাবে উদযাপিত করা হয় বিশ্বব্যাপী। আজকের দিনটি যেখানে আমরা সবাইকে বলছি এই রোগের উপরে বেশি করে আলোকপাত করতে। এই রোগে আক্রান্ত যে সমস্ত মানুষ ও পরিবারবর্গ রয়েছেন তাঁদের উপরে বেশি করে আলোকপাত করতে ও ভীতি দূর করতে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা দিবস। কারণ, জমা জলে যেমন মশা জন্মায়, ঠিক একই রকম ভাবে অন্ধকার গুহা বা জঙ্গলে বা রাস্তায় আলোকপাত করলে সেখানে যে কোনও বিপদকে সহজেই শনাক্ত করা যায়। তাই এই রোগে আক্রান্তদের উপর আলোকপাত করা এবং তাদের যাতে আমরা সঠিকভাবে দিশা দেখাতে পারি, সেই জন্যই পালিত হচ্ছে 'বিশ্ব সিকেল সেল অ্যানিমিয়া দিবস'।

চিকিৎসক সংযুক্তা দে বলেন, "জাতীয় সিকেল সেল অ্যানিমিয়া নির্মূল কর্মসূচি এবং বিরল রোগসমূহের জন্য জাতীয় নীতি- এই দু’টি উদ্যোগ সম্মিলিতভাবে ভারতে সিকেল সেল অ্যানিমিয়া ও অন্যান্য বিরল রোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি ব্যাপক প্রচেষ্টা হিসেবে কাজ করছে। এই উদ্যোগগুলির মূল লক্ষ্য হল প্রতিরোধ, প্রারম্ভিক হস্তক্ষেপ এবং আক্রান্ত সকল ব্যক্তির জন্য সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।“

তিনি আরও বলেন, "আজ ১৯শে জুন 'বিশ্ব সিকেল সেল দিবস' সারা বিশ্বজুড়ে পালিত হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই রোগ সম্বন্ধে সচেতনতা প্রচুর অভাব রয়েছে এবং ভয়-ভীতি রয়েছে, অনেকে জেনেও সঠিক দিশা না থাকার কারণে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়। আমাদের মূল উদ্দেশ্য এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি দূর করা এবং সঠিকভাবে আলোকপাত করা। তাই জন্যই  ১৯ শে জুন দিনটি বেশি করে গুরুত্ব দিয়ে পালিত করা হয়।

২০২৩ সালে শুরু হওয়া জাতীয় সিকেল সেল অ্যানিমিয়া নির্মূল কর্মসূচি। এই সমস্যার সমাধানে একটি বহু-মুখী পদ্ধতি গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সচেতনতা বৃদ্ধি, স্ক্রিনিং (পরীক্ষা), এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ। এই কর্মসূচিটি বিরল রোগের জন্য ঘোষিত জাতীয় নীতির একটি অংশ, যা দেশের সমস্ত আক্রান্ত নাগরিকের জন্য আরও কার্যকর ও সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সৃষ্টি করতে চায়। সিকেল সেল অ্যানিমিয়া ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিরল রোগ হিসেবে চিহ্নিত, যা বিশেষ করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়।"

২০২৩ সালে শুরু হয় জাতীয় সিকেল সেল অ্যানিমিয়া নির্মূল কর্মসূচি। এই সমস্যার সমাধানে একটি বহুমুখী পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সচেতনতা বৃদ্ধি, স্ক্রিনিং (পরীক্ষা) এবং চিকিৎসা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ। এই কর্মসূচিটি বিরল রোগের জন্য ঘোষিত জাতীয় নীতির একটি অংশ, যা দেশের সমস্ত আক্রান্ত নাগরিকের জন্য আরও কার্যকর ও সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সৃষ্টি করতে চায়। সিকেল সেল অ্যানিমিয়া ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিরল রোগ হিসেবে চিহ্নিত, যা বিশেষ করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়।"


Sickle cell diseaseRed Blood cell

লর্ডসে ট্রেনিংয়ে গরহাজির গিল-পন্থ, নেটে ঘাম ঝড়ালেন বুমরা

'প্রজাপতি ২' তেও দেবের নায়িকা ইধিকা! সঙ্গে রয়েছেন 'মিঠাই' অভিনেত্রীও, কে কাকে টেক্কা দেবেন?

অবৈধভাবে এদেশে থাকছিল! ৪৪৮ জন বাংলাদেশিকে আটক করে পুলিশ

হাসপাতালে ভর্তি ফাহিম মির্জা! হয়েছে অস্ত্রপ্রচারও, ঠিক কী হয়েছে অভিনেতার?

শুরু সুব্রত মুখার্জি কাপ, এবার প্রতিযোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ

লর্ডস পিচ পর্যবেক্ষণ, কোচিং স্টাফের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় গম্ভীর

খাবার ডেলিভারি করতে বেরিয়ে এ কী হাল যুবকের? কর্ণাটকে বেপরোয়া বাইক সংঘর্ষে চূড়ান্ত পরিণতি ২ যুবকের

গলছে বরফ, জাগছে আগ্নেয়গিরি, হাতে আর কত সময় আছে, জানলে...

কোচবিহারবাসীকে এনআরসি নোটিশ অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনালের, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

আট ফ্র্যাঞ্চাইজি, চার স্টেডিয়াম, পথ চলা শুরু বেঙ্গল সুপার লিগের

হানিট্র্যাপ করে ভারতীয় তথ্য পাক সংস্থার হাতে, পূর্ব বর্ধমান থেকে গ্রেপ্তার দুই পাক চর

আট ফ্র্যাঞ্চাইজি, চার স্টেডিয়াম, পথ চলা শুরু বেঙ্গল সুপার লিগের

পন্থই ভারতের আফ্রিদি!‌ কে বললেন এমন কথা জানুন 

মায়ের সঙ্গে মেলা ঘুরতে গিয়েছিলেন, এরপর লম্বা সময় ধরে নিখোঁজ যুবতী, ভয়াবহ পরিণতি জানলে শিউরে উঠবেন 

১০ এবং ১৫ বছরের পুরনো গাড়িকে আর জ্বালানি বিক্রি করা হবে না, নির্দেশ জারি এই রাজ্যের

আইপিএল জয়ী ক্রিকেটার এবার বিরাট সমস্যায়, হতে পারে দশ বছরের জেল 

এক ফ্রেমে আমির খান এবং মহেন্দ্র সোনি! এবার কি বলিউডে পা রাখছে এসভিএফ?

বাগানের প্রাণভোমরা তিনি, নতুন মরশুমে সবুজ-মেরুন জার্সিতে ফুল ফোটাতে চান ম্যাকলারেন

অস্ত্রপ্রচারের পর অভিনয়ে ফিরছেন ক্যানসারে আক্রান্ত দীপিকা! কবে থেকে পর্দায় দেখা যাবে অভিনেত্রীকে? 

‘রামায়ণ’-এর প্রথম পর্বে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য পর্দায় হাজির হবেন যশ? নেপথ্যে কি রয়েছে রণবীরের ‘রাজনীতি’?

বিনামূল্যে খাবার দিয়েও ১০০ কোটি আয় করা সম্ভব! দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে হরিয়ানার এই হোটেল

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা করল পাকিস্তান, জায়গা হল না থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের, তাঁরা কারা?

অনুষ্ঠিত হল উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, শ্রাবণী মেলা সুষ্ঠ পরিচালনার লক্ষ্যে নেওয়া হলো একাধিক পরিকল্পনা

আচমকাই পিএসজি’‌র বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা তুলে নিলেন এমবাপে, কেন?‌ 

সোশ্যাল মিডিয়া