আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০১১ বিশ্বকাপের সময়ে যুবরাজ সিংয়ের একটি মন্তব্য ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের আনাচকানাচে। যুবিকে বলতে শোনা গিয়েছিল,যব তক বল্লা চল রহা হ্যায়, তব তক ঠাট হ্যায়। বিশ্বকাপে একেকটা অবিশ্বাস্য শট খেলতেন, তার পরেই কাশতেন। তখন কি আর কেউ জানতেন, তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে রাজ রোগ! ২০১১-র পর কেটে গিয়েছে ১৪ বছর। ধোনির দলের অন্দরমহলের কথা প্রকাশ্যে আনলেন তদানীন্তন কোচ গ্যারি কার্স্টেন।
ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া কোচ এক ওয়েবসাইটকে বলেছেন, এগারোর বিশ্বকাপে যুবরাজ সিংকে দলেই রাখতে চাননি নির্বাচকরা। মহেন্দ্র সিং ধোনি প্রবলভাবে দলে চেয়েছিলেন যুবিকে। কোচ কার্স্টেনও বাঁ হাতি অলরাউন্ডারকে দলে চেয়েছিলেন।
ভাবুন তো বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কেই দলে রাখতে চাননি নির্বাচকরা। তিনি যদি দলে না থাকতেন, তাহলে কী হত! বাকিটা ইতিহাস। যুবরাজ ব্যাট ও বল হাতে ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন। কার্স্টেন সেই ওয়েবসাইটকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ''ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে আমরা যুবরাজকে বেছে নিয়েছিলাম। সহজ নির্বাচন ছিল না। যুবরাজকে নিয়ে আমাদের নির্বাচন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বিতর্ক হয়েছিল। আমি যুবরাজকে নিতে আগ্রহী ছিলাম এবং ধোনিও দলে চেয়েছিল যুবরাজকে। যুবির দুর্দান্ত অভিজ্ঞতার জন্যই ওকে চেয়েছিলাম সবাই। যুবরাজ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিল।''
আরও পড়ুন: প্রেমিককে প্রকাশ্যে আনলেন স্মৃতি মান্ধানা, জানেন তারকা ক্রিকেটারের মনের মানুষ কে?
বিশ্বকাপের দল নির্বাচনের সময়ে যুবিকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। নির্বাচকরা যুবিকে নিয়ে সন্দিহান হলেও কোচ ও ক্য়াপ্টেন কিন্তু সব সময়ে পাঞ্জাবতনয়ের পাশে থেকে গিয়েছেন। গ্যারি কার্স্টেন বলেন, ''আমি যুবরাজ সিংয়ের ভক্ত ছিলাম। আমাদের সম্পর্ক এমন ছিল যে মাঝে মাঝে যুবি আমার উপর হতাশ হত, কিন্তু আমি যুবিকে খুবই পছন্দ করতাম। আমি চাইতাম যুবি সবসময়ে রান করুক। যবিকে ব্যাট করতে দেখতে অসাধারণ লাগত।''

যুবরাজ সিংকে মানসিক দিক থেকে তৈরি করেছিলেন প্যাডি আপটন। সেই প্রসঙ্গে কার্স্টেন বলেন, ''বিশ্বকাপের জন্য যুবিকে তৈরি করেছিল প্যাডি। ক্যানসার হওয়ার আগে এটাই ছিল যুবির বড় টুর্নামেন্ট। মেগা টুর্নামেন্টের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।''
ধোনি ও কার্স্টেন বাঁ হাতি অলরাউন্ডারের উপরে আস্থা রেখে যে ভুল করেননি, তা প্রমাণিত হয়েছিল এগারোর বিশ্বকাপে। যুবরাজ ৩৬২ রান করেছিলেন। ১৫টি উইকেট নিয়েছিলেন।
যুবি নিজের প্রসঙ্গে লিখেছেন, ''২০১১ সাল। স্বপ্নের এক বছর ছিল আমার জন্য। ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আমার তৃতীয় বিশ্বকাপ ছিল সেটা। আর কী ভাগ্য, আমরা সেই বিশ্বকাপ জিতে গেলাম! সে এক অসাধারণ অনুভূতি। টুর্নামেন্টটা হয়েছিল উপমহাদেশেই, ফাইনাল আমাদের ঘরের মাঠে। দেশের লাখ লাখ দর্শকের সামনে বিশ্বকাপ জেতা, এর চেয়ে ভালো চিত্রনাট্য আর কী হতে পারে!

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অবশ্য আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক বাঁকা কথা বলছিল। আমার ওজন নিয়ে, দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে, এমনকী চোট থেকে সেরে ওঠার পর আমার খারাপ ফর্ম নিয়েও। কিন্তু এসব আমাকে দমাতে পারেনি।''
ধোনিকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটান যুবরাজের বাবা যোগরাজ সিং। তিনি কোনও সময়ে এই বিষয়ে আলো ফেলেন না। সেদিন নির্বাচকদের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক করে, ঝগড়া করে ধোনি বিশ্বকাপের দলে নিয়েছিলেন যুবরাজকে। যোগরাজ বলেন, ধোনির জন্য তাঁর ছেলের ক্রিকেটার কেরিয়ার শেষ হয়েছে। কিন্তু আধুলির অন্য পিঠও তো রয়েছে। সেই ব্যাপারে যোগরাজ কেন চুপ থাকেন?
আরও পড়ুন: সত্যিই কি ওয়ার্কলোড বেশি বুমরা-সিরাজের? পরিসংখ্যান অন্য কথা বলছে
