আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোকো গফকে হারিয়ে চমক দিলেন নাওমি ওসাকা। তাও আবার স্ট্রেট সেটে। ১৬৫৮ দিন, অর্থাৎ সাড়ে চার বছর পর আবার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন জাপানের তারকা। অন্য ম্যাচে সহজ জয় পেয়েছেন জানিক সিনার ও ইগা শিয়নটেক। এদিকে আবার ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে মন খারাপ ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নোভাক জকোভিচের।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে গফকে স্ট্রেট সেটে (৬–৩, ৬–২) হারিয়েছেন ওসাকা। এই জয়ের ফলে র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ২০ জনের মধ্যে ঢুকে পড়লেন ওসাকা। শেষ ষোলোর ম্যাচে গফকে ভুগিয়েছে তাঁর সার্ভিস ও ফোরহ্যান্ড। অন্য দিকে যত সময় গড়িয়েছে তত ভয়ঙ্কর দেখিয়েছে ওসাকাকে। তাঁর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে দু’টি ইউএস ওপেন ও দু’টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। অর্থাৎ, হার্ড কোর্টে ভাল খেলেন তিনি। সেটাই আরও এক বার দেখা গেল।
এর আগে এক বারই গফ ও ওসাকা মুখোমুখি হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ইউএস ওপেনে। তখন গফের বয়স মাত্র ১৫। সে বারও জিতেছিলেন ওসাকা। এবারও জিতলেন ২৭ বছর বয়সি খেলোয়াড়। ২০২৩ সালে যখন গফ ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তখন গ্যালারিতে বসে তা দেখেছিলেন ওসাকা। তার দু’মাস আগেই কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। সেই কোর্টেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন ওসাকা।
খেলা শেষে ওসাকা বলেছেন, ‘আমি খুব বেশি আবেগপ্রবণ হতে চাইছি না। মেয়ের জন্মের দু’মাস পর গ্যালারিতে বসে গফকে খেলতে দেখেছিলাম। তখনই চাইতাম, এক বার হলেও আবার এই কোর্টে নামতে হবে। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় কোর্ট। সেখানেই আবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলাম। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’ কোয়ার্টার ফাইনালে একাদশ বাছাই ক্যারোলিনা মুচোভার বিরুদ্ধে খেলবেন ওসাকা।
এদিকে, যে মুচোভার বিরুদ্ধে ওসাকা নামবেন, তিনি প্রথম রাউন্ডে হারিয়েছেন প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে নামা আর এক তারকা ভেনাস উইলিয়ামসকে।
শেষ ষোলোর আর একটি ম্যাচে ত্রয়োদশ বাছাই ইকাটেরিনা আলেকজান্দ্রোভাকে স্ট্রেট সেটে (৬–৩, ৬•১) হারিয়েছেন শিয়নটেক। ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। প্রতিপক্ষের সার্ভিস আট বার ভাঙার সুযোগ পান শিয়নটেক। পাঁচ বার ভাঙেন তিনি। তাঁর সার্ভিসও এক বার ভাঙেন আলেকজান্দ্রোভা। তাতে অবশ্য ম্যাচ জিততে কোনও সমস্যা হয়নি শিয়নটেকের। কোয়ার্টার ফাইনালে অষ্টম বাছাই আমেরিকার আমান্ডা আনিসিমোভার বিরুদ্ধে খেলবেন দ্বিতীয় বাছাই পোল্যান্ডের শিয়নটেক।
এদিকে, পুরুষদের শেষ ষোলোর ম্যাচে দাপুটে জয় পেয়েছেন সিনার। আলেকজান্ডার বুবলিককে স্ট্রেট সেটে (৬–১, ৬–১, ৬–১) উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। গোটা ম্যাচে মাত্র তিনটি গেম খুইয়েছেন সিনার। বুবলিককে দাঁড়াতে দেননি তিনি। ম্যাচে আটটি ‘এস’ মেরেছেন সিনার। প্রথম সার্ভিস থেকে ৮১ শতাংশ পয়েন্ট তুলেছেন তিনি। সেখানেই পিছিয়ে পড়েছেন বুবলিক। সিনার সার্ভিস ও পাওয়ার টেনিসের কোনও জবাব ছিল না তাঁর কাছে।
এটা ঘটনা, ম্যাচে ১৭ বার বুবলিকের সার্ভিস ভাঙার সুযোগ পান সিনার। আট বার ভাঙেন তিনি। বাকি সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে হয়তো একটি গেমও জিততে পারতেন না বুবলিক। ১৩টি ডবল ফল্ট করেছেন বুবলিক। সেটাও ভুগিয়েছে তাঁকে। কোয়ার্টার ফাইনালে লোরেঞ্জো মুসেত্তির বিরুদ্ধে খেলবেন সিনার। অর্থাৎ, ইতালির দুই খেলোয়াড়ের লড়াই দেখা যাবে শেষ আটে।
কোয়ার্টার ফাইনালে আগেই নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছেন জকোভিচ। তাঁর ম্যাচ চতুর্থ বাছাই টেলর ফ্রিৎজের বিরুদ্ধে। চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে এই ফ্রিৎজের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল জকোভিচকে। অর্থাৎ, কঠিন লড়াই ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের সামনে। কিন্তু আপাতত অন্য একটি কারণে মান খারাপ জোকোভিচের। কারণ ২ সেপ্টেম্বর ৮ বছর বয়স হবে জকোভিচের কন্যা তারার। আগে থেকে জকোভিচের পরিকল্পনা ছিল, আমেরিকায় কন্যার জন্মদিন পালন করবেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। জকোভিচ যখন গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলেন, তখন তাঁর পরিবারকে কোর্টেই দেখা যায়। কিন্তু এ বার ইউএস ওপেনে পরিবার সঙ্গে নেই। জন্মদিনে বাবাকে কাছে পাবে না তারা। সে বাবার উপর রেগে আছে। তাই জকোভিচের আরও খারাপ লাগছে।
