আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোলকিপিং কোচ থেকে সরাসরি হেড কোচ। সন্দীপ নন্দী শুরু করতে চলেছেন নতুন এক অধ্যায়। তাঁর হাতেই এবার দলের রিমোট কন্ট্রোল। নতুন চ্যালেঞ্জ। 

কোনও দিন চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি পিছপা হননি। আশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচের আগেও তিনি জানতেন না লাল-হলুদের গোল আগলাতে হবে তাঁকে। সেই তিনিই আশিয়ান কাপে নায়ক হয়ে গেলেন। 

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের গোলকিপিং কোচ ছিলেন। কিন্তু অস্কার ব্রুজোঁর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে প্রাণাধিক প্রিয় ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে তিনি চলে আসেন। 'অযোগ্য' এই অপবাদ নিয়ে তাঁকে সরে যেতে হয়েছিল। 

তার পরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। সন্দীপ নন্দী এবার নতুন দায়িত্বে।  বেঙ্গল সুপার লিগের দল বর্ধমান ব্লাস্টার্সের হেড কোচ তিনি। 

চলতি মাসের ১৪ তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে বেঙ্গল সুপার লিগ। পরের দিন অর্থাৎ ১৫ তারিখ বর্ধমান ব্লাস্টার্স ও সুন্দরবন বেঙ্গল অটো এফসি-র খেলা। সুন্দরবন অটো এফসির হেচ কোচ আবার সন্দীপের একসময়ের সতীর্থ মেহতাব হোসেন। কখনও মেহতাব ছিলেন তাঁর সতীর্থ। আবার কখনও তাঁর প্রতিপক্ষ। এবার বেঙ্গল সুপার লিগে মেহতাবের মুখোমুখি সন্দীপ। 

তবে মাঠে নামার আগে সন্দীপ চিন্তিত তাঁর দল নিয়ে। সুন্দরবন বেঙ্গল অটো এফসি-র দল গোছানো। সেখানে সন্দীপের দল এখনও তৈরিই নয়। এখনও দল গোছানোর কাজ চলছে বর্ধমানের। প্র্যাকটিসে দল নিয়ে একদিনও নামতেই পারেননি তিনি। হয়তো জুনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়ে শেষমেশ নামতে হবে। ১৫-তারিখের লড়াইয়ের জন্য আজ বৃহস্পতিবার থেকেই দল নিয়ে উঠে পড়ে লাগবেন তিনি। 

ধারে ও ভারে সুন্দরবন এগিয়ে। কিন্তু ফুটবল তো আর সেই নিয়ম মেনে হয় না। মাঠে নেমে ফুটবলারদের দক্ষতা ও মাঠের বাইরে থেকে হেডকোচের কৌশল খেলায়  পার্থক্য গড়ে দেয়। 

সন্দীপের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার পূর্ণ। তাঁর ফুটবলপ্রজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন নেই কারওর। তরুণ তাজা ফুটবলারদের নিয়ে লড়ে যেতে একপ্রকার ধণুর্ভাঙা পণ করেছেন সন্দীপ। ম্যাচে সন্দীপ কী তাস ফেলেন, তা দেখার অপেক্ষায় সবাই। খেলোয়াড় জীবনে বহুবার প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছেন। বিপক্ষকে গোল করতে দেননি। সুন্দরবনের হেডকোচ মেহতাবকেও তিনি যে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন তা বলাই বাহুল্য। 

সন্দীপের শিকড় বর্ধমানে। সেখান থেকেই তাঁর স্বপ্নের উড়ান। কথায় বলে, জহুরী জহর চিনতে পারেন। গৌতম সরকারও চিনতে পেরেছিলেন দোহারা চেহারার ছোট্ট সন্দীপকে।  তার পরের ঘটনা ইতিহাস। গুরুমন্ত্র বুকে নিয়ে মাভৈঃ বলে সন্দীপ নেমে পড়ছেন বেঙ্গল সুপার লিগে। 

একদিন যে অপবাদ তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছিল, সেই অপবাদকে 'ফিস্ট' করে উড়িয়ে দিতে তৈরি সন্দীপ। বার পোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে গোলকিপাররা গোটা মাঠ দেখতে পান। ম্যাচের বিশ্লেষণ তাঁরাই সব থেকে ভাল করতে পারেন। কখন কার পায়ে বল, কে জায়গা নিচ্ছে, কাকে মার্কিং করতে হবে, ডেড বল সিচুয়েশনের সময়ে প্লেয়ার সাজানো--সবেতেই গোলকিপারদের বড় ভূমিকা থাকে। হাতে গ্লাভস পরে গোল আগলানোর দায়িত্বে থেকে এই সব কাজ বহু করেছেন সন্দীপ নন্দী। এবার
হেড কোচ হিসেবে সেই পুরনো কাজই নতুন ভাবে করবেন সন্দীপ।